ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নারী ও শিশু পাচারে জড়িতরা কেউ ছাড় পাবে না

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ২৫ জুন ২০২১

নারী ও শিশু পাচারে জড়িতরা কেউ ছাড় পাবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলাম বলেছেন, নারী ও শিশু পাচারে জড়িত কেউ কোনভাবে ছাড় পাবে না। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর গুলশানে সীমান্ত ব্যাংকের ১৯তম শাখার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, নারী-শিশু পাচার ও মাদকের বিরুদ্ধে বিজিবির জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। এসব বিষয়ে কারও কোন সুপারিশ বিজিবি পাত্তা দেয় না। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরায় নারী পাচারের অভিযোগে একজন নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলরের স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়। ওই নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে ধরতে আমরা প্রতিদিনই তার বাসায় হানা দিই কিন্তু তিনি বাসায় নেই। এ বিষয়ে পুলিশকেও জানিয়েছি। পুলিশ-বিজিবি একই মন্ত্রণালয়ের কাজ করে। পরস্পরের সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষাসহ সীমান্তেও আমরা কাজ করছি। মে মাসের শেষে ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে বাংলাদেশী এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে নারী পাচারের নতুন নতুন তথ্য আসতে শুরু করে। পুলিশ বলছে, পাচারকারীদের একটি চক্রকে তারা চিহ্নিত করেছে, যারা ইতোমধ্যে সহস্রাধিক নারীকে ভারতে পাচার করেছে। নারী ও শিশু পাচার বন্ধে গণমাধ্যম এবং জনগণের সহযোগিতা চেয়ে বিজিবি মহাপরিচালক জানান, নারী পাচার রোধে মিডিয়ার একটি বড় ভ‚মিকা রয়েছে। এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। কেউ যেন প্রলোভনে পড়ে পাচারের শিকার না হন, সেদিকে সমাজের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। মিডিয়া ও জনগণের সহযোগিতা ছাড়া বিজিবি একার পক্ষে পাচার রোধ করা সম্ভব নয়। বিজিবি মহাপরিচালক জানান, গত এক মাসে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত, সাতক্ষীরা সীমান্ত ও চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত থেকে ৩০০ জনকে অবৈধ পারাপারের অপরাধে ধরা হয়েছে এবং তাদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন শেষে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে রোহিঙ্গারা আসছে। গতকাল রাতেও তিনজন রোহিঙ্গা নৌকায় করে এসেছিল। পরে তাদের আবার রাতেই মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সীমান্তে করোনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা সম্পর্কে বিজিবি ডিজি জানান, সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশীরা এলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক। তাদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিজিবিও কাজ করছে। মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলাম জানান, এখন বাংলাদেশের সীমান্ত ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার। আমাদের একটি বিওপি থেকে আরেকটি বিওপির দূরত্ব ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার। বিওপিতে টহল দল থাকে, তারপরও শতভাগ সম্ভব হয়ে ওঠে না। বিজিবিতে কতজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিবি ডিজি জানান, বিজিবিতে ৬৫ হাজারের বেশি সদস্য রয়েছেন। তারা প্রতিনিয়ত সীমান্তে কাজ করছেন। বিজিবি সদস্যরা স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলেন। গতকাল বুধবার পর্যন্ত আক্রান্তের হার এক শতাংশে পৌঁছেছে। আগে আক্রান্তের হার ছিল দশমিক ৭০ শতাংশ। সীমান্ত ব্যাংকের শাখা উদ্বোধনের সময় বিজিবি প্রধান জানান, পর্যায়ক্রমে ব্যাংকিং সেবা সীমান্তে পৌঁছে দেয়া হবে। বিজিবির সদস্যরা সহজ শর্তে ঋণ পেয়ে থাকেন। সদস্যদের সন্তানদের পড়াশোনা শেষে ব্যাংকে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়। সীমান্ত ব্যাংক ইতোমধ্যে ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, আরটিজিএস, বিএফটিএন এবং রেমিটেন্স সেবাসহ বিভিন্ন সেবা চালু করেছে বলে জানান বিজিবির মহাপরিচালক।
×