ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাগেরহাটে ভেসে গেছে ১৭ হাজার মৎস্য ঘের

প্রকাশিত: ১৯:০৬, ৩১ জুলাই ২০২১

বাগেরহাটে ভেসে গেছে ১৭ হাজার মৎস্য ঘের

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে ৪ দিনের প্রবল বৃষ্টিতে বাগেরহাটের ১৭ হাজারের অধিক মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১১ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য চাষিরা হাপিত্যেশ করছেন। এখানে গত মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) ভোর থেকে টানা বর্ষণ শুরু হয়। একইসাথে সকল নদনদীতে ২ থেকে ৩ ফুট অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি পায়। মৎস্য বিভাগ ও চাষিরা বলছেন বৃষ্টি ও পানি বৃদ্ধি ফলে তাদেও মৎস্য ঘের ভেসে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। জেলার কচুয়া, রামপাল, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ, ফকিরহাট, শরণখোলা, ও সদর উপজেলার সর্বত্র এ ক্ষতি হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত এসব উপজেলার গ্রামের পর গ্রাম পানিবন্দি হয়ে আছে। বাগেরহাট মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী জেলার বিভিন্ন উপজেলার ১৭ হাজার ৩৭৫টি মৎস্য ঘের ও পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে, ৭ হাজার ৪৩৪টি পুকুর, ৯ হাজার ৬৬৪টি ঘের এবং ২৭৫টি কাকড়া-কুচিয়ার খামার রয়েছে। এর ফলে চাষিদের দুই কোটি ৫১ লাখ টাকার সাদা মাছ, সাত কোটি ১৫ লাখ টাকার চিংড়ি মাছ এবং ২৪ লাখ টাকার কাকড়া-কুচিয়া ভেসে গেছে। অবকাঠামোরও ক্ষতি হয়েছে ৫৭ লাখ টাকার। সব মিলিয়ে টাকার অংকে চাষিদের ১১ টাকার উর্দ্ধে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি বলে চিংড়ি চাষিরা দাবী করেছেন। বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা এলাকার চাষী হাকিম ও কচুয়া উপজেলার ঘের চাষি ছালাম মোল্লা জানান, গত ৪ দিনের বিরামহীন বৃষ্টি তারপরে আবার জোয়ারের পানি। কতক্ষণ আর ঠিক থাকবে। আমাদের সব ঘের তলিয়ে গেছে। এ ক্ষতি আর কাটিয়ে উঠতে পারব না।’ অনুরূপ কথা বলেন, রামপাল, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ, চিতলমারী ও সদও উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থরা। বাগেরহাট জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি ফকির মহিতুল ইসলাম সুমন বলেন, একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে চিংড়ি চাষিরা মারত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তারা ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি হারিয়ে ফেলছে। বৃষ্টির পানি ও জোয়ারের প্রভাবে এখন পর্যন্ত জেলায় অন্তত ২০ হাজারের বেশি মৎস্য ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে, প্রায় ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। চিংড়ি চাষিদের টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের নীতিমালা বাস্তবায়ন ও সরকারের সার্বিক সহযোগীতার বিকল্প নেই বলে জানান তিনি। বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম রাসেল বলেন, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় ১৭ হাজারের অধিক মৎস্য ঘের ও পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১১ কোটি টাকার বেশী ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তবে বৃষ্টি যদি অব্যহত থাকে এই ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
×