ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই পুলিশ গ্রেফতার

প্রকাশিত: ২৩:০৭, ২৪ জুন ২০২১

চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই পুলিশ গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে সূত্রাপুর থানার দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, এসআই রহমাত উল্লাহ ও এএসআই রফিকুল ইসলাম। ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোঃ আবদুল আহাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জনকণ্ঠকে জানান, অন্যায়কারী পুলিশ হোক আর যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পল্টন থানা ওসি আবু বকর সিদ্দিক জনকণ্ঠকে জানান, ভুক্তভোগী নাজমুল হক সুমন পল্টন থানায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। গত ২০ জুন পল্টন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেন্টু মিয়ার নেতৃত্বে একটি দল সূত্রাপুর থানায় গিয়ে রহমাত উল্লাহ ও রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাদের দুদিনের রিমান্ড নেয়া হয়েছে। পল্টন থানা পুলিশ জানায়, একজন মাদক কারবারিকে আটকের কথা বলে সূত্রাপুরের দুই পুলিশ শান্তিনগরে আসেন। কিন্তু তারা তাকে না ধরে সামারি করে চলে যান। তবে মামলায় মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে টাকা আদায়ের ঘটনায় প্রথমে দুজন সাধারণ ব্যক্তির নাম পাওয়া যায়। পরে তাদের গ্রেফতার করা হলে দুজন পুলিশ সদস্যের নাম জানান তারা। এরপরই রহমাত উল্লাহ ও রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ফরহাদ হোসেন ও হাসিব হাসান শোভন নামে আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। ভুক্তভোগী নাজমুল হকের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, তার বাসা শান্তিনগরের ইস্টার্ন পিস ভবনে। সেখানে গত ১৪ জুন রাত ৯টার দিকে সাদা পোশাকে দুজন তাদের বাসার দরজায় নক করেন। ভেতর থেকে সুমনের বাবা দরজা খুলে দিলে নিজেদের ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করেন তারা। তারা সুমনের রুমে যান। এরপর রুমের আলমারি, ওয়্যারড্রোব, বিছানা ওলট-পালট করেন। তাদের মধ্যে একজন পকেট থেকে ইয়াবার মতো দেখতে কিছু ট্যাবলেট সুমনের রুমের টেবিলের ওপরে রাখেন। আর সুমন ইয়াবার ব্যবসা করেন বলে হুমকি-ধমকি দেন। ‘বাঁচতে চাইলে’ তাদেরকে টাকা দিতে হবে বলে জানান তারা। সুমন উপায় না দেখে তার কাছে থাকা ৫৫ হাজার টাকা দিয়ে দেন। এ সময় ডিবি পরিচয় দেয়া একজন সুমনের মোবাইল ফোন হাত থেকে কেড়ে নিয়ে তার পরিচিত ফরহাদকে বাসায় আসতে বলেন। ফরহাদ রাত ১১টার দিকে সুমনের বাসায় যান। বাসায় যাওয়ার পর ডিবি পুলিশের একজন ফরহাদের হাতে হাতকড়া পরান। এ সময় তারা বলেন, ফরহাদকে ছাড়াতে হলে তার মোটরসাইকেলটি দিয়ে দিতে হবে। পরে ১ লাখ টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে আসতে হবে। পরিচিত বিবেচনায় টাকা দেয়ার শর্তে তারা ফরহাদকে ছেড়ে দেন। যাওয়ার সময় কোন ধরনের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ না করার জন্য সতর্ক করেন। ফরহাদের মোটরসাইকেলটি নিয়ে যান তারা। ফরহাদ ও শোভন গত ১৬ জুন বেলা ১১টায় সুমনের বাসায় আসেন। শোভন মোটরসাইকেলটি ছাড়িয়ে আনার জন্য সুমনকে চাপ দেন। ফরহাদ এ সময় ডিবি পরিচয় দেয়া দুজনের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কথা বলেন এবং সুমনের সঙ্গে ফোনে ধরিয়ে দিলে তারা সুমনকে জানান, ১ লাখ টাকা পেলে তারা মোটরসাইকেল দিয়ে দেবেন। তখনও তারা বিকল্প কোন ব্যবস্থা নিতে নিষেধ করেন। পরে সুমন বুঝতে পারেন, ফরহাদ, শোভন ও ডিবি পরিচয় দেয়া দুজন যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ জানান, দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পল্টন থানা পুলিশ। এ বিষয়ে পল্টন থানা বিস্তারিত বলতে পারবে।
×