অনলাইন ডেস্ক ॥ এক মাসে ২০ লাখ ভারতীয় স্প্যাম অ্যাকাউন্ট ব্লক করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। ভারতের নতুন তথ্য প্রযুক্তি আইন মেনে প্রথমবারের মতো স্বচ্ছতা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে মেসেজিং অ্যাপটির পক্ষ থেকে। আর তাতেই বেরিয়ে এসেছে এই তথ্য।
ভারতের নতুন তথ্য প্রযুক্তি আইন কার্যকর হয়েছে চলতি বছরের মে মাস থেকে। নতুন এই আইন অনুযায়ী, প্রতি মাসেই স্বচ্ছতা প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে সোশাল মিডিয়া ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে। আর এতে উল্লেখ থাকতে হবে প্রতি মাসে পাওয়া অভিযোগের সংখ্যা এবং তার বিপরীতে প্রতিষ্ঠানগুলোর পদক্ষেপের বিস্তারিত। এ ছাড়াও, বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্টের উপর নজরদারি এবং আইনি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্রুত পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে স্থানীয় কর্মীদের নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে নতুন আইনে।
সোশাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেইসবুকের মালিকানাধীন মেসেজিং অ্যাপটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ১৫ মে থেকে ১৫ জুনের মধ্যে ব্লক হওয়া ২০ লাখ ভারতীয় অ্যাকাউন্টের মধ্যে ৯৫ শতাংশ ব্লক করা হয়েছে “অটোমেটেড বাল্ক মেসেজিং”-এর কারণে।
হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রযুক্তিগত আধুনিকায়নের কারণে এই সংখ্যা (ব্লক করা স্প্যাম অ্যাকাউন্ট) ২০১৯ থেকে অনেক বেড়েছে। মনে রাখতে হবে যে, নিষিদ্ধ হওয়া এই অ্যাকাউন্টগুলোর একটা বড় অংশ আমরা ব্লক করে দেই নিজ উদ্যোগে, ব্যবহারকারীদের কোনো অভিযোগ ছাড়াই।
২০১৮ সালে ভাইরাল হওয়া ভুয়া খবরের জের ধরে স্থানীয়দের মধ্যে সহিংসতার ঘটনায় প্রথমবারের মতো ভারতে প্রশ্নবিদ্ধ হয় মেসেজিং অ্যাপ হিসেবে হোয়াটসঅ্যাপের ভূমিকা।
হোয়াটসঅ্যাপের বিবৃতি অনুযায়ী, প্রতি মাসে বিশ্বব্যাপী গড়ে ৮০ লাখ অ্যাকাউন্ট ব্লক করে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে ভারত প্রতিষ্ঠানটির সবথেকে বড় বাজার; ৪০ কোটি ভারতীয় ব্যবহার করেন মেসেজিং অ্যাপটি।
অন্যদিকে, নতুন আইনের বেশিরভাগ ধারা নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপের কোনো আপত্তি না থাকলেও, নির্দিষ্ট একটি ধারা নিয়ে ভারতীয় সরকারের বিপরীতে আদালতে মামলা করে বসেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রয়োজন হলে কোনো মেসেজ সর্বপ্রথম কে লিখেছিলেন বা শেয়ার করেছেন, সেই ব্যক্তিকেও খুঁজে দিতে হবে বলে নতুন আইনে দাবি করেছিলো ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রেই কার্যকর হবে এই ধারা। কিন্তু বিপরীতে হোয়াটসঅ্যাপের দাবি, এমনটা করা হলে গ্রাহকদের ব্যক্তিস্বাধীনতা ও গোপনতা রক্ষা করা সম্ভব হবে না, ব্যবহারকারীদের সব মেসেজ ট্র্যাক করতে বাধ্য হবে প্রতিষ্ঠানটি।
“মেসেজিং অ্যাপগুলোকে সব চ্যাট ট্র্যাক করতে বলার মানে হলো হোয়াটসঅ্যাপ থেকে পাঠানো সব মেসেজের আঙ্গুলের ছাপ রাখতে বলার সমান। এতে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সেবা ভেঙ্গে পড়বে, খণ্ড হবে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত গোপনতা রক্ষার মৌলিক অধিকার”-- মে মাসে আদালতে মামলা করার সময় এমনটাই বলেন এক হোয়াটসঅ্যাপ মুখপাত্র।
শীর্ষ সংবাদ: