ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার জয় ১৩৩ রানে

প্রকাশিত: ১২:১২, ২১ জুলাই ২০২১

প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার জয় ১৩৩ রানে

অনলাইন ডেস্ক ॥ অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ওয়ানডে সিজির শুরু হয়েছে। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে অস্ট্রেলিয়ার জয় ১৩৩ রানে। বারবাডোজে মঙ্গলবার প্রথম ইনিংসের মাঝপথে নামা বৃষ্টিতে ম্যাচ নেমে আসে ৪৯ ওভারে। অস্ট্রেলিয়া তোলে ২৫২ রান। ডিএলএস পদ্ধতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৫৭। তারা গুটিয়ে যায় স্রেফ ১২৩ রানেই। নতুন বলে ৮ ওভারের ক্যারিবিয়ান ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন স্টার্ক ও হেইজেলউড। ২৭ রানে হারায় তারা ৬ উইকেট। স্টার্কের তখন ২৩ রানে উইকেট ৩টি, হেইজেলউডের বোলিং বিশ্লেষণ ৪-১-৩-৩! স্টার্ক পরের দিকে এক ওভারে নেন আরও দুই উইকেট। ওয়ানডেতে অষ্টমবার ৫ উইকেট শিকার করে ম্যান অব দা ম্যাচ তিনিই। ৬ ওভারের প্রথম স্পেলের পর হেইজেলউডকে আর প্রয়োজনই হয়নি। দুই অস্ট্রেলিয়ান পেসারের পারফরম্যান্সে আড়াল হয় যায় হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়রের বোলিং। ম্যাচের প্রথম ভাগে এই ক্যারিবিয়ান লেগ স্পিনার পান ওয়ানডেতে প্রথম ৫ উইকেটের স্বাদ। ওয়ার্নার-স্মিথ-ম্যাক্সওয়েল-কামিন্স-স্টয়নিসরা তো এই সফরেই আসেননি, ম্যাচের আগে ছিটকে যান অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চও। তবে অধিনায়কত্বের অভিষেকে ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন অ্যালেক্স কেয়ারি। ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ কঠিন উইকেটে তার ৬৭ রানের ইনিংস ম্যাচের সর্বোচ্চ। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেক হয় তিন জনের, দুই ব্যাটসম্যান জশ ফিলিপি, বেন ম্যাকডারমট ও পেসার ওয়েস অ্যাগার। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দলকে ভালো শুরু এনে দেন ফিলিপি ও ম্যাকডারমট। ৫১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন দুজন। ক্যারিয়ারে প্রথম ৫ উইকেটের স্বাদ পান হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র। ছবি: উইন্ডিজ ক্রিকেট।ক্যারিয়ারে প্রথম ৫ উইকেটের স্বাদ পান হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র। ছবি: উইন্ডিজ ক্রিকেট।বেশি শট খেলছিলেন যিনি, সেই ফিলিপির বিদায়ও হয় আগে। বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেনকে অযথা জায়গা বানিয়ে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৩৯ রান করে। তিনে নেমে মিচেল মার্শও আউট হন থিতু হয়ে। আকিল ফেরান চারে নামা মোইজেন হেনরিকেসকেও। ২৫ ওভারের বেশি উইকেটে কাটিয়ে ম্যাকডারমট আউট হন ৪৮ বলে ২৮ রান করে। অস্ট্রেলিয়ার রান তখন ৪ উইকেটে ১১৪। কেয়ারি ও অ্যাশটন টার্নারের জুটি সেখান থেকে টেনে নেয় দলকে। পঞ্চম উইকেটে ১০৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন দুজন। শেষদিকে যখন ঝড় তোলার পালা, তখন ৫ ওভারের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া হারায় ৫ উইকেট। সবকটিই নেন ওয়ালশ। শুরুটা হয় কেয়ারিকে দিয়ে। ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৮৭ বলে ৬৭ করে থামেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক। দেড় বছর পর ওয়ানডে খেলতে নেমে টার্নার আউট হন ৪৫ বলে ৪৯ রান করে। পরে আর দ্রুত রান তুলতে পারেন কেউ। ৭ ওভার শেষে একটি উইকেটও ছিল না ওয়ালশের। পরের তিন ওভারেই তিনি নেন ৫ উইকেট! অথচ ওয়ানডের জন্য আগে ঘোষিত দলে ছিলেন না এই লেগ স্পিনার। টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুর্দান্ত পারফর্ম করে পরে ঢুকে যান ওয়ানডে দলেও। দুই রকম গতির উইকেটে আড়াইশর বেশি রান তাড়া করা ছিল এমনিতেই চ্যালেঞ্জ। স্টার্ক ও হেইজেলউড তা করে তোলেন আরও কঠিন। ইনিংসের প্রথম বলেই স্টার্ক ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ফেরান এভিন লুইসকে। নিজের পরের ওভারে এই বাঁহাতি পেসার ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে উড়িয়ে দেন জেসন মোহাম্মদের স্টাম্প। কোনো রান করতে দেননি তিনি নিকোলাস পুরানকে। আরেক প্রান্তে হেইজেলউডের শিকার শিমরন হেটমায়ার, ড্যারেন ব্রাভো ও জেসন হোল্ডার। ব্যস, ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং প্রায় ধ্বংসস্তুপ। অ্যাডাম জ্যাম্পাকে পাল্টা আক্রমণে কাইরন পোলার্ড চেষ্টা করেন লড়ে যাওয়ার। ৪১ বলে ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক স্পর্শ করেন ফিফটি। তবে পুরনো বলে ফিরে এক ওভারেই স্টার্ক নেন পোলার্ড ও আকিল হোসেনের উইকেট। বিশাল ব্যবধানে জিতে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের ১০টি পয়েন্ট পায় অস্ট্রেলিয়া। এখন তার পয়েন্ট তালিকার তিনে, ৫০ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের পেছনে। ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছেন মিচেল স্টার্ক। সংক্ষিপ্ত স্কোর : অস্ট্রেলিয়া: ৪৯ ওভারে ২৫২/৯ (ফিলিপি ৩৯, ম্যাকডারমট ২৮, মার্শ ২০, হেনরিকেস ৭, কেয়ারি ৬৭, টার্নার ৪৯, ওয়েড ৩, স্টার্ক ৮, জ্যাম্পা ১২*, অ্যাগার ৯, হেইজেলউড ১*; কটরেল ৮-০-৪৫-০, হোল্ডার ৮-০-৪৯-০, আকিল ১০-১-৫০-২, জেসন ৩-০-২৫-০, জোসেফ ১০-০-৪০-২, ওয়ালশ ১০-০-৩৯-৫)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ: (লক্ষ্য ২৫৭) ২৬.২ ওভারে ১২৩ (লুইস ০, হেটমায়ার ১১, জেসন ২, ব্রাভো ২, পুরান ০, পোলার্ড ৫৬, হোল্ডার ০, জোসেফ ১৭, ওয়ালশ ২০, আকিল ০, কটরেল ৪*; স্টার্ক ৮-১-৪৫-১, হেইজেলউড ৬-১-১১-৩, জ্যাম্পা ৩.২-০-৩৯-১, অ্যাগার ৬-১-১৫-০, মার্শ ৩-০-৭-১)।
×