ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অভিযোগকারীর পরিচয় নিশ্চিত হতে হাইকোর্টের ৫ দফা নির্দেশনা

প্রকাশিত: ০০:০২, ২৫ জুন ২০২১

অভিযোগকারীর পরিচয় নিশ্চিত হতে হাইকোর্টের ৫ দফা নির্দেশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভুয়া পরোয়ানা, মামলায় হয়রানি বন্ধে থানা, আদালত বা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের সময় অভিযোগকারী পরিচয় যথাযথভাবে নিশ্চিত হতে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, রুল জারি করে ৬০ দিনের মধ্যে যেসব মামলায় বাদীর অস্তিত্ব নেই সেসব মামলা দায়েরের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত ও প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রতিবেদন দিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক ও সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলা করার সময় বাদীর এনআইডি নম্বরও দিতে হবে। আদেশটি প্রতিপালনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ‘অস্তিত্বহীন’ বাদীর মামলা চ্যালেঞ্জ করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৪ জুন রুলসহ এসব নির্দেশনা দেয়। পূর্ণাঙ্গ আদেশটি সুপ্রীমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। হাইকোটের পাঁচ নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে (১) অভিযোগ/এজাহারে অভিযোগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর, ক্ষেত্রমতে পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করতে হবে। (২) এজাহারকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে সে ক্ষেত্রে এজাহারকারীকে শনাক্তকারী ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করতে হবে। (৩) বিশেষ বাস্তব পরিস্থিতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট নম্বর লভ্য (এ্যাভেইলেবল) না হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা এজাহারকারীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য স্বীয় বিবেচনায় অন্যান্য যথাযথ পদ্ধতি গ্রহণ করবেন। (৪) আদালত কিংবা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিলের ক্ষেত্রে অভিযোগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট না থাকলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী অভিযোগকারীকে শনাক্ত করবেন। (৫) অভিযোগকারী প্রবাসী কিংবা বিদেশী নাগরিক হলে সংশ্লিষ্ট দেশের পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করতে হবে। ধর্ষণ, মারধর, চুরি, মানব পাচার- এমন সব অভিযোগে দেশের ১৩টি জেলায় করা ২০টি মামলার চক্করে রাজধানীর শান্তিবাগের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী একরামুল আহসানকে ২ হাজার ৪৬৫ দিন কারাভোগ করতে হয়। এ অবস্থায় ওই সব মামলা ‘মিথ্যা’ উল্লেখ করে মামলা দায়েরে সম্পৃক্ত বা বাদীকে খুঁজে বের করতে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে গত ৭ জুন হাইকোর্টে রিট করেন ৫৫ বছর বয়সী একরামুল আহসান কাঞ্চন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৪ জুন হাইকোর্ট রুল জারিসহ আদেশ দেয়। রিট আবেদনকারীর (একরামুল) বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক ওই সব মামলা দায়েরে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেয়া হয়। সেই সঙ্গে মামলা বা অভিযোগ দায়েরের ক্ষেত্রে বাদীর পরিচয় নিশ্চিতে কয়েক দফা নির্দেশনা প্রদান করে হাইকোর্ট। আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও আইনজীবী এমাদুল হক বশির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় ও বিপুল বাগমার, সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও মোঃ সোলায়মান। মারধর, প্রতারণা, চুরি, এসিড নিক্ষেপ, মানব পাচার, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে ১৩টি জেলায় একরামুলের বিরুদ্ধে ৪৯টি মামলা হয় বলে জানান তার আইনজীবী এমাদুল হক বশির। তিনি বলেন, ‘এসব মামলার মধ্যে কোনটিতে বাদীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
×