বিশেষ প্রতিনিধি ॥ এমপি-মন্ত্রীসহ কেউই জবাবদিহিতার উর্ধে নয় জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এমপি-মন্ত্রীসহ কেউই জবাবদিহিতার উর্ধে নয়, স্বাধীন সংস্থা হিসেবে দুদক যে কোন অপরাধের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শতভাগ সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সরকার পরিচালনা করছেন, অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর এবং স্পষ্ট।
বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির উদ্যোগে বিভিন্ন প্রতিনিধিদের মাঝে করোনা সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সঙ্কটে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের ভূমিকা পালনের চরম ব্যর্থতা আড়াল করতে মিথ্যাচারই বিএনপির এখন একমাত্র অবলম্বন। বিএনপি নেতারা জনগণের পাশে দাঁড়ানোর অক্ষমতা ঢাকতেই সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এতগুলো রাজনৈতিক দল, অথচ কেবল আওয়ামী লীগই এখন সরেজমিনে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। একটি দল ঘরে বসে লিপ সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু জনগণ এখন লিপ সার্ভিস চায় না।
আওয়ামী লীগ বিএনপির মতো কথাসর্বস্ব কোন রাজনৈতিক দল নয় জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজের সবকিছু নিয়ে অকাতরে মানুষের পাশে দাঁড়ায় বলেই জনগণ আওয়ামী লীগকেই বিপদের বন্ধু মনে করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আজ সারা দুনিয়ায় প্রশংসিত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের জন্য সারাবিশ্বের উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশকে আজ বিশ্ব দরবার মূল্যায়িত করছে কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ ও দক্ষ নেতৃত্বের কারণে।
ভ্যাকসিন নিয়ে বিএনপি প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশে যে পরিমাণ ভ্যাকসিন প্রয়োজন সে পরিমাণ ভ্যাকসিন বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যায়ক্রমে আসবে। ভ্যাকসিন নিয়ে কোন সঙ্কট হবে না।
সবাইকে শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভ্যাকসিনের চেয়েও কার্যকরী হচ্ছে মাস্ক, তাই উপ-কমিটির নেতৃবৃন্দকে একাধিক টিম করে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় জনগণকে সঠিকভাবে মাস্ক পরিধানে উৎসাহিত করতে হবে। ঘরে ঘরে সচেতনতার দুর্গ গড়ে তুলতে হবে।
এমপি-মন্ত্রীদের সম্পদের হিসেব নেয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শতভাগ সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সরকার পরিচালনা করছেন, অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর এবং স্পষ্ট।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতোমধ্যে অনেক নেতাকর্মী এবং এমপির বিরুদ্ধে দুদক ব্যবস্থা নিয়েছে, সরকার কাউকে রক্ষা করতে যায়নি। দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে দুদকের ওপর সরকারের পক্ষ থেকে কোন হস্তক্ষেপ বা বাধা নেই। সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিলে আমাদের কারও আপত্তি থাকার কথা নয়, আমি নিজেও সম্পদের হিসাব দিতে প্রস্তুত। এছাড়া প্রতিবছর আয়কর-রিটার্নের মাধ্যমেও সম্পদের হিসাব দেয়া হয়, সে হিসাব বা ট্যাক্স দেয়ায় গড়মিল থাকলে তাও দুদক তদন্ত করে দেখতে পারবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবির কাউছার ও সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সভাপতি প্রকৌশলী এম এ হামিদ, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শামসুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন জার্মানি শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
পরে প্রতিনিধিদের মাঝে ত্রাণ উপ-কমিটির উদ্যোগে বিভিন্ন মেডিক্যাল হাসপাতাল, জেলা জেনারেল হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালসহ ৩২টি হাসপাতালে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, অক্সিজন কনসেন্ট্রেটর ও অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ করোনা সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেন নেতৃবৃন্দ।
