ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রতিবাদে মানববন্ধন, বিশেষ আইনে মামলা দায়ের

কিশোরগঞ্জে সৈয়দ আশরাফের ম্যুরাল ভাংচুর

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ৩০ জুলাই ২০২১

কিশোরগঞ্জে সৈয়দ আশরাফের ম্যুরাল ভাংচুর

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ ॥ রাজনীতির শুদ্ধ পুরুষ-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ম্যুরাল ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার রাতে শহরের আখড়াবাজার সেতুর পাশে নরসুন্দা নদী-সংলগ্ন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে অবস্থিত এ ম্যুরালের একটি অংশ ভেঙে ক্ষতি করা হয়। এ ঘটনায় নানা শ্রেণি পেশার মানুষের মনে নিন্দার ঝড় উঠেছে। অনেকে সোস্যাল মিডিয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। শুক্রবার বেলা ১১টায় ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে কিশোরগঞ্জ নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চ আয়োজিত শহরে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সংগঠনের আহ্বায়ক শেখ সেলিম কবিরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিসিবি পরিচালক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কর খোকনসহ অন্যরা। বক্তারা অবিলম্বে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানান। তাঁর ম্যুরাল ভাংচুরের মাধ্যমে যে ধৃষ্টতা দেখানো হয়েছে, সেটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া হবে না বলেও বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার অর্থায়নে গত বছরের ৩০ নবেম্বর পৌর মেয়র মোঃ পারভেজ মিয়া ম্যুরালটি উদ্বোধন করেন। এখনো এটির পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতের আঁধারে কে বা কারা উদ্বোধনী স্মৃতিফলকটি ভেঙে ফেলেন। এছাড়া সৈয়দ আশরাফের ম্যুরাল ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা চালান। খবর পেয়ে রাতেই কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, পুলিশ সুপার মোঃ মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজল, পৌরসভার মেয়র পারভেজ মিয়া, সদরের ইউএনও মোঃ কাদির মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এদিকে এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে শুক্রবার কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পৌর মেয়র পারভেজ মিয়া বলেন, সৈয়দ আশরাফের ম্যুরাল ভাঙার অপচেষ্টাকারীদের খুঁজে বের করতে হবে। এমন অপকর্মের নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মাশরুকুর রহমান খালেদ গণমাধ্যমে বলেন, ম্যুরালটি ভাংচুরের সঙ্গে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীদের খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম গণমাধ্যমে বলেন, কিছু দুষ্কৃতিকারী জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নামফলক এবং ম্যুরালটির দুই-একটি জায়গার ক্ষতিসাধন করেছে। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় যে বা যারা জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবো। প্রসঙ্গত, কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সারাদেশে রাজনীতির ‘বিশুদ্ধ পুরুষ’ হিসেবে বিবেচিত। দলমত-নির্বিশেষে তিনি ছিলেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য রাজনীতিক। তাঁর স্মৃতিফলক রাতের আঁধারে কে বা কারা ভেঙে ফেলবে এটি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না বলে দলমত নির্বিশেষে সকলের মনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
×