ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে অক্সিজেনের তীব্র সংকট

প্রকাশিত: ১৮:৪৩, ১ আগস্ট ২০২১

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে অক্সিজেনের তীব্র সংকট

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। অভিযোগ উঠেছে, অক্সিজেনের অভাবে বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর। তবে সংশি¬ষ্টরা বলছেন, সংকট কাটাতে চেষ্টা করছেন তারা। মা রীতা বেগমকে নিয়ে বুধবার রাতে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে আসেন বড় ছেলে রুবেল আহমেদ। রীতা বেগমের ছিল প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট। চোখের সামনে ছটফট করতে দেখেন মাকে। কিন্তু দিতে পারেননি পর্যাপ্ত অক্সিজেন। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রীতা বেগম। মৃত রীতা বেগমের মেয়ে রুবেল আহমেদ বলেন, আমার মা কে নিয়ে আসার পর কোথাও অক্সিজেন পাইনি। শেষ পর্যন্ত আরেক রোগীর কাছ থেকে ধার নিয়ে কিছু সময়ের জন্য মায়ের অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পেয়ে আমার মা মারা গেছে। অক্সিজেন না থাকলে এই হাসপাতাল দিয়ে কি হবে? হবিগঞ্জের এই হাসপাতালে প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। সেই সাথে রয়েছে স্বাভাবিক রোগীর চাপও। কিন্তু বেশিরভাগেরই অভিযোগ, প্রয়োজন হলে পাওয়া যাচ্ছে না অক্সিজেন। কদাচিৎ দেখা মেলে চিকিৎসকের। হাসপাতালে এখনও চালু হয়নি কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা। যদিও প্রায় ২২ লাখ জনসংখ্যার হবিগঞ্জ জেলাবাসীর চিকিৎসার ভরসাস্থল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা আধুনিক সদর হাসপাতাল। এ হাসপাতালটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। এ অবস্থায় কোনরকমে জোড়াতালি দিয়ে চলছে ২৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম। বছরের পর বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে দুটি আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন। বিকল অবস্থায় পড়ে আছে দুটি এনালগ এক্সরে মেশিনও। একটি ডিজিটাল এক্সরে মেশিন থাকলেও তার ফিল্ম নেই। আছে ডাক্তার, নার্সসহ নানা পদে লোকবল সঙ্কট। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, প্রতিদিন এ হাসপাতালে জেলার নানা স্থান থেকে কমপক্ষে ২০০ থেকে ৩০০ রোগী আসেন। হাসপাতালটি ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার পর থেকেই পুরোনো লোকবল দিয়েই কার্যক্রম চলছে। ৫৮ জন ডাক্তারের মাঝে আছেন ২২ জন। অনেক সময় সবাই আবার উপস্থিত থাকেন না। ১০৫ জন নার্সের বদলে আছেন ৮৫ জন। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আল্ট্রাসনোগ্রামের মেশিনগুলো বেশ কয়েক বছর ধরেই নষ্ট। হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এএনএম হাসান বলেন, আমাদের একটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা আছে। এর বাইরে ভ্যান্টিলেটর, আইসিইউ কিছুই নেই। আমাদের অনেক কিছুরই অভাব। ডাক্তার এবং দক্ষ কর্মীরও অভাব আছে। এদিকে অক্সিজেন সংকট সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. কায়সার রহমান। তিনি বলেন, আমাদের অক্সিজেন সিলিন্ডার যা আছে তা স্বাভাবিক সময়ের জন্য। যেহেতু রোগী বাড়ছে সংকট কিছুটা হবেই। কিন্তু আমরা চেষ্টা করছি অক্সিজেন সরবরাহ বাড়াতে, যাতে সংকট না থাকে।
×