ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মুরগীবাহী ট্রাকেও গাদাগাদি করে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে যাত্রা

পন্যবাহী ট্রাক পরিণত হয়েছে গণপরিবহনে

প্রকাশিত: ১৯:১০, ৩১ জুলাই ২০২১

পন্যবাহী ট্রাক পরিণত হয়েছে গণপরিবহনে

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস॥ শনিবার সকাল থেকে বগুড়ার বাইপাস সড়কের মোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে ঢাকামুখী মানুষের স্রোত নামে। ঢাকামুখী মহাসড়কের এই মোড় গুলো তৈরী হয়ে ওঠে অনির্ধারিত ট্রাক স্টপেজে। মাইক্রোবাস ও পন্যবাহী ট্রাক হয়ে উঠে গণপরিবহন। কর্মস্থলে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে দুর্ভোগে পড়া গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের জীবন ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি উপেক্ষা করে ট্রাক ও মাইক্রোবাসে গাদাগাদি করে ঢাকার যেতে দেখা গেছে। একারনে মহাসড়কের অনেকস্থানে কিছু সময়ের যানজটেরও স্ৃিস্ট হয়। ট্রাকে যাত্রী প্রতি নেয়া হচ্ছে ৬ শ থেকে ১ হাজার টাকা এবং মাইক্রোবাসে যাত্রীপ্রতি দেড় থেকে দু’ হাজার টাকা। আর এই যাত্রায় নুন্যতম স্বাস্থ্য বিধির কোন বালাই নেই। এসব যাত্রীর ৮০ ভাগই গার্মেন্টস কর্মী। পন্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও মুরগীবাহী মিনিট্রাকে লোকজনকে জীবনের ঝুঁকি ঢাকা ও আশেপাশর এলাকার গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে অমানবিক দুর্ভোগ ও ঝুঁকি নিয়ে যেতে দেখা গেছে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দেখা গেছে এই চিত্র। গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের মুন ও জব্বার ঢাকার ডেমরা এলাকার একটি গার্মেন্টসের কর্মী। সকালে ঢাকার ফেরার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। অটোরিক্সা ও ভ্যানে করে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বিকাল সাড়ে ৩টায় অবশেষে বগুড়ার বাইপাস বনানী মোড়ে পৌঁছেন। মাইক্রোবাসে জায়গা না পেয়ে সিদ্ধান্ত নেন ট্রাকে ওঠার। বগুড়ার রানীরহাট এলাকার রিমা নাজমুলসহ অন্ততঃ ৪০ জন একটি ট্রাকে করে ঢাকায় কর্মস্থলে ফেরার জন্য রওনা হয়েছেন। বললেন, উপায় নেই কারখানা খুলছে তাই বেঁচে থাকার জন্য দুভোর্গ হলেও কর্মস্থলে ফিরতে হবে যে কোন ভাবে। গার্মেন্টসকমী রুনা রিয়াদ আলীসহ ৮/১০ জন বগুড়ার বনানী থেকে মাইক্রোবাসে চান্দুরা পর্যন্ত যাওয়ার জন্য আসললেও বেশি টাকা চাওয়ায় প্রায় দেড় ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন। মাইক্রো চালক কোন ভাবেই জনপ্রতি দু’ হাজার টাকার নীচে যেতে রাজী নন। তার কথা রাস্তায় খরচ আছে। মাইক্রোবাস চালক কাহালু উপজেলার দুলাল ও মোতালেব জানালেন, শুক্রবার রাতে থেকে তারা দু’ বার বাইপাইল ও চান্দুরা পর্যন্ত আসা যাওয়া করে শনিবার বিকাল ৪ টায় আরেকবার ঢাকায় যাত্রী নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চালক দুলাল ইঙ্গিত করে জানালেন, রাস্তায় চলার জন্য ‘খরচ’ বাবদ ঢাকা পর্যন্ত এক টিপে তাকে দিতে হয়েছে ২১শ টাকা। তাই তারা বেশি ভাড়া নিচ্ছেন। শুধু বনানী নয়, বগুড়ার চারমাথা, তিনমাথা মাটিডালি মোড়েও একই চিত্র দেখা গেছে। তবে মাইক্রোবাসের চেয়ে সবচেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহন করছে ট্রাক। আবার খালি ট্রাকের পাশপাশি পন্যবাহী ট্রাকের একপাশে পন্য অপরপাশে যাত্রী গাদাগাদি করে তুলছে। এমনকি কাভার্ড ভ্যান ও মুরগীবাহী ট্রাকের খাঁচায় অমানবিক ও অস্বাস্থ্যকর ভাবে কর্মস্থলমুখী মানুষকে দুর্ভোগ নিয়ে যাত্রা করতে দেখা গেছে চাকরীতে যোগদানের জন্য। তাদের কথা কমস্থলে না গেলে চাকরী থাকবে না। বগুড়ার বনানী এলাকার পরিবহন শ্রমিক আরিফুল জানালেন তিনি একাই বনানীমোড় থেকে ঢাকার বাইপাইল ও চান্দুরার উদ্দেশ্যে যাওয়া ১৪/১৫টি ট্রাকে যাত্রী তুলেছেন। এসব মোড়ে সকাল থেকে দেখাগেছে ট্রাক ও মাইক্রোবাসর সাড়ি। প্রতি ১৫/২০ মিনিটের মধ্যেই খালি আসা ট্রাক-মাইক্রোবাস ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। আর পন্যবাহী ট্রাকতো রয়েছেই।
×