ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

এ পর্যন্ত জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১৫৫ জনের রংপুর বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে শনাক্ত, শনাক্ত হওয়া ২৬৬ জনের মধ্যে দিনাজপুর জেলার ১৪১

কঠোর লকডাউনেও দিনাজপুরে করোনায় মৃত্যু বাড়ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৪৮.৭৮

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ২৪ জুন ২০২১

কঠোর লকডাউনেও দিনাজপুরে করোনায় মৃত্যু বাড়ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৪৮.৭৮

অনলাইন ডেস্ক ॥ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দিনাজপুর সদর উপজেলায় দ্বিতীয় দফার চলমান কঠোর লকডাউনেও দিনাজপুরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। চলতি মাসের শুরু থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের। এর মধ্যে ২৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। করোনার উপসর্গ নিয়ে বাকি ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন আবদুল কুদ্দুস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জেলায় গত মে মাসে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৮। এর আগে এপ্রিলে আটজন ও মার্চে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে বুধবার সকাল আটটা পয৴ন্ত ২৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৪১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে ৪৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ। জেলায় এটিই সর্বোচ্চ শনাক্তের হার। বুধবার করোনা আক্রান্ত ১৪১ জনসহ দিনাজপুর জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৭৩১৭ জন, ৪৭ জনসহ জেলায় এ পর্যন্ত সুস্থ ৫৯২৭ জন। এ পর্যন্ত জেলায় মৃত্যু ১৫৫ জন। বর্তমানে ১১৮২ জন হোম আইসোলেশনে এবং হাসপাতালে ভর্তি ৯৮ জন রয়েছে। বর্তমানে দিনাজপুর জেলায় করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ১২৩৫ জন এবং শনাক্তের হার ৪৮.৭৮ শতাংশ। এর আগে সোমবার সকাল আটটা থেকে মঙ্গলবার সকাল আটটাপ য৴ন্ত দিনাজপুর সদর উপজেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৭১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ হার প্রায় ৬২ শতাংশ। দুইজন মারা গেছেন। ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২৫০ টি নমুনা পরীক্ষায় ১১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ হার ৪৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১৫৫ জনের। এখন পর্যন্ত জেলায় ৪৪ হাজার ৮৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭ হাজার ৩১৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় শনাক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ২৫৪ জন। বর্তমানে জেলায় মোট রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ২৩৫। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৯৮ জন। অবশিষ্টরা হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন। চলতি মাসের ২৩ দিনে ৪ হাজার ৪৮২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৫১১ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন, যেখানে পুরো মে মাসে ২ হাজার ৮৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত ছিল ৪১৩ জন। সিভিল সার্জন আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় নমুনা পরীক্ষাও বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি পিসিআর ল্যাবে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা রয়েছে। এর বাইরে কিছু নমুনা ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। এদিকে এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে আরও একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। এদিকে সংক্রমণ ঠেকাতে দিনাজপুর সদর উপজেলায় দ্বিতীয় দফার লকডাউন চলছে। এর আগে ১৫ জুন হতে ২১ জুন রাত পর্যন্ত এক সপ্তাহের লকডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি। সংক্রমণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় লকডাউনের সময়সীমা ২৮ জুন সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। দিনাজপুর সদর উপজেলায় কঠোর লকডাউনে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছে মানুষ। তবে চলাচল সীমিত করতে শহরের বিভিন্ন সড়কে বাঁশ বেঁধে দিয়ে গতিরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন স্থানে বসেছে পুলিশের চৌকি। এরপরেও শহরে চলছে পর্যাপ্ত অটোরিক্সসহ বিভিন্ন যানবাহন। উল্লেখ্য, রংপুর বিভাগে করোনায় ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৬৬ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়, যাতে করোনা শনাক্ত হয় ২৬৬ জনের। এ নিয়ে বিভাগে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২২ হাজার ৬১৯ জনের। অন্যদিকে এ বিভাগে করোনার সংক্রমণে মারা গেছেন ৪৬৭ জন। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬২ জন। বুধবার রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আবু মো. জাকিরুল ইসলামের পাঠানো প্রতিবেদন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭৪০ জনের। শনাক্ত হওয়া ২৬৬ জনের মধ্যে দিনাজপুর জেলার ১৪১, ঠাকুরগাঁয়ের ৫৩, নীলফামারীর ১০, পঞ্চগড়ের ৫, কুড়িগ্রামের ২১, লালমনিরহাটের ১০, গাইবান্ধার ১০ ও রংপুরের ১৬ জন। বিভাগে করোনার সংক্রমণে মারা যাওয়া ৪৬৭ জনের মধ্যে দিনাজপুর জেলার ১৭০, রংপুরের ১০৭, ঠাকুরগাঁয়ের ৬২, পঞ্চগড়ের ২১, নীলফামারীর ৩৮, লালমনিরহাটের ১৯, কুড়িগ্রামের ২৭ ও গাইবান্ধার ২৩ জন। রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আবু মো. জাকিরুল ইসলাম এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
×