ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শাজাহানপুরের বান্ধবীকে ভিডিও কল দিয়ে তরুণীর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ২১:৩৪, ২৩ জুন ২০২১

শাজাহানপুরের বান্ধবীকে ভিডিও কল দিয়ে তরুণীর আত্মহত্যা

অনলাইন রিপোর্টার ॥ রাজধানীর শাজাহানপুরের গুলবাগ এলাকায় বান্ধবীকে ভিডিও কল দিয়ে এক তরুণী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে তার স্বজনরা জানিয়েছেন। আত্মহননকারী রুবিনা ইয়াসমিন নদী (২১) রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ছিলেন। বুধবার (২৩ জুন) বিকালে এ ঘটনা ঘটে। রুবিনা ইয়াসমিন নদীর গ্রামের বাড়ি বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলায়। তার বাবা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বর্তমানে বরিশালের আগৈলঝারা থানায় কর্মরত। রুবিনা বর্তমানে শাজাহানপুর থানার মালিবাগে ৩৯১ নম্বর গুলবাগের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে বান্ধবীকে নিয়ে সাবলেট থাকতেন। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। দুই বান্ধবী পড়াশোনার পাশাপাশি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। নদীর রুমমেট মারিয়াম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। মারিয়াম বলেন, ‘রুবিনা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে পড়াশোনা করতো। সেখানে একই বিভাগের সায়েম নামে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্কের পর তারা বিয়ে করেন ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর /অক্টোবরে। বিয়ের তিন মাসের মাথায় ছেলের চরিত্রগত কারণে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।’ রুবিনার খালাতো বোন শরিফা সুলতানা বলেন, ‘ওই ছেলের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পরও বিভিন্ন সময় রুবিনার বান্ধবী মারিয়ামের ফোনে সায়েম তাদের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও পাঠাতো। মারিয়াম তা রুবিনাকে দেখাতো। পরে তা ডিলিট করে দিয়েছিল। এসব নিয়ে সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে থাকতো।’ শরিফা সুলতানার দাবি, ওই ছেলেটার (সায়েম) এসবের কারণেই সে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। রুবিনার বান্ধবী মারিয়ম আরও বলেন, ‘‘রুবিনা আজ কাজে যায়নি। আমি কাজে চলে যাই। বিকাল ৩টার সময় ফোন করে সে জানায়— ‘আমার ভালো লাগছে না, তুই দ্রুত চলে আয়, আমি মরে যাবো।’ পরে ভিডিও কলে সে দেখায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেচাচ্ছিল।’’ তিনি বলেন, ‘পরে দ্রুত চলে যাই, গিয়ে দেখি ভেতর দিয়ে দরজা বন্ধ। ডাকাডাকি করে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে আশপাশের লোকজনের সহযোগিতায় ছিটকানি ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করি। এরপর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মৃত বলে জানান।’ ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তের জন্য রুবিনার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’ ঢামেক হাসপাতালে ডিএমপি সবুজবাগ জোনের এসি মনতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনা শুনে এসেছি। প্রাথমিকভাবে শুনেছি, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে আত্মহত্যা না অন্যকিছু, তা তদন্তসাপেক্ষে বলা যাবে।’
×