ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভিকারুননিসার কোটি টাকার হিসাব নেই

প্রকাশিত: ২৩:৩৮, ৩০ জুলাই ২০২১

ভিকারুননিসার কোটি টাকার হিসাব নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোটি টাকার হদিস নেই ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজের। কলেজের উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের নামে উত্তোলিত এই টাকার হদিস মিলছে না। দরপত্র ও কার্যাদেশ ছাড়াই গবর্নিং বডির অনুমোদনে দুই কোটি সাড়ে ছয় লাখ টাকার প্রকল্প পাস করা হয়। পরে উন্নয়নের নামে প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকে অগ্রিম বিলের মাধ্যমে দেড় কোটির বেশি টাকা তোলা হয়েছে। উত্তোলিত এসব টাকার মধ্যে মাত্র ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ের হিসাব মিলেছে। এ সংক্রান্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, গতবছরের ২০ অক্টোবর গবর্নিং বডির সভায় ভিকারুননিসার উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধন কাজের অনুমোদন দেয়া হয়। এজন্য দুই কোটি ছয় লাখ ৫৩ হাজার ৮৪৪ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। এর মাধ্যমে বেইলি রোডের মূল শাখার বিভিন্ন গেট সংস্কার, মেরামত ও ভেতরে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়। এটি বাস্তবায়নে অভিভাবক প্রতিনিধি সিদ্দিকী নাছির উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে কয়েকজন শাখা প্রধানকে নিয়ে ১২ সদস্যের কমিটি করা হয়। কমিটিতে গোলাম বেনজীর ও ওহেদুজ জামান মন্টুকে যুগ্ম-আহ্বায়ক, এবিএম মনিরুজ্জামান, এ্যাডভোকেট রীনা পারভীন ও বদরুল আলমকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়। ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজের একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, এ কমিটির অন্যদের গুরুত্ব না দিয়ে সিদ্দিকী নাছির উদ্দিন অভিভাবক প্রতিনিধিদের ‘ম্যানেজ’ করে নিজের ইচ্ছেমতো অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। অগ্রিম ভাউচার দেখিয়ে এ পর্যন্ত এক কোটি ৫৯ লাখ ৩৫ হাজার ২৩৭ টাকা আদায় করেছেন তিনি। কাজ শেষ না হলেও অধ্যক্ষের কাছে বাকি টাকা আদায়ে নানাভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন সিদ্দিকী নাছির উদ্দিন। এজন্য দুই দফায় অধ্যক্ষের রুমে তালাও লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া বিভিন্ন সময় অধ্যক্ষকে গালাগাল, অপদস্থ ও লাঞ্ছনাও করেছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভিকারুননিসার সাবেক অধ্যক্ষ ফওজিয়ার দায়িত্বকালে গতবছর উন্নয়ন কাজের নামে ১৯টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। বিধি মোতাবেক সরকারী ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজের ক্ষেত্রে পাঁচ লাখ টাকার উর্ধে হলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের (ইইডি) অনুমোদন সাপেক্ষে দরপত্র আহŸান ও কার্যাদেশ প্রদান করতে হয়। কিন্তু এখানে কোন কিছুই অনুসরণ না করে নিয়মবহিভর্‚ত অনুমোদন দিয়ে কোটি টাকা অভিভাবক প্রতিনিধিদের মধ্যে ‘ভাগবাটোয়ারা’ হয়ে গেছে। এসব কাজের তেমন অগ্রগতি না থাকলেও টাকার জন্য বর্তমান অধ্যক্ষকে দফায় দফায় অপদস্থ করলে ৩০ জুন বিষয়টি তদন্ত করতে অধ্যক্ষ ইইডিতে চিঠি দেন। তার ভিত্তিতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত কাজ শুরু করা হয়। সম্প্রতি এ কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে।
×