ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাগেরহাটে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা

প্রকাশিত: ২০:৫৭, ২৩ জুন ২০২১

বাগেরহাটে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ করোনা সংক্রমণ আশঙ্কাজন বেড়ে যাওয়ায় বাগেরহাটে ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে জেলা করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা মনিটরিং কমিটির জরুরি ভার্চুয়াল সভা শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ আজিজুর রহমান এ ঘোষণা দেন। সভায় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন, গণমাধ্যম কর্মী, চেম্বার অব কমার্স, বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্টানের প্রতিনিধি-সহ যুক্ত সকলের সর্বসন্মত মতামতের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সকাল ৬ টা থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউন আগামী ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। লকডাউনের ফলে বাগেরহাটে গণ পরিবহন বন্ধ থাকবে। এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় লোকজনের চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে কৃষি পন্য পরিবহন ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীরা এর আওতামুক্ত থাকবে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ আজিজুর রহমান বলেন, জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করোনা প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউন ৩০ জুন মধ্য রাত পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। কেউ লকডাউন না মানলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে বুধবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘গণ বিজ্ঞপ্তি’ জারি করে বলা হয়, বিধি-নিষেধ চলাকালীন সকল ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে সরকারি, আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিসেবা, যেমন-কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানী, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (নদীবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সংঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এবং পণ্যবাহী ট্রাক/লরি এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভুত থাকবে। ঔষধের দোকান ব্যতীত সকল ধরনের দোকানপাট, মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ থাকবে। এছাড়া সাপ্তাহিক হাট ও গরুর হাট বন্ধ থাকবে। কাঁচাবাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় (মুদিখানা) পণ্যের দোকানপাট, খাবারের দোকান ও হোটেল রেস্তোরাঁ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সকাল ০৮-০০ টা থেকে বিকাল ৩-০০ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে খাবারের দোকান ও হোটেল রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয়/ সরবরাহ করা যাবে। হোটেলে/খাবার দোকানে বসে খাওয়া যাবে না। সকল পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান (ওয়ালিমা), জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি), রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কাঁচা বাজার জনাকীর্ণ স্থান হতে খোলা জায়গায় স্থানান্তর করতে হবে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাগণ যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করে তা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জুম্মার নামাজসহ প্রতি ওয়াক্ত নামাজে ২০ জনের অতিরিক্ত মুসল্লি অংশগ্রহণ করা যাবে না। তাছাড়া একজন মুসল্লী হতে অন্য মুসল্লীর মধ্যে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। অন্যান্য ধর্মীয় উপসনালয়েও অনুরূপ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে উপাসনা করতে পারবেন। বিভিন্ন দেশ থেকে মোংলা বন্দরে আগত পশুর নদীতে অবস্থানকারী কোন জাহাজ হতে কোন ব্যক্তি মোংলা বন্দরে নামতে পারবে না। জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ আজিজুর রহমান বলেন, সমন্বিত সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে করোনা সংক্রমন প্রবিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। সকলকে স্বাস্থ্যবিধি ও লকডাউনের বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য তিনি আহব্বান জানান। এদিকে, বাগেরহাটে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে মারা গেছে তিনজন।
×