ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঈদ উৎসবে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় হাজারো মানুষের ঢল

প্রকাশিত: ১৬:১৬, ২২ জুলাই ২০২১

ঈদ উৎসবে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় হাজারো মানুষের ঢল

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ অতিমারী করোনায় মানুষের জীবনে আনন্দ উৎসব যেন থমকে গেছে। প্রকৃতির খোলা হাওয়ায় ঘুরে বেড়ানোও যেন মহাসংকট। গতকাল বুধবার কোরবানীর ঈদ পালিত হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে আগামী ৫ আগষ্ট পর্যন্ত শুরু হতে যাচ্ছে ২৩টি বিধিনিষেধ সহ কঠোর লকডাউন। তার আগে দলে দলে মানুষজন ছুটছে প্রকৃতির আলো বাতাসে ঘুরতে। আজ বৃহস্পতিবার ঈদের পর দিন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়াস্থ্য দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজে নেমেছে হাজারো প্রকৃতি প্রেমি মানুষের ঢল। পরিবার পরিজন নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে সকলেই। ওই এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট।শত শত উঠতি বয়সী যুবক তিস্তা নদীতে সাঁতার প্রতিযোগীতায় নেমেছে। করোনা কালীন সময়ে সরকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলে তিস্তা ব্যারেজে ঘুরতে আসা বিভিন্ন এলাকার নারী পুরুষরে মাস্ক পরিধানে কোন কিছুই মানা হয়নি। এদিকে আবার একটি চক্র তিস্তা ব্যারাজের অদুরে ঘাপটি মেরে ফরগুটি ও কাটা খেলার জুয়ার আসর বসিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে দিচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, উজানের ঢলে তিস্তায় চলছে উথাল পাতাল ঢেউ। তিস্তার পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় তিস্তার বুকে দ্রুত বেগে এক পাশ থেকে আরেক পাশে ছুটে চলছে ¯িপডবোট বা শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকা। জনপ্রতি দুইপাক ঘুরলেই ৫০ টাকা। আর এতেই সকলে মেতে উঠেছে আনন্দ উৎসবে। চোখে পরে ছোট বড়, শিশু কিশোর, তরুণ-তরুণী এমনকি বয়স্কো মানুষজনরা এই উৎসবে যোগ দিয়েছে। কেউ মিনি বাস, মোটরসাইকেল, কেউ মাইক্রোবাস আবার কেউ ইজিবাইকে করে ঘুরতে এসেছেন। কোন অনুমোদন ছাড়াই তিস্তা ব্যারাজ জুড়ে বসেছে অস্থায়ী বাজার। নানা রকম পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে দোকানগুলো। বিভিন্ন খেলনা, বাঁশি, বেলুন, মাটির তৈজসপত্র, খাবারের দোকান বসেছে। তিস্তা ব্যারাজের পুরো এলাকার সড়ক যানজোটে পরিনত হয়েছে। নীলফামারী, ডোমার, জলঢাকা, সৈয়দপুর, পঞ্চগড়, দেবীগঞ্জ, লালমনিরহাট, পাটগ্রাম, রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষে ভরে গেছে তিস্তাপাড়। করোনা ভাইরাসের কারণে ঘরবন্দি থেকে হাফিয়ে গেছেন তাই ঘুরতে এসেছেন বলে জানান মানুষজন। ঘুরতে আসা এসব মানুষ। উজানের ঢল থাকায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। ফলে তিস্তা পাড়ে দাঁড়ালে ব শোনা যায় পানির শোঁ শোঁ শব্দ । উজান থেকে নেমে আসা তিস্তা নদীকে ঘিরে দুইপাড়ের মানুষ গড়ে তুলেছে বসতি ও জীবিকা, নীল জল আর সবুজের রঙে প্রকৃতি একেছে শ্যামল ছবি। ফিরে এসেছে জীববৈচির্ত্য। দিনাজপুর থেকে ঘুরতে আসা রবিউল ইসলাম বলেন, দেশের সকল বিনোদন কেন্দ্রগুলো সরকার বন্ধ রাখায় ঈদের আনন্দে তিস্তা পাড়ে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটেছে। নাম প্রকাশ না করার শতে তিস্তা ব্যারেজের আনছার ক্যা¤েপর এক সদস্য জানান, বৃহ¯পতিবার দুপুরের পর ডালিয়া নতুন বাজার থেকে তিস্তা ব্যারেজের উত্তর সাধুর বাজার পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ আনসারসহ পাউবো কর্মকর্তারা কোনভাবেই মানুষজনের ঢল থামাতে পারছেনা। বেলা যতই বাড়ছে তিস্তা ব্যারেজে ঘুরতে আসা মানুশের ঢল ততই বাড়ছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকবে তিস্তার বুকে প্রকৃতির হাওয়ায় মানষজনের বিচরন এমন কথাই বললেন তিস্তা ব্যারাজ এলাকার খালিশাচাপানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান।
×