ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাটকলে সুসংবাদ

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ২১ জুন ২০২১

পাটকলে সুসংবাদ

সরকারী ১৪টি পাটকল লিজ নিতে চারগুণ আবেদনপত্র জমা-শীর্ষক সংবাদটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক নিঃসন্দেহে। কেননা সামনে আসছে পাটের মৌসুম। সরকার গোল্ডেন হ্যান্ডসেকের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ২২টি পাটকল বন্ধ করে দিলেও খুব শীঘ্রই সেগুলো লিজিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চালুর অঙ্গীকার করেছিল। সেই পেক্ষাপটে বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশন গত ২৭ এপ্রিল আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। এর মধ্যে ছিল ১৭টি পাটকল। ১৪টি পাটকল লিজ নিতে দরপত্র জমা পড়েছে ৫১টি। তবে ৩টি পাটকল লিজ নেয়ার ক্ষেত্রে কোন আবেদনপত্র জমা পড়েনি। যা হোক, যাচাই-বাছাই শেষে এই ১৪টি পাটকল লিজ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে চলতি বছরেই। তবে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের ভিত্তিতে চূড়ান্ত হবে লিজিংয়ের প্রক্রিয়াটি। পুরনো অভিজ্ঞ ও দক্ষ পাটকল শ্রমিকদের চাকরির নিশ্চয়তা প্রদানের মাধ্যমে চালু করতে হবে পাটকলগুলো। বিজিএমসি কর্তৃপক্ষ সততা দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্বটি পালন করবে বলেই প্রত্যাশা। উল্লেখ্য, সরকার উপর্যুুপরি লোকসানের মুখে রাষ্ট্রায়ত্ত পঁচিশটি পাটকল বন্ধ ঘোষণা এবং কর্মরত ২৪ হাজার ৮৮৬ জন শ্রমিককে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে অবসর দিলেও এক্ষেত্রে আবার আশার আলো দেখা দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় খাতের পাটকলগুলো সংস্কারের জন্য সরকার আবারও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) থেকে আপাতত পাঁচ শ’ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছে, যা দিতে সম্মত হয়েছে সংস্থাটি। এ নিয়ে বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশন (বিজেএমসি)-এর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকও হয়েছে এডিবির। সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক নবপর্যায়ে পাটকলগুলো পুনরায় চালু হবে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ তথা পিপিইর ভিত্তিতে। এর জন্য বিজেএমসি প্রয়োজনীয় নীতিমালাও প্রস্তুত করছে। প্রস্তাবিত নীতিমালায় মিল ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার দায়িত্ব ব্যক্তিমালিকানায় দেয়া হলেও মিলের সব সম্পদ লিজ গ্রহীতার হাতে তুলে দেয়া হবে না। বরং মিলগুলো কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে ও হবে তা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবে সরকার। সামনেই আসছে পাট মৌসুম। তার আগে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্নসহ পাটকলগুলো দ্রুত চালু হবে বলেই প্রত্যাশা। বাস্তবেও স্বর্ণযুগ ফিরে এসেছে সোনালি আঁশ পাটের। বর্তমানে পাট থেকে তৈরি হচ্ছে তিন শতাধিক রকমের আকর্ষণীয় ও মূল্যবান পণ্য। সবচেয়ে বড় কথা, পাট থেকে তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব পচনশীল পলিথিন। বর্তমানে যে প্লাস্টিক পলিথিন দেশে ও বিদেশে যথেচ্ছ ব্যবহৃত হচ্ছে তা প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য সমূহ ক্ষতিকর। সে অবস্থায় বিকল্প হিসেবে পাটের পলিথিন ব্যবহারের অত্যুজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বিশ্বব্যাপী। বিশ্ববাজারে পাটের ব্যাগের চাহিদা রয়েছে ৫০০ বিলিয়ন পিসের। এর ১০ শতাংশ বাজার দখল করতে পারলে বছরে আয় করা সম্ভব ৫০ হাজার কোটি টাকা। পাট খাতের বৈশ্বিক রফতানি আয়ের ৭২ শতাংশ এখন বাংলাদেশের দখলে। সে অবস্থায় পাট শিল্প নিয়ে আশাবাদী হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে অবশ্যই।
×