ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বাদশ শতকের নিদর্শন বলে ধারণা

৭০ কেজি ওজনের হর-পার্বতী মূর্তি

প্রকাশিত: ২৩:২৪, ২৮ জুলাই ২০২১

৭০ কেজি ওজনের হর-পার্বতী মূর্তি

মোরসালিন মিজান ॥ শত সহস্র বছর আগে শিল্পীরা পাথর কেটে দারুণ সব মূর্তি গড়তেন। এখন সেগুলো নতুন করে আবিষ্কৃত হচ্ছে। দেখে বিস্মিত না হয়ে পারা যায় না। মূর্তি তৈরির সময় উদ্দেশ্য ছিল উপাসনা। আর এখন এগুলো গবেষণার উপাদান। ইতিহাসের অমূল্য স্মারক। প্রায় নিয়মিতভাবেই দেশের কোন না কোন প্রান্তে পাওয়া যাচ্ছে কষ্টি পাথরের মূর্তি। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি রাজশাহীর বাগমারায় সন্ধান মিলেছে একটি হর-পার্বতী মূর্তির। একটি পুকুর খননের সময় মূর্তিটি পাওয়া যায়। নরদাশ ডিগ্রী কলেজের পাশে অবস্থিত পুকুরে গত প্রায় দুই মাস ধরে সংস্কার কাজ চলছিল। প্রতিদিনই পুকুর থেকে পানি ও বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। জানা যায়, এরই এক পর্যায়ে মূর্তিটির সন্ধান মেলে। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে কৌতুহলী হয়ে ছুটে আসে সাধারণ মানুষ। পরে পুলিশ এসে মূর্তিটি বাগমারা থানায় নিয়ে যায়। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এটি ৭০ কেজি ওজনের কষ্টি পাথরের মূর্তি। হর-পার্বতী মূর্তির উচ্চতা দুই ফুট। প্রস্ত এক ফুট। তার চেয়ে বড় কথা এর গঠন নির্মিতি এক কথায় মুগ্ধ করে রাখে। উমা-মহেশ্বর মূর্তির কথা আমরা জানি। মহেশ্বর এখানে দুই বা চার বাহু বিশিষ্ট। উমা দুই বাহুর। মহেশ্বরের বাহন বৃষ। বাহনটিকে তার ডান পায়ের নিচে দেখানো হয়। উমার বাহন সিংহ তার বাম পায়ের নিচে থাকে। বাগমারায় পাওয়া মূর্তিটি এর অনুরূপ বলেই মনে হয়েছে। অনুমান করা যায়, এটি দ্বাদশ শতকের নিদর্শন। তবে এত প্রাচীন নির্মাণ হলেও, এখনও মোটামুটি অক্ষত। প্রতœতত্ত¡ অধিদফতরের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা বলছিলেন, গত কয়েকদিনের ব্যবধানে রাজশাহী থেকে একাধিক কষ্টি পাথরের প্রাচীন মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে। হর-পার্বতী ছাড়াও একটি বিষ্ণু মূর্তি পাওয়া গেছে। খননে প্রাপ্ত প্রতœ নিদর্শন সাধারণত নিকটস্থ জাদুঘরে প্রদান করা হয়। সে অনুযায়ী, আইনী প্রক্রিয়া শেষে মূর্তিগুলো পাহাড়পুর প্রতœতাত্তি¡ক জাদুঘরে চলে যাবে বলে জানান তিনি। অবশ্য পাহাড়পুর জাদুঘরে মূর্তিটি এখনও পৌঁছেনি। জাদুঘরের কাস্টডিয়ান ফজলুল করিম বলছিলেন, রাজশাহীর বাগমারায় হর-পার্বতী মূর্তি পাওয়ার কথাও আমরা জেনেছি। তবে এখনও এটি আমাদের সংগ্রহে আসেনি। ছবিতে দেখেছি। আসলে আমাদের এখানে তো নিয়মিতই কোন না কোন মূর্তি আসে। বিষ্ণু মূর্তি আসে বেশি। তবে হর-পার্বতী মূর্তি সে তুলনায় কম পাওয়া হয়। আমি গত এক বছরে হর-পার্বতী মূর্তি আসতে দেখিনি। সেদিক থেকে দেখলে এটি বেশ দুর্লভ বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে মূর্তি সংগ্রহে এলে এটি নিয়ে গবেষণা শেষে বাকি তথ্য নিশ্চিত করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
×