ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার ৭১ ও চট্টগ্রামের ৫৫ ভাগ মানুষের শরীরে এ্যান্টিবডি

প্রকাশিত: ২২:৫১, ২৩ জুন ২০২১

ঢাকার ৭১ ও চট্টগ্রামের ৫৫ ভাগ মানুষের শরীরে এ্যান্টিবডি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানী ঢাকায় ৭১ শতাংশ ও চট্টগ্রামে ৫৫ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনার এ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) এ তথ্য জানিয়েছে। ৩ হাজার ২২০ জনের মধ্যে পাঁচ মাসের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ও আইসিডিডিআর,বি’র যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল ওয়েবিনারে এই তথ্য জানানো হয়েছে। গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যমতে, বয়স্ক ও তরুণদের এ্যান্টিবডির হার (সেরোপজিটিভিটি) প্রায় সমান। নারীদের মধ্যে এ্যান্টিবডির হার ৭০.৬ শতাংশ। পুরুষদের এ্যান্টিবডির হার ৬৬ শতাংশ। যেসব অংশগ্রহণকারী ব্যক্তির (মোট ২২০৯) মধ্যে এ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে শুধু ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশের ক্ষেত্রে মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। করোনা সংক্রমণের বিস্তার নির্ণয়ের জন্য ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারি মাসের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তি এবং বস্তিসংলগ্ন এলাকায় এই গবেষণা করা হয়। এসব এলাকায় বসবাসকারী করোনার উপসর্গযুক্ত ও উপসর্গহীন ব্যক্তিদের ওপর এ গবেষণা করা হয়। জানা গেছে, আইসিডিডিআর,বি সম্প্রতি সার্স-কোভ-২ সংক্রমণের বিস্তার নির্ণয়ের জন্য একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। গবেষণাটি ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তি এবং বস্তিসংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী সার্স-কোভ-২ এর উপসর্গযুক্ত এবং উপসর্গহীন ব্যক্তিদের ওপর করা হয়েছে। এই সমীক্ষার মাধ্যমে সেরোপজিটিভিটি (রক্তে সার্স-কোভ-২ এর উপস্থিতি) সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ফরেন কমনওয়েলথ এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) এবং ইউনাইডেট নেশন্স পপুলেশন ফান্ড (ইউএনএফপিএ); বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ এই গবেষণায় এ্যাডভোকেসি পার্টনার হিসেবে কাজ করেছে। বস্তি এবং বস্তির বাইরে বসবাসকারীদের রক্তে কভিড-১৯ এর উপস্থিতি এবং তার সম্ভাব্য কারণ নির্ণয় করার জন্য এই গবেষণা করা হয়েছে। শরীরে শ্বাসকষ্টজনিত অন্য কোন ভাইরাসের উপস্থিতি, পুষ্টিগত অবস্থা (যেমন- ভিটামিন ডি, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম) এবং রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতার মতো কারণগুলোও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। সমীক্ষাটি ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারি সময়ের মধ্যে পরিচালনা করা হয়। এটি ঢাকা এবং চট্টগ্রাম শহরে বস্তি এবং বস্তিসংলগ্ন বাইরের এলাকায় বসবাসকারী মোট ৩ হাজার ২২০ জনের মধ্যে একটি আন্তঃবিভাগীয় গবেষণা হিসেবে পরিচালনা করা হয়। গবেষণায় গৃহস্থালী পর্যায়ে সাক্ষাতকার গ্রহণ, রক্তচাপ ও শরীরের পুষ্টি পরিমাপ এবং রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গবেষণার তথ্যানুসারে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে চট্টগ্রামের তুলনায় ঢাকায় সেরোপজিটিভিটির হার বেশি। ঢাকায় যেটি ৭১ শতাংশ, চট্টগ্রামে তা ৫৫ শতাংশ। বয়স্ক ও তরুণদের সেরোপজিটিভিটির হার প্রায় সমান। মহিলাদের মধ্যে সেরোপজিটিভিটির হার ৭০.৬ শতাংশ যা পুরুষদের (৬৬ শতাংশ) তুলনায় বেশি। যেসব অংশগ্রহণকারীর (মোট ২২০৯) মধ্যে সেরোপজিটিভিটি পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে শুধু ৩৫.৫ শতাংশের ক্ষেত্রে মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। স্বল্পশিক্ষিত, অধিক ওজন, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রয়েছে যাদের তাদের মধ্যে অধিক মাত্রায় সেরোপ্রিভেলেন্স (রক্তে কোভিড উপস্থিতির হার) দেখা গিয়েছে। বারবার হাত ধোয়ার প্রবণতা, নাক-মুখ কম স্পর্শ করা, বিসিজি টিকা গ্রহণ এবং মাঝারি ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করা ব্যক্তিদের মধ্যে কমমাত্রার সেরোপ্রিভেলেন্স দেখা গেছে। সেরোনেগটিভ ব্যক্তিদের তুলনায় সেরোপজিটিভিটি’র ব্যক্তিদের মধ্যে সেরাম জিঙ্কের মাত্রা বেশি দেখা গেছে। এটিই হয়তো গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে রোগের মৃদু লক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
×