ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নেতাকর্মীদের কাদের

নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই, প্রস্তুতি নিন

প্রকাশিত: ২২:১৫, ২১ জুন ২০২১

নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই, প্রস্তুতি নিন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করতে দলের নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই, আর মাত্র দুই বছর। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা থেকে সম্মেলন করে নতুন কমিটি দিতে হবে। এর পর জেলা সম্মেলন করতে হবে। দলের মধ্যে সুদৃঢ় ঐক্য ফিরিয়ে আনতে হবে। নিজের অবস্থান ভারি করতে পকেট কমিটি করা যাবে না এবং বিতর্কিত কাউকে দলে ঠাঁই দেয়া যাবে না। রবিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ১২ বছর আগের ঋণগ্রস্ত বাংলাদেশ এখন ঋণ সহায়তার এক অভূতপূর্ব সাফল্যের দেশ। বিশ্ব আজ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের দিকে। তিনি বলেন, প্রবাসী আয় প্রাপ্তিতে বাংলাদেশ একধাপ এগিয়ে এখন সপ্তম অবস্থানে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ৪৫ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলমান মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা আরও বাড়বে, বাড়বে সমৃদ্ধি। সামনের নির্বাচনে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে দলের মধ্যে সুদৃঢ় ঐক্য ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে গেলে আওয়ামী লীগ কোণঠাসা হয়ে যাবে। চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, সাম্প্রদায়িক, মাদক ব্যবসায়ী এদেরকে দলে ও কমিটিতে নেয়া যাবে না। দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা করা যাবে না। এসব ব্যাপারে শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থানে। বিএনপির শাসনামলে দুর্নীতির কারণে তাদের কোন নেতাকে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি, অন্যদিকে শেখ হাসিনা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে চলে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন চায় না, তারা নিজেদের ভাগ্যের উন্নতি করতে চায়। বিএনপি এদেশের জন্য কী করেছে, যার জন্য জনগণ তাদের আন্দোলনে সাড়া দেবে? আওয়ামী লীগ নাকি জিয়াউর রহমানকে খলনায়ক বানাতে চায়- বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নয়, প্রকৃতপক্ষে জিয়াউর রহমান নিজ কর্মের কারণেই ইতিহাসের কাঠগড়ায় খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত। ইতিহাস বিকৃতির জন্য জনগণ জিয়াউর রহমানকে কোনদিন ক্ষমা করবে না। ইতিহাসের ফুটনোটকে বিএনপি মহানায়ক বানানোর অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বেনিফিসিয়ারি জিয়াউর রহমান। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে বহুদলীয় তামাশার প্রচলন করেছিল বিএনপি। বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, এদেশে লুটপাটতন্ত্র চালু করেছিল বিএনপি। হাওয়া ভবনের নামে খাওয়া ভবন চালু করে লুটপাটতন্ত্র চালু করেছিল। কোন দুর্নীতির বিচার হতো না। কোন নেতা, কোন কর্মীকে শাস্তির আওতায় আনা হতো না। এই ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুকন্যা অত্যন্ত কঠোর। আমাদের দলের অনেকের সাজা হয়েছে, অনেকে জেলে আছে, দুদক তদন্ত করছে। বিএনপির সময় এটা ভাবাই যেত না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে, এটাই বিএনপির গাত্রদাহ। করোনাভাইরাসের ভয়ঙ্কর বিস্তার ঘটছে বলে জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাভাইরাস কবে যাবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। অনেকে থুঁতনির কাছে মাস্ক পরে থাকেন। এভাবে মাস্ক পরে লাভ কি, লাভ নেই। ভালভাবে মাস্ক পরতে হবে। করোনা কবে যাবে সেটা আমরা কেউই বলতে পারছি না। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমদের সভাপতিত্বে এ বর্ধিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান, ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহবুবুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ প্রমুখ।
×