ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

২৪০ জনকে দেয়া হয়েছে ফাইজারের টিকা

প্রকাশিত: ২২:৫৯, ২২ জুন ২০২১

২৪০ জনকে দেয়া হয়েছে ফাইজারের টিকা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে করোনাভাইরাস রোধে মার্কিন কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেকের তৈরি টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। সোমবার সকালে রাজধানী ঢাকার তিনটি কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে এই টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ১২০ জন করে মোট ২৪০ জনকে টিকা দেয়া হয়। এদিকে দ্বিতীয় ধাপে গণটিকাদান কর্মসূচীর অংশ হিসেবে চীনের সিনোফার্মের টিকাদান অব্যাহত রয়েছে। রাজধানীর চারটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের ৬৭টি কেন্দ্রে এই টিকাদান চলছে। মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী, প্রবাসী শ্রমিক ও আগে নিবন্ধিতরাই এই টিকা পাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টারে সকাল ৯টার দিকে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। একই সময় শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট পরিচালক ফারুক আহমেদ ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ নিজ নিজ কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরীক্ষামূলকভাবে টিকা দেয়া ২৪০ জনকে ৭ থেকে ১০দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পরবর্তীতে এই টিকার কোন বড় ধরনের পার্শ¦প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলে বড় পরিসরে টিকা দেয়া শুরু হবে। সোমবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা টিকা গ্রহীতারা ফাইজারের টিকা নিতে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভিড় করেন। হাসপাতালে প্রবেশ করার পর ইমার্জেন্সি গেটের পাশে প্রথমে টিকা গ্রহীতাদের বসানো হচ্ছে। এরপর নিবন্ধনের কার্ড, আনুষঙ্গিক কাগজপত্র দেখার পর টিকা দেয়া হচ্ছে তাদের। তবে শুধু কুমির্টোলা হাসপাতালে নিবন্ধিতরাই এই টিকা নিতে পারবেন। টিকা নেয়ার পর হাবিবুর রহমান নামের একজন বলেন, নিবন্ধন করার পর কাজের কারণে ঢাকার বাইরে ছিলাম, তাই আগে টিকা নেয়া হয়নি। নতুন করে টিকা দেয়া শুরু হওয়ায় টিকা নিতে চলে আসি। বেশ ভাল লাগছে, ফাইজারের টিকা পেলাম। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ বলেন, আমরা সকাল ৯টার পর টিকা দেয়া শুরু করেছি। ৭৮ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যারা এই হাসপাতালে আগে নিবন্ধন করেছিলেন কিন্তু টিকা পাননি অথবা নেননি, তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ফাইজারের টিকা দেয়া হয়েছে। সব নিয়মকানুন মেনেই তাদের এ টিকা দেয়া হয়েছে। গত ৩১ মে কোভ্যাক্স প্রকল্পের আওতায় এক লাখ ছয় হাজার ডোজ ফাইজারের টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় শুধু ঢাকাতেই এই টিকাটি দেয়া হচ্ছে। গত ১৯ জুন চীনের সিনোফার্মের ভ্যাকসিন দিয়ে দেশব্যাপী দ্বিতীয় পর্যায়ে গণ টিকাদান কর্মসূচী শুরু হয়েছে। চীন থেকে উপহার হিসেবে দুই দফায় ১১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। ১৮ বছরের ওপরের সবাইকে পর্যায়ক্রমে করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় নিয়ে আসার উদ্দেশ্য সামনে রেখে সরকার গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে গণটিকাদান কর্মসূচী শুরু করে। কিন্তু, টিকার স্বল্পতার কারণে গত ২৬ এপ্রিল সরকার প্রথম ডোজ টিকাদান বন্ধের ঘোষণা দেয়। এর সপ্তাহ খানেক পর একই কারণে সারাদেশের সবগুলো কেন্দ্রে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়াও বন্ধ করে দেয়া হয়। ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সরবরাহে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচীতে প্রভাব পড়ে। চুক্তি অনুযায়ী, সেরাম থেকে ছয় মাসের মধ্যে বাংলাদেশের তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল। জানুয়ারিতে সেরাম প্রথম দফায় ৫০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করে। যার মধ্যে ওই মাসে মাত্র ২০ লাখ ডোজের একটি চালান ঢাকায় পৌঁছায়। এরপর সেরাম থেকে বাংলাদেশে আর কোন চালান আসেনি।
×