ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায়ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতিশীল রাখতে পেরেছি

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ২৩ জুন ২০২১

করোনায়ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতিশীল রাখতে পেরেছি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়নে এগিয়ে থাকা বিশ্বের তিনটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম অবস্থানে রয়েছে জানিয়ে বলেছেন, তার সরকারের যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগের ফলেই বাংলাদেশ আজ এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষ তিনটি দেশের একটিতে পরিণত হতে পেরেছে। এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন। এছাড়া সহ¯্র্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) বাস্তবায়নেও বাংলাদেশ অগ্রগামী ছিল এবং যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকের আগে মুজিববর্ষ উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত স্মারকগ্রন্থ ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে বঙ্গবন্ধু’-এর মোড়ক উন্মোচনকালে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে এবং পরিকল্পনামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা শেরেবাংলা নগর পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার গঠন করার পর থেকে আমরা নানা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছি। যার ফলে আজকে আমরা এসডিজি বাস্তবায়নে বিশে^র তিনটি দেশের মধ্যে অন্যতম অবস্থানে রয়েছি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ নিয়েছি এবং আমাদের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় এগুলো আমরা গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, আমাদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্র, নির্বাচনী ইশতেহার-সেখানেও কিন্তু দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করেই বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা আমরা ঘোষণা করেছি। সেভাবেই সরকার গঠন করার পর থেকে নানা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছি, যার ফলে আজকে আমরা এসডিজি বাস্তবায়নে অন্যতম অবস্থানে রয়েছি। সরকার প্রধান বলেন, বিশেষ করে এই করোনাভাইরাসের কারণে যখন সমগ্র বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির, সেই সময় বাংলাদেশ একদিকে করোনাভাইরাস মোকাবেলা ও মানুষকে সুরক্ষিত করা, অপরদিকে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গতিশীল রাখতে পেরেছে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ বিষয়ে আমি মনে করি, আমরা সকলে মিলে কাজ করেছি এবং সবাইকেই আমি এজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। কারণ, সকলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন বলেই এই অর্জনটা সম্ভব হয়েছে। তবে, আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে। জাতিসংঘ ঘোষিত সহ¯্র্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) বাস্তবায়নেও বাংলাদেশ অনেক অগ্রগামী ছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এমডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিল এবং এসডিজির ক্ষেত্রেও সে পথেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ‘সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা’ এবং ‘দিক দর্শন’ রয়েছে বলেই এই অর্জন সম্ভব হচ্ছে বলে বৈঠকে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমার সব থেকে ভাল লাগে যখন আমরা কোন সিদ্ধান্ত নেই-আমাদের যারা সহকর্মী- সামরিক, অসামরিক বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা থেকে শুরু করে আমাদের সংগঠন এবং সর্বোপরি দেশের জনগণ সেটাকে আপন করে নেয়, গ্রহণ করে এবং কার্যকর করতে আন্তরিক হন। তার সরকারকে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত এমনকি মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলা করেই আজকের অবস্থানে আসতে হয়েছে, বৈঠকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগুলো মোকাবেলা করেই বাংলাদেশ কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জাতির পিতা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তা আমাদের জন্য ‘মাইলফলক’ আখ্যায়িত করে তার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে তার সরকারের যে সাফল্য, সেগুলো জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ লব্ধ অভিজ্ঞতা থেকেই এসেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমরা এ দেশের মানুষকে বাঁচাতে সক্ষম হয়েছি। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ¡াস মোকাবেলা করবার মতো আত্মবিশ্বাস আমরা পেয়েছি এবং এটি মোকাবেলার পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করতে পেরেছি। এটা আমাদের জন্য কেবল নয়, বিশ্বের যেকোন দুর্যোগ প্রবণ এলাকার জন্যও করণীয়। ‘ঝড়-ঝাপটা, জলোচ্ছ¡াস, ঘূর্ণিঝড়সহ যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যতই আসুক না কেন বাংলাদেশের জনগণ তা মোকাবেলা করতে পারে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেননা আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটা আমাদের শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষ উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত স্মারকগ্রন্থ ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে বঙ্গবন্ধু’-এর মোড়ক উন্মোচন করেন।
×