ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভালুকায় সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফ্যাক্টরীর পাইপলাইন স্থাপন

প্রকাশিত: ১৭:৪১, ২ আগস্ট ২০২১

ভালুকায় সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফ্যাক্টরীর পাইপলাইন স্থাপন

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভালুকা, ময়মনসিংহ ॥ ভালুকায় এলাকাবাসি ও সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাইপে বাংলা ফেব্রিক্স লিমিটেড নামে একটি ডায়িং ফ্যাক্টরীর বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য পাইপলাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে এলজিইডি’র একটি সড়কের বিশাল অংশ ক্ষতিগ্রস্তসহ রাস্তার পাশের বেশ কিছু কাঁচা পাকা বসতবাড়ি ঝুঁকির মাঝে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিন এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার গাদুমিয়া গ্রামে অবস্থিত তাইপে বাংলা ফেব্রিক্স লিমিটেড নামে একটি ডায়িং ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ তাদের বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য হাজিরবাজার-গাদুমিয়া সড়কের দক্ষিণপাশ ঘেষে ভেকু মেশিন দিয়ে ২০ ফুট গভীর ও ২০ ফুট প্রস্ত গর্ত করে প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা পাইপলাইন স্থাপন করছেন। এতে এলজিইডি মন্ত্রণালয়ের নির্মিত সলিং রাস্তাটির ব্যাপক ক্ষতিসহ বেশ কিছু বাঁচা পাকা বসতবাড়ি চরম ঝুঁকির মধ্যে পরেছে। স্থানীয় লোকদের জিম্মি করে মামলা ও খুন করে গুমসহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিয়ে পাইপলাইনটি স্থাপন করা হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। স্থানীয় পোল্ট্রি ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ জানান, এলাকার মেম্বার আব্দুল হামিদ ও শাহাব উদ্দিন নামে দুই ব্যক্তি কোম্পানীর পক্ষে এই পাইপলাইন স্থাপন করছেন। ২০ ফুট গভীর ও ২০ ফুট প্রস্ত ড্রেন খননের কারণে তার নবনির্মিত বহুতল ভবনটি ঝুঁকির মাঝে পড়েছে। বাঁধা দিতে গেলে পাইপস্থাপনকারীরা তাকে মামলা ও খুন করে গুমসহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিয়ে আসছে। এখন তিনি তাদের ভয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে আছেন। এসব ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। অপর অভিযোগকারী দেলোয়ার হোসেন জানান, ড্রেন নির্মাণে বাঁধা দেয়ায় মেম্বার হামিদ ও শাহাবউদ্দিন তাকেও বিভিন্ন ধরণের হুমকী দিয়েছেন। অভিযোগকারী হাফিজ উদ্দিন জানান, পাইপলাইন স্থাপনে তার বাড়িটি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। পরে ক্ষতিপূণ হিসেবে তাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে পাইপ স্থাপন করেছে। স্থাণীয় লোকজন নাম প্রকাশ না করার সর্তে জানান, তাইপে বাংলা ফ্যাক্টরীটি বেশির ভাগই বনবিজ্ঞপ্তিত জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে। ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ প্রথমে ওই রাস্তাটির ক্ষতি করে সরু পাইপলাইন স্থাপন করে তাদের বর্জ্য লাউতি নদীতে ফেলতো। বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি ধ্বংস করে এমনকি এলাকার অনেকগুলো বাড়ি ঝুঁকিতে ফেলে পাইপলাইন স্থাপন করছে। স্থানীয়রা আরো জানান, ওই ডায়িং ফ্যাক্টরীতে কোন ইটিপি স্থাপন না করেই তাদের বিষাক্ত কালো রংয়ের বর্জ্য সরাসরি লাউতি নদীতে ফেলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। মেম্বার আব্দুল হামিদের সাথে তার মোবাইল নম্বরে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষই পাইপলাইন স্থাপন করছেন। তবে তিনি কাউকে হুমকী দেননি বলে জানান। অপর অভিযুক্ত শাহাব উদ্দিন জানান, বাঁধার কারণে বর্তমানে পাইপলাইন স্থাপন কাজ বন্ধ রয়েছে। এই বিষয়ে ফ্যাক্টরীর সহকারী জেনারেল ম্যাানেজার (এজিএম) ইলিয়াসের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি অ্যাডমিন ম্যানেজার ফরিদের সাথে কথা বলতে বলেন। পরে চেষ্টা করেও কাজের ব্যাস্ততা দেখানোর কারণে অ্যাডমিন ম্যানেজারের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি ঝুঁকিতে ফেলে পাইপলাইন নির্মাণ করার জন্য তাইপে বাংলা ডায়িং ফ্যাক্টরীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
×