ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা শনাক্ত বাড়ছে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৭৮

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ২২ জুন ২০২১

করোনা শনাক্ত বাড়ছে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৭৮

অপূর্ব কুমার ॥ দেশে করোনা শনাক্তের হার বাড়ছে। করোনা পরীক্ষায় নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে শনাক্তের হার সোমবার গত দুই মাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সোমবার সারাদেশে করোনা শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৮ জনের মৃত্যু ও নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে সাড়ে চার হাজারের বেশি। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সোমবারে বিগত দুই মাসে শনাক্তের হার বিবেচনায় সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে করোনা। এইদিন মোট ১৯ দশমিক ২৭ শতাংশ হারে করোনা শনাক্ত হয়। এর আগে রবিবার নমুনার বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ছিল ১৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। শনিবার এই হার ছিল ১৮ দশমিক ০২ শতাংশ। ১৮ জুন রোগী শনাক্তের হার ছিল ১৯ শতাংশ। ১৭ জুনে এই হার ছিল ১৫ শতাংশ। ১৬ জুনে নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ছিল ১৭ শতাংশ। ১৫ জুনে সারাদেশে নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে করোনা রোগী শনাক্তের হার ছিল ১৪ শতাংশ। ১৪ জুন এই হার ছিল ১৪ শতাংশ। ১৩ জুনে করোনা শনাক্তের হার ছিল ১৩ শতাংশ। ১২ জুনে করোনা শনাক্তের হার ছিল ১৪ শতাংশ। ১১ জুনে করোনা রোগী শনাক্তের হার দাঁড়ায় ১২ শতাংশ। ১২ শতাংশ হারে করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১০ জুন। পরবর্তীতে তিনদিন করোনা শনাক্তের হার ছিল ১১ শতাংশ করে। পরে ১ থেকে ৫ জুন করোনা রোগী শনাক্তের হার ছিল ১০ শতাংশ করে। ৩১ মে করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৯ শতাংশ। আগের দিন ৩০ মে করোনা রোগী শনাক্তের হার ছিল ১০ শতাংশ। এর মধ্যে ১৫ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত শুধু ২৫ মে করোনা শনাক্তের হার ছিল ১০ শতাংশ। এছাড়া বেশিরভাগ দিনই করোনা রোগী শনাক্তের হার ছিল ৭ ও ৮ শতাংশের কাছাকাছি। ১৩ ও ১৪ মে পরপর দুইদিন করোনা শনাক্তের হার ছিল ১০ ও ১১ শতাংশ। ৭ মে ১০ শতাংশ হারে করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এছাড়া বেশিরভাগ দিনই ৯ শতাংশ করে করোনা শনাক্ত হয়। তবে ২১ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল করোনা শনাক্তের হার ছিল ১৫ থেকে ১৩ শতাংশের মধ্যে। ২১ ও ২২ এপ্রিল নমুনার বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ছিল ১৫ শতাংশ। ২৩ এপ্রিল তা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১৪ শতাংশে। এরপর ২৪ থেকে ২৭ এপ্রিল এই হার ছিল ১৩ শতাংশ। পরদিন ২৮ এপ্রিল করোনা শনাক্তের হার কমে দাঁড়ায় ১২ শতাংশ। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনা বিষয়ক বুলেটিনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ৭৮ জন। এর আগে রবিবার ৮২ জন ও গত পরশু ৬৭ জন মারা গেছেন। একই সময় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৪ হাজার ৬৩৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। রবিবার শনাক্তের হার ছিল ১৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও শনিবার ছিল ১৮ দশমিক ০২ শতাংশ। এতে বলা হয়, রবিবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এ্যান্টিজেন ও আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে ২৪ হাজার ৫৭টি নমুনা পরীক্ষা করে আরও ৪ হাজার ৬৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছেন ৮ লাখ ৫৬ হাজার ৩০৪ জন। এর আগে রবিবার ৩ হাজার ৬৪১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৭৮ জনের মধ্যে ৫৬ জন পুরুষ ও ২২ জন নারী। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে তাদের মধ্যে একজনের বয়স ২১-৩০ বছরের মধ্যে, সাতজনের বয়স ৩১-৪০ বছরের মধ্যে, আটজনের বয়স ৪১-৫০ বছরের মধ্যে, ২৩ জনের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ও ষাটোর্ধ ৩৯ জন। বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৫ জন, খুলনা বিভাগে ১৪ জন, বরিশাল বিভাগে তিনজন, সিলেট বিভাগে দুইজন, রংপুর বিভাগে নয়জন আর ময়মনসিংহ বিভাগে একজন। ৭৮ জনের মধ্যে সরকারী হাসপাতালে মারা গেছেন ৬৩ জন, বেসরকারী হাসপাতালে মারা গেছেন নয়জন আর বাড়িতে মারা গেছেন ছয়জন। করোনা শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়া নিয়ে সরকারের রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আইইডিসিআরের উপদেষ্টা মুশতাক হোসেন বলেছেন, ঈদের পরপর সীমান্ত এলাকায় করোনার যে প্রকোপ শুরু হয়েছিল তার প্রভাব পড়েছে রাজধানীসহ অন্যান্য জেলায়। ধীরে ধীরে বন্যার মতো এটা ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসাসহ নানা কারণে মানুষের ঢাকামুখী হওয়া এখানে প্রভাব রেখেছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে করণীয় তুলে ধরে আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুশতাক হোসেন বলেন, করোনা শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবার আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। জনসমাগম যেন না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। আরেকটি হলো করোনার টিকা দেয়া। কিন্তু টিকা যেহেতু সবাইকে দেয়া যাচ্ছে না, সে কারণে আমাদের অন্য উপায়গুলো নিশ্চিত করতে হবে। করোনা রোগীদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে এলাকায় এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক তৈরি এবং হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন এই বিশেষজ্ঞ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
×