নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী, ৩০ জুলাই ॥ কলাপাড়ার গোটা উপকূলের অন্তত ২০ হাজার জেলে পরিবারের সঙ্গে মৎস্য ব্যবসায় জড়িত ট্রলার, আড়ত মালিকসহ এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও ১০ হাজার কর্মচারীর পরিবারে চরম দুর্বিষহ অবস্থা বিরাজ করছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে দীর্ঘ অবরোধ শেষে এখন ঘাটে বসে বসে কোটি কোটি টাকার বাজার, সওদা শেষ হয়ে যাচ্ছে। ইলিশের ভরা মৌসুমে সাগরে যেতে না পেরে এ পেশায় এক ভয়াবহ সঙ্কটকাল তৈরি হয়েছে। চরম উৎকণ্ঠায় পড়েছে অন্তত ৩০ হাজার পরিবার। সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। শতাধিক ট্রলার অবরোধের পরের দিন চরম ঝুঁকি নিয়ে সাগরে গেলেও কেউ ফিরেছে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে। আবার কেউ জাল ফেললেও কোন মাছ মেলেনি। কোটি কোটি টাকার ধারদেনায় হাজার হাজার জেলেসহ ট্রলার মালিক ও আড়ত মালিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মৎস্য বন্দর মহিপুর আলীপুর ও কুয়াকাটায় মোকামগুলোয় নেই কোন প্রাণ চাঞ্চল্য। গভীর সমুদ্রগামী জেলেরা বলছেন কবে নাগাদ সাগরে যেতে পারবেন তাও মহা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। ফের নতুন করে বাজার সওদা করার মতো পুঁজির সঙ্কটে পড়েছেন অধিকাংশ ট্রলারের মালিক ও জেলেরা। খবর সরেজমিনে অনুসন্ধানসহ বিভিন্ন সূত্রের।
কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি ও লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, অন্তত ৭০০-৮০০ ট্রলার দুই পাড়ে ভিড়ে আছে। কোন ট্রলারের জেলেরা আড়তে গিয়ে ঘুমুচ্ছে। প্রত্যেক ট্রলারের গড়ে এক/দেড় লাখ টাকার লোকসান ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। বসে বসে খাওয়াতে হচ্ছে জেলেদের। মহিপুরের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতা এফবি ফয়সাল ফিসের মালিক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ফজলু গাজী জানান, ভরা মৌসুমে এমন বিপাকে তারা আগে কখনও পড়েননি। প্রকৃতির সঙ্গে আর পারছেন না তারা; এমনটাই জানালেন। ইলিশের কোন দেখা নেই। এক টাকার ইলিশও মেলেনি। আড়তগুলো খাঁ খাঁ করছে। ফজলু গাজী জানালেন, ইলিশের বিচরণ ক্ষেত্র পাল্টেও যেতে পারে। তার দাবি দীর্ঘ খরায় সাগরে লোনার পানির প্রভাবে ইলিশ চারণক্ষেত্র পরিবর্তন করতে পারে। নইলে এখন অগভীর এলাকায় যারা খুটা জেলে তারাও ইলিশের দেখা পায়নি। উল্টো উত্তাল ঢেউয়ে লাখ লাখ টাকার জাল ছিঁড়ে গেছে। আরও দুই তিন লাগতে পারে আবহাওয়া ঠিক হতে; এমনটাই দাবি করলেন কলাপাড়া উপজেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান খান।