ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় দেশে একদিনে ২২৮ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ২২:০০, ২৬ জুলাই ২০২১

করোনায় দেশে একদিনে ২২৮ জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল আটটা থেকে রবিবার সকাল আটটা পর্যন্ত) করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে ২২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ২৭৪ জনে। এই সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ২৯১ জন। এতে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৩৫ জনে। রবিবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চারদিন পর দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ফের ২শ’ ছাড়াল। গত দেশে শনিবার ১৯৫, শুক্রবার ১৬৬, বৃহস্পতিবার ১৮৭, বুধবার ১৭৩, মঙ্গলবার ২০০ ও সোমবার ২৩১ (সর্বোচ্চ) জনের মৃত্যু হয়। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এদিন মৃত্যু হয় ২০১ জনের। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৫৮৪ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৯২৩ জন। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩৭ হাজার ৯৭২ জনের। পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৭ হাজার ৫৮৭টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ০৪ শতাংশ। গত দুই দিনের তুলনায় শনাক্তের হার কিছুটা কমেছে। শুক্র ও শনিবারে দেশে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৩২ শতাংশের ওপরে। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৪ লাখ ৫৫ হাজার ২৮১টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেরই ৬৯ জন। এছাড়া খুলনায় ৫০, চট্টগ্রামে ৪০, রাজশাহীতে ২১, বরিশালে ৬, সিলেটে ১১, রংপুরে ১৬ এবং ময়মনসিংহে ১৫ জন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১২৫ জন পুরুষ এবং ১০৩ জন নারী। এদের মধ্যে ১৪ জন বাসায় মারা গেছেন। বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ১৯৯ জন এবং নারী ৬ হাজার ৭৫ জন। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১১১ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৫০, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৩৪, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২২, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৮, ১১ থেকে ২০ বছরের ২ এবং ১০ বছরের কম বয়সী ১ জন মারা গেছেন। এদিকে ঈদ-উল-আজহার ছুটিতে দেশে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা কম হয়েছে, তবে সংক্রমণের হার কমেনি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। রবিবার দুপুরে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডাঃ নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গত সাত দিনের সংক্রমণ পরিস্থিতির দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে নমুনা সংগ্রহ কম হয়েছে, সে হিসেবে পরীক্ষা হয়েছে কম। ফলে মোট রোগীর সংখ্যা কমেছে। তবে শতকরা হিসেবে সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশের নিচে নামেনি। বরং ২৪ জুলাই ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়েছে। ১৯ জুলাই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে ২৩১ জন। সবচেয়ে কম মারা গেছেন ২৩ জুলাই ১৬৬ জন। ২৯তম এপিডেমিক সপ্তাহে ২৪ জুলাই পর্যন্ত দুই লাখ দুই হাজার ১১৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় পরীক্ষার হার ২৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমেছে। ঈদের বন্ধের কারণে এই সংখ্যা কমতে পারে। তবে সুস্থতার হার ১৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। দেশে করোনার ডেল্টা ধরনের দাপটে দৈনিক সংক্রমণ এবং করোনায় মৃত্যু কয়েক গুণ বেড়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ দেশে সর্বাত্মক বিধিনিষেধ পালন করা হয়। এ সময় সব ধরনের অফিসের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। ২১ জুলাই ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে এই বিধিনিষেধ আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়। ঈদ-উল-আজহার ছুটি শেষে গত শুক্রবার থেকে ফের কঠোর বিধি-নিষেধে আরোপ করা হয়েছে সারাদেশে। আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে এই কঠোর বিধি-নিষেধ কর্মসূচী বাস্তবায়িত হবে। তবুও প্রায় ৫২ লাখ মানুষ ঈদে গ্রামে গিয়ে ফিরে না আসায় সারাদেশেই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
×