ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শ্রীমঙ্গলে ৩০০ গৃহহীন পরিবার পেল আপন ঠিকানা

বীরঙ্গনা শিলা গুহ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার পেয়ে আনন্দে কাঁদলেন ॥ প্রধানমন্ত্রীও অশ্রুসিক্ত

প্রকাশিত: ১৮:১৮, ২০ জুন ২০২১

বীরঙ্গনা শিলা গুহ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার পেয়ে আনন্দে কাঁদলেন ॥ প্রধানমন্ত্রীও অশ্রুসিক্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা, শ্রীমঙ্গল ॥ বীরঙ্গনা শিলা গুহ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর পেয়ে আনন্দে নিজে কাঁদলেন। তার কান্না দেখে প্রধানমন্ত্রী নিজেও অশ্রুসিক্ত হয়ে পরেন। নিজ হাতে সাতকড়া রান্না করে খাওয়াতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। শিলা গুহর কান্নায় আবেগ আপ্লুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। কথা বলা শেষে চশমা খুলে চোখ মুছতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে। কথা দেন প্রধানমন্ত্রী। কখনো সুযোগ পেলে শিলা গুহের আশ্রয়নের সেই ঘরেই আসবেন তিনি। গতকাল রোববার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৩০০ পরিবারের হাতে আশ্রায়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের হাতে ঘর তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম এসময় উপকারভোগীদের মধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরঙ্গনা শীলাগুহকে কথা বলার আহবান জানান। এরপর বীরাঙ্গনা শীলাগুহ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধে তার জীবনের করুন কাহিনী তুলে ধরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বীরাঙ্গনা শিলা গুহ বলেন, ‘আমি ঘর পেয়ে খুবই খুশি। আমি আগে ছিলাম রাস্তার ভিখারি, এখন আমি লাখপতি। শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যার জন্য আমি এই পর্যায়ে আসতে পেরেছি। ভগবান তাকে দীর্ঘজীবী করুন। আমি এই কামনা করি। আর কামনা করি বঙ্গবন্ধু আত্মা, আমার মা শেখ ফজিলাতুন্নেসা- এরা যেন শান্তি পায়। ‘তারা যেন স্বর্গ থেকে দেখতে পায় আমরা সুখি হয়েছি। আমি এখনও মা আপনার জন্য দু'টাকা করে বাতি জ্বালাই। এখনও প্রতিদিন আমি বাতি জ্বালাই, আমার বোন যেন সুখি থাকে। আমার বোনকে যেন করোনাভাইরাস আক্রান্ত করতে না পারে। আমার বোন যেন হাজার বছর বাঁচে, সেই কামনা করি। বীরাঙ্গনা শিলা গুহ আরো বলেন, আমি যুদ্ধের সময়েও ভাবতে পারিনি যে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধ বয়সেও আমাকে দেখে রাখবে। তাই আমি ভীষণ ভীষণ খুশি হয়েছি তার প্রতি। বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে আমার একটা দাবি, আমায় যে ঘর দিয়েছেন সেই ঘরে একবার আসবেন। আমি আপনাকে সাতকড়া দিয়ে তরকারি রান্না করে খাওয়াবো। এই বলে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি, ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা মার্জনা করবেন। শেখ হাসিনা বলেন, আপনি খুব ভালো বক্তব্য রাখছিলেন, আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা নেবেন। আমি যদি সুযোগ পাই নিশ্চয়ই আসার চেষ্টা করবো। আপনাদের যে অবদান, আপনাদের যে আত্মত্যাগ- এই আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই তো আমাদের স্বাধীনতা অর্জন। আত্মত্যাগ কিন্তু বৃথা যায় না। আপনারা যারা ঘর পেয়েছেন সবাই ভালো থাকেন এই কামনা করি। মৌলভীবাজার জেলায় ৭টি উপজেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ১১৫১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পেলেন নতুন পাকা ঘর ও দুই শতক করে জমি। এর আগে প্রথম পর্যায়ে ১১শ ২৬ টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছিলো।
×