পদ্মা সেতুতে ফেরির ধাক্কা তদন্ত কমিটির তিন সুপারিশ

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ পদ্মা সেতুর খুঁটিতে ফেরির ধাক্কার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি রবিবার জমা দেয়া প্রতিবেদনে তিনটি সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম সুপারিশ ঘাট স্থানান্তর নিয়ে। এরপরই সন্ধ্যা থেকে শিমুলিয়া ঘাট মাওয়ায় স্থানান্তর নিয়ে চারিদিকে আলোচনা চলছে। তদন্ত কমিটির প্রথম সুপারিশটি হচ্ছে- প্রবল স্রোতে দুর্ঘটনা এড়াতে পদ্মা সেতুকে এড়িয়ে চলতে শিমুলিয়া ঘাটের পার্শ্ববর্তী পুরনো মাওয়া ঘাটে অথবা মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট শরীয়তপুরের পুরনো মাঝিকান্দি ঘাটে স্থানান্তর, দ্বিতীয়টি শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ঘাটে চলাচলকারী দুর্বল ফেরি সরিয়ে স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিতে সক্ষম দ্রুতগতির ফেরি দেয়া এবং তৃতীয়টি পদ্মা সেতুর পাইল ক্যাপে ফেন্ডার (টায়ারের মতো রাবার) স্থাপন করা। বিআইডব্লিউটিসির চার সদস্যের তদন্ত কমিটি রবিবার দেয়া রিপোর্টে এই তিন সুপারিশ করেছে বলে জানান তদন্ত কমিটির প্রধান বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্য) এসএম আশিকুজ্জামান। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘাট স্থানান্তরে বেশি উপযোগী হবে মাওয়া পুরনো ফেরি ঘাট। এই ঘাট উজানে থাকার কারণে নাব্য সঙ্কট কম থাকবে। এছাড়াও ফেরি পথ কমবে প্রায় আড়াই দুই কিলোমিটার। প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়ক পথও কমবে। বর্তমানে বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া ঘাটের দূরত্ব প্রায় ১১ কিলোমিটার। তবে এটি স্থানান্তরে কিছুটা সময় লাগবে এবং মাওয়া চৌরাস্তা থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করতে হবে। তবে এই ঘাট মাওয়ায় স্থানান্তরিত হওয়ার ক্ষেত্রে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর নদী শাসনের কাজ কিছুটা বিঘিœত হতে পারে। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু চালু হতে এক বছরেরও কম সময় লাগবে। তাছাড়া বর্ষার প্রবল স্রোত থাকবে আরও প্রায় দুই মাস। বিগত প্রায় ৮ মাস ধরে পদ্মা সেতুর নিচ দিয়েই ফেরিগুলো চলাচল করছিল। কিন্তু এই ¯্রােতের প্রতিকূলে চলাচলে সক্ষম ফেরি এবং দক্ষ চালক দিয়ে পরিচালনা করা এবং পদ্মা সেতুর নদীতে থাকা ৪০টি খুঁটির ২০টি খুঁটিতে পাইল ক্যাপে ফেন্ডার স্থাপন করা হলেই সঙ্কটের অবসান ঘটতে পারে। তবে তদন্ত রিপোর্ট জমা হওয়ার পর বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালককে ঘাট স্থানান্তরের সুপারিশ উল্লেখসহ পত্র লিখেছেন। তবে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরের শরীয়তপুরের পুরনো মাঝিকান্দি ঘাটে স্থানান্তরে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মাঝিকান্দি ঘাটের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ভাল নয়। এছাড়া এই ঘাটের পদ্মা সেতুর নদী শাসনের প্রচুর ব্লক ফেলা হয়েছে। এই ব্লক ফেরির তলদেশের ক্ষতি করতে পারে। এছাড়া ভাটির এই ঘাটকেন্দ্রিক নাব্য সঙ্কটের আশঙ্কা প্রকট।