ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

টোকিওতে ব্র্যান্ডন আর ঢাকায় মিচেল স্টার্ক

প্রকাশিত: ২২:৫২, ৩১ জুলাই ২০২১

টোকিওতে ব্র্যান্ডন আর ঢাকায় মিচেল স্টার্ক

মোঃ মামুন রশীদ ॥ মিচেল স্টার্ক সারাবিশ্বেই পরিচিত একটি নাম। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের গতিময় এ তারকা এখন ৫ ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে। বৃহস্পতিবার দলের সঙ্গে বাংলাদেশে এসেই রাজধানী ঢাকার এক হোটেলে ৩ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইন করছেন তিনি। অপেক্ষায় আছেন ৩ আগস্ট থেকে মাঠে গড়াতে যাওয়া টি২০ সিরিজে ঝড় তোলার। মিচেলের প্রায় ৪ বছরের ছোট ভাই ব্র্যান্ডন স্টার্ক একই সময় টোকিও অলিম্পিকের ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডে আছেন নিজের সেরা সাফল্য পাওয়ার সন্ধানে। ২৭ বছর বয়সী ব্র্যান্ডন একজন হাইজাম্পার। ২০১৬ সালে রিও অলিম্পিকে ব্যর্থ হলেও এবার অস্ট্রেলিয়া দলের হয়ে স্বর্ণপদক জেতার ক্ষেত্রে অন্যতম ফেবারিট তিনি। কারণ এ বছর জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ২.৩৩ মিটার লাফিয়ে অলিম্পিকের জন্য কোয়ালিফাই করেছেন। ইতোমধ্যে পুরুষদের হাইজাম্পের ফাইনালেও উঠেছেন ব্র্যান্ডন। রবিবার ১৩ জনের ফাইনালে পদক নিশ্চিত হবে। মিচেলের ছোট ভাই ব্র্যান্ডনও তখন নিশ্চিতভাবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়ে যাবেন। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ইতোমধ্যে অফিসিয়াল টুইটে মিচেলের ভাই ব্র্যান্ডনকে পরিচিত করে দিয়েছে। কিছুদিন আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষ করেছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের টি২০ ও ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে অসিরা। দলটির অপরিহার্য বোলিং অস্ত্র মিচেল স্টার্ক। বর্তমান বিশ্বে গতিময় পেসারদের তালিকায় শীর্ষস্থানীয় মিচেল অসি ক্রিকেট দলের অন্যতম ভরসা। এখন ৫ ম্যাচের টি২০ সিরিজে স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে সাফল্য পাওয়ার অপেক্ষায় তিনি। ৩ আগস্ট বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ শুরু হবে। ৩ দিনের কোয়ারেন্টাইন করছেন এখন মিচেল। ১ আগস্ট যখন দলের সঙ্গে ঢাকার মিরপুরে অনুশীলন শুরু করবেন তখন ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ অলিম্পিকে পদক জয়ের লড়াইয়ে নামবেন ছোট ভাই ব্র্যান্ডন। টোকিও অলিম্পিকে অস্ট্রেলিয়ার জন্য হাইজাম্পে আশার আলো ব্র্যান্ডন। তিনি ১৩ জনের ফাইনালে রবিবার টোকিওতে নামবেন সেরা সাফল্যের সন্ধানে। ছোটবেলায় ব্র্যান্ডন বড় ভাই মিচেলের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছেন। এমনকি ফুটবলও। তবে ধীরে ধীরে এ্যাথলেটিক্সের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ২০০৯ সালে মূলত হিলস স্পোর্টস হাইস্কুলে অধ্যয়নের সময় হাইজাম্পে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন তিনি। মিচেল ধরে রাখেন তার ক্রিকেটে মনোযোগ। ২০১০ সালেই মিচেল অসি ক্রিকেট দলের হয়ে ওয়ানডে অভিষেক ক্যাপ পরেন। ততক্ষণে হাইজাম্পে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন ছোট ভাই ব্র্যান্ডন। জাতীয় ক্রিকেট দলে বড় ভাইয়ের অভিষেকের বছর যুব অলিম্পিক আসর দিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অভিষেক হয় ব্র্যান্ডনের এবং ২.১৯ মিটার লাফিয়ে জিতে নেন রৌপ্য। এরপর ব্র্যান্ডন অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়েছেন। ২০১২ সালে জুনিয়র বিশ্বএ্যাথলেটিক্সে ষষ্ঠ, পরের বছর বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপেও ষষ্ঠ, ২০১৪ সালের কমনওয়েলথ গেমসে অষ্টম, ২০১৫ বিশ্ব আসরে ১২তম, ২০১৬ রিও অলিম্পিকে ১৫তম হয়েছেন। ২০১৭ ও ২০১৯ সালে দীর্ঘ সময় ইনজুরিতে ভুগেছেন। তবে ২০১৮ সাল ছিল সাফল্যে মোড়ানো। ব্র্যান্ডন গোল্ড কোস্টে হওয়া কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণ জয় করেন। একই বছর জার্মানিতে হওয়া এক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ২.৩৬ মিটার লাফিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ২১ বছরের রেকর্ড স্পর্শ করেন এবং ব্রাসেলসে হওয়া ডায়মন্ড লীগে জিতে নেন স্বর্ণ। ২০১৯ সালে ইনজুরির জন্য রানআপ দুইধাপ কমিয়েও ষষ্ঠ হয়েছেন। আর এবার অলিম্পিকে হয়তো সেরা সাফল্যই পেতে চলেছেন। ব্র্যান্ডন স্টার্কের ব্যাপারে আইসিসি টুইটারে লিখেছে, ‘একজন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অস্ত্র। অন্যজন খেলছে অলিম্পিকে। স্টার্ক ভাইরা কী খেয়ে বড় হয়েছে?’ মিচেল ক্রিকেটে ব্যস্ত সময় পার করছেন, তবে নিয়মিতই দেখছেন ব্র্যান্ডনের প্রতিযোগিতা। এখন কোয়ারেন্টাইন সময়টাও পার করবেন ছোট ভাইয়ের পারফর্মেন্স দেখে। মিচেল ইনস্টাগ্রামে ভাই ব্র্যান্ডনের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আইসোলেশনে সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক হচ্ছে ব্রেন্ডনকে অলিম্পিকে দেখা। যাও তাদের হারিয়ে দাও ইয়ংস্টার।’
×