ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবল বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে দুই শতাধিক গ্রাম ॥ পানিবন্দী ১০ হাজার মানুষ

কক্সবাজারে পাহাড় ধসে রোহিঙ্গা ও শিশুসহ ৭ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ২৩:১৩, ২৮ জুলাই ২০২১

কক্সবাজারে পাহাড় ধসে রোহিঙ্গা ও শিশুসহ ৭ জনের মৃত্যু

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে পাঁচ রোহিঙ্গাসহ সাতজনের মৃত্যু ঘটেছে। এদের মধ্যে টেকনাফ ও মহেশখালীতে দুই নারী-পুরুষ এবং বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রিত ৫ নারী-পুরুষ ও শিশুর মৃত্যু হয়। সোমবার গভীররাতে ও মঙ্গলবার ভোরে পৃথক এসব ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, জেলার উখিয়া, টেকনাফ, পেকুয়া, চকরিয়া, রামু, ঈদগাও, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দুই শতাধিক গ্রাম তলিয়ে গেছে। রোহিঙ্গা শিবিরসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত আট শতাধিক বাড়িঘর। মহেশখালীতে পাহাড় ধস ও পাহাড়ী ঢলে সাঁকো, দোকান ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। ভেসে গেছে মিয়ানমার সীমান্তের জিরো লাইনে অবস্থানকৃত রোহিঙ্গাদের কক্ষের মাল তথা আসবাবপত্র। মিয়ানমারের সরকারী বাহিনী তাদের দেশের অভ্যন্তরে (তুমব্রæ কোনারপাড়া) ব্রিজ নির্মাণ করায় অতিবৃষ্টিতে সহসা নিষ্কাশন হতে না পেরে পানিবন্দী হয়ে পড়ে চার হাজার রোহিঙ্গা ও ৩ হাজার স্থানীয় গ্রামবাসী। নৌকাযোগে ওই পানিবন্দী ব্যক্তিদের উঁচু জায়গায় নিয়ে এসেছে তাদের স্বজনরা। সোমবার সারাদিন ও রাতে এবং মঙ্গলবার ভোরে অতিবৃষ্টির কারণে বিভিন্নস্থানে পাহাড়ে ধস নেমেছে। পাহাড় ধস ও পাহাড়ী ঢলে রোহিঙ্গাদের ঝুপড়িসহ অন্তত ৮ শতাধিক বাড়ি বিধ্বস্ত ও তলিয়ে গেছে দুই শতাধিক গ্রাম। মহেশখালী দ্বীপের শাপলাপুরে পাহাড় ধসে প্রধান সড়কের ওপর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। উখিয়া থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন, অতি বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে পাঁচ রোহিঙ্গার মৃত্যু ঘটেছে। মঙ্গলবার ভোরে উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প নং-১০ এ পাহাড় ধসের মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে। সরকার ঝুঁকিপূর্ণ এসব স্থানে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যেতে চাইলেও ওই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের কাছাকাছি উখিয়া এলাকায় স্থাপিত ক্যাম্প ত্যাগ করে ভাসানচরে যেতে রাজি হয়নি। নিহতরা হচ্ছে- নুর মোহাম্মদের কন্যা নুর বাহার (৩০) শাহ আলমের পুত্র শফি আলম (১২), মোঃ ইউসুফের স্ত্রী দিল বাহার (২৪) তার দুই শিশু সন্তান আবদুর রহমান (৩) ও আয়েশা সিদ্দিকা (২)। সীমান্তের জিরো পয়েন্টে মিয়ানমার অভ্যন্তরে আশ্রিত প্রায় চার হাজার রোহিঙ্গা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রæ কোনারপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দারাও মঙ্গলবার ভোর থেকে পানিবন্দী অবস্থায় আটকা পড়ে। স্বজনরা নৌকা নিয়ে তাদের উঁচু জায়গায় নিয়ে আসে। টেকনাফ থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন, পাহাড় ধসে মঙ্গলবার সকালে এক মৎস্য ব্যবসায়ীর মৃত্যু ঘটেছে। নিহত রহিম আলী (৬৫) হোয়াইক্যং মনিরঘোনার মৃত আলী আহমদের পুত্র। মহেশখালী থেকে সংবাদদাতা জানান, সোমবার গভীররাতে পাহাড় ধসে বাড়ির দেয়াল চাপা পড়ে উত্তর সিপাহীর পাড়ার মোঃ আনছারের কিশোরী মেয়ে মুর্শিদা আক্তারের (১৮) মৃত্যু ঘটেছে।
×