ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে আমন চাষের ধুম পড়েছে

প্রকাশিত: ১৬:১৬, ২৭ জুলাই ২০২১

নীলফামারীতে আমন চাষের ধুম পড়েছে

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ নীলফামারী সহ রংপুর কৃষি অঞ্চলে চলছে আমন চাষের ধুম। কৃষকরা জানায় গত বছর থেকেই করোনাকালিন সময় থেকে আমরা আমন ও বোরো ধান আবাদ করে আসছি। এবারো আমনচাষে মাঠে নেমে পড়েছি। এবারো আমন ধানের বাম্পার ফলন আশা করছেন কৃষককুল। আজ মঙ্গলবার নীলফামারীর বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ফসলি মাঠে আমনের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। গত আমন ও বোরো মৌসুমে কৃষকরা ধানের দাম ভাল পাওয়ায় এবারো করোনার ঝুঁকি নিয়ে তারা ফসলি মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। বাহালিপাড়া গ্রামের আমন ধান চাষী আব্দুল হামিদ বলেন, এই সময় করোনার ভয়ে ঘরে বসে থাকলে কী করে চলবে? ধান ঘরে উঠাতে না পারলে সারাবছর কীভাবে ছেলেমেয়েদের নিয়ে সংসার চলবে। ধান আবাদ না করলে দেশের মানুষ খাবে কি। আরেক চাষি সুলতান মিয়া বলেন,আমরা কৃষকরা শহরে এখন যাই না। সারা দিন ফসলের মাঠেই আমন আবাদ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ফসলি জমিতেই দিন কাটে। খাওয়া দাওয়া জমির আইলে বসেই সেরে নিতে হয়। কৃষক পরিবারের গৃহিনীরা ভাত তরকারী রান্না করে ফসলের মাঠেই পৌছে দিচ্ছেন। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, রংপুর কৃষি অঞ্চলের ৫ জেলায় এবার ৬লাখ ১২ হাজার ৪৫১ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে নীলফামারী,রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট জেলায় ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৯৮ হেক্টর জমিতে আমনের চারা রোপন করে ফেলেছে কৃষক। বাকী জমিতে আমনের চারা রোপনের কাজ কৃষক চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার বেশী জমিতে আমান ধান চাষ হবে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানানো হয় নীলফামারী জেলায় এক লাখ ১৩ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে ,রংপুর জেলায় ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৪১ হেক্টর জমিতে, গাইবান্ধা জেলায় ১ লাখ ২৮ হাজার ৯০ হেক্টরে, কুড়িগ্রাম জেলায় ১লাখ ১৯ হাজার ৮৩০ হেক্টরে,লালমনিরহাট জেলায় ৮৫ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হচ্ছে। এদিকে সরেজমিনে আরও দেখা যায় সরকারের কৃষি বিভাগের পক্ষে গত বছরে বোরো আবাদে নতুন পদ্ধতি সমলয়ে ধান চাষ সফলের পর এবারো আমন ধান আবাদে একই পদ্ধতিতে কৃষকরা আমন চারা রোপন করছে। সমলয় পদ্ধতিতে তরুনীবাড়ি ব্লকে ৭৭ জন কৃষক বোরো ধান আবাদ করেন । তারা বিঘাপ্রতি ২৮ মন করে ধান পায়। সেখানকার কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন, পঙ্কজ রায়,জাহাঙ্গীর ও নুরন্নবী বলেন সমলয়ে ট্রেতে আমরা ধারের বীজতলা তৈরী করি। পাশাপাশি যন্ত্রের সাহার্য্যে চারা রোপন করি। বোরো আবাদের সফলতার পর এবার আমন আবাদেও আমরা সমলয় পদ্ধতি ব্যবহার করছি। নীলফামারী তরুনীবাড়ি ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পার্থপ্রতিম রায় জানান করোনাকালিন কৃষকদের সুরক্ষা সহ আমন ধান চাষে আমরা সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। নীলফামারী জেলা কৃষি খামারবাড়ির উপপরিচালক কৃষিবিদ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কৃষকদের সুরক্ষায় কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা কৃষকদের সচেতন করতে পরামর্শ দিচ্ছেন। আমরাও মাঠে দিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলছি। আশা করি করোনাকালিন এবারো আমন ধানের বাম্পার ফলন হবে।
×