ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কবিতা

প্রকাশিত: ২২:১৬, ২৫ জুন ২০২১

কবিতা

প্রিয় রোকোনালী মাকিদ হায়দার [কবি, আদ্যনাথ ঘোষ, প্রীতিভাজন] আপনারা সকলেই ভীষণ অকৃতজ্ঞ বাঙালীরা যে অকৃতজ্ঞ, এ কথা নূতন করে বলার কিছুই নেই। সেই মীরজাফর থেকে আরও অনেকেই। আমার প্রিয় মাতুল রোকোনালী বেশ কিছুদিন অসুখে বিসুখে নাজেহাল কখন কি যে হয়, এই নিয়ে ভীষণ চিন্তায় আছি ঘুম নেই, সারারাত জেগে থাকি মাতুলের পাশে। আর তখন মনে হয় প্রিয় মাতুল আমার পূর্ব পাকিস্তান উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন মধ্যপ্রাচ্যে। জুলফিকার আলী ভুট্টো নাকি বলেছিলো পূর্ব পাকিস্তান যদি উদ্ধার করে দিতে পারেন প্রিয় রোকোনালী, আমি আপনাকে বানিয়ে দেবো সোনার পাকিস্তানের জাতির পিতা, এক মুহূর্তে মুছে দেবো মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর নাম। উদ্ধার কর্মটি সম্পন্ন করতে হবে মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে মাতুল আমার রাজা বাদশার আদরে ভালোই ছিলেন, হঠাৎ একদিন কে বা কারা জানালো প্রিয় মাতুলকে। আপনার মাতা ভীষণ অসুস্থ। যে কোন মুহূর্তে... মাতুল সেই রাতেই পাকিস্তানী পাসপোর্ট হাতে উড়ে এলেন তার হারানো পূর্ব পাকিস্তানে। আজ কিছুদিন প্রিয় রোকোনালাীর শ্বাসনালীতে ক্যান্সার হয়েছে পাড়া প্রতিবেশী জেনেও মাতুলকে কেউ দেখতে এলেন না মাতুল কষ্টে সৃষ্টে জানাল বাঙালী জাতিটাই অকৃতজ্ঞ। ** ধারাজল বিমল গুহ ধারাজল কলকল প্রবাহের নাম; পরিশুদ্ধ ধারাজলে ডুব দিই রোজ বোধিমূল হেসে ওঠে- হেসে ওঠে অভ্যন্তরে জমে-থাকা ফেনা, অন্তর্প্রবাহে নিত্য নিমজ্জিত হই তবুও কি ধারাজল আমাকে চেনে না? জলের সঙ্গী হয় স্মৃতি হয়ে ভেসে ওঠে মেঘের আস্তিন; অবিশ্রান্ত ধারাজল বলে বার বার- আজ আষাঢ়ের দিন! ধারাজল কলকল প্রবাহের নাম; জলের গভীরে যাই- দিতে চাই সব চোরাস্রোত যতটুকু পারে তুলে নিতে, খুলে যায় বল্কল জোছনা ছলকে ওঠে অবাধ্য শ্রোণিতে। বাহ্যত মিহিঢেউ অভ্যন্তরে লুব্ধ¯্রােতধারা, স্মৃতিমেঘ কিছু জানে আরও জানে নক্ষত্রমণ্ডল- কেবল তারাই বোঝে শোণিতের প্রকৃত ইশারা। ** আজ মন পূর্ণতার পায়ে মারুফ রায়হান রোদে কষ্ট পাচ্ছে যে গাছটি সে-ও জানে ছায়া দিতে তার মেঘ আছে, আর সূর্যও সরে যাবে ঠিক সন্ধেবেলা তবু কাল ফের দগ্ধ হবে আমাকেই দিতে শ্বাসের বাতাস এক জীবনে আমার গাছ হওয়া হলো না। কার্নিশে পাখির মেলা, নান্দনিক চঞ্চলতা আর কী বিচিত্র সব স্বর মিষ্টি সুর আমার ভাবনা ওড়ে তার পাখনায় মেঘ ছুয়ে ফেরে ফের নতুন ভাবনা দিতে স্বর্গ রচে দেয় খাঁ খাঁ শূন্যতায় আমি দিই কিছু? দেবার সাধ্য নাই। এই যে দিনভর মন ভেজানো বৃষ্টি ঝরিয়ে চলেছে অজস্র কবিতার বীজ এবং সুপেয় শুদ্ধ সঞ্জীবনী তার এক বিন্দু প্রতিদান দেবে দর্পিত মানুষ? লজ্জিত থাকা তাই, কৃতজ্ঞ থাকি পূর্ণতার পায়ে মন জমা রাখি।
×