ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করোনায় খুলনা রাজশাহী ও কুষ্টিয়ায় ২৯ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ২৩:৩২, ২০ জুন ২০২১

করোনায় খুলনা রাজশাহী ও কুষ্টিয়ায় ২৯ জনের মৃত্যু

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ লাশের সারি ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে রাজশাহীতে। এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগে করোনায় মৃত্যু ছাড়িয়েছে ৭০০। আর সর্বশেষ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। অন্য সাতজন উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এছাড়া খুলনার দুটি হাসপাতালে ১১ জন এবং কুষ্টিয়ায় রেকর্ড আটজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টার মধ্যে বিভিন্ন সময় করোনা আক্রান্ত ১০ জন মারা যান। মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর ৫ জন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫ জন। এ নিয়ে চলতি মাসের গত ১৯ দিনে এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১৯৩ জন। শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৬ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৩০ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয়জন, নাটোরের চারজন, নওগাঁর পাঁচজন ও পাবনার একজন। একই সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৮ জন। শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ হাসপাতালের ৩০৯টি বেডের বিপরীতে ভর্তি আছেন ৩৬৫ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ২১৬ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৮৭, নাটোরের ২৫, নওগাঁর ২৪ ও পাবনার ৬ ও কুষ্টিয়ার ৪ জন। এদিকে রাজশাহীতে কিছুটা কমেছে করোনা শনাক্তের হার। শুক্রবার দুটি ল্যাবে রাজশাহীর ৩৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১১৩ জনের শরীরে করোনা পাওয়া গেছে। রাতে প্রকাশিত নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, আগের দিনের চেয়ে ১৩ দশমিক ৮১ শতাংশ কমে করোনা শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ০৬ শতাংশ। যা আগের দিন বৃহস্পতিবার ছিল ৪৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এছাড়াও গত বুধবার ৪১ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং মঙ্গলবার ছিল ৪৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ল্যাবে ৫৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ এসেছে ১৯২ জনের। রাজশাহী ছাড়াও নওগাঁর ১৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭৯ জনের শরীরে করোনা পাওয়া গেছে। এছাড়াও বিদেশগামী তিনজনের নমুনা পরীক্ষা করে একজনের পজিটিভ এসেছে। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, করোনা রোগীদের জন্য একের পর এক সাধারণ ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হচ্ছে। এখন এ হাসপাতালের ২৯-৩০, ৩৯-৪০, ২৫, ২২, ২৭, ১৬, ১৫, ৩ এবং ১ নম্বর ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা চলছে। এছাড়া কেবিনে ১৫টি বেড আছে। সব মিলিয়ে এ হাসপাতালে ৩০৯টি বেডে করোনা রোগী ভর্তি করা হচ্ছে। এছাড়াও ওই ওয়ার্ডগুলোতে অতিরিক্ত আরও ১৫টি বেড দেয়া হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে প্রাণহানি ছাড়াল ৭০০ ॥ এদিকে রাজশাহী বিভাগে মহামারী করোনায় প্রাণহানি ছাড়াল ৭০০। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের আট জেলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন। এ নিয়ে বিভাগে প্রাণহানি দাঁড়াল ৭১৭ জনে। রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডাঃ নাজমা আক্তার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। জেলায় একদিন ৩৫৯ জনের করোনা ধরা পড়েছে। এটি গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে করোনা সংক্রমণের সর্বোচ্চ রেকর্ড। একই দিনে জয়পুরহাটে ৯১, পাবনায় ৭৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭৫, নাটোরে ৬৫, বগুড়ায় ৬১, নওগাঁয় ৫৮ এবং সিরাজগঞ্জে ৩৩ জনের করোনা ধরা পড়েছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিভাগে করোনায় যে ৭১৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন তার মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৩৮ জন বগুড়া জেলার বাসিন্দা। এছাড়া রাজশাহীতে ১২৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৯১, নওগাঁয় ৬০, নাটোরে ৩৯, সিরাজগঞ্জে ২৭, পাবনায় ২২ এবং জয়পুরহাটে ১৭ জন প্রাণ হারান। খুলনার দুটি হাসপাতালে ১১ জনের মৃত্যু ॥ খুলনায় কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েও কমছে না করোনায় শনাক্তের হার ও মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা এবং উপসর্গ নিয়ে খুলনা করোনা হাসপাতালে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আটজনের করোনা পজিটিভ ছিল। খুলনা করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ও খুমেক হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ সুহাস রঞ্জন হালদার শনিবার সকালে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আটজন করোনা আক্রান্ত এবং তিনজন উপসর্গ নিয়ে। হাসপাতালে সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৫৫ জন রোগী ভর্তি ছিল। যার মধ্যে রেডজোনে ৯৫ জন, ইয়ালোজোনে ২১ জন, এইচডিইউতে ২০ জন এবং আইসিইউতে ১৯ জন চিকিৎসাধীন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৪১ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৪ জন। এদিকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজের (খুমেক) উপাধ্যক্ষ ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ শুক্রবার রাতে জানান, এদিন খুমেকের পিসিআর মেশিনে ৪৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যার মধ্যে খুলনার ৩৮৭টি। মোট নমুনা পরীক্ষায় ১৭১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে খুলনার ১৪৯ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। এছাড়া বাগেরহাটের আটজন, যশোরের পাঁচজন, সাতক্ষীরার দুইজন, নড়াইলের একজন, পিরোজপুরের একজন, গোপালগঞ্জ তিনজন, মাগুরার একজন ও ফরিদপুর জেলার একজন রয়েছে। খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মুখপাত্র ডাঃ সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা মহানগরী ও জেলার ৩৮৭ জনের নমুন পরীক্ষায় ১৪৯ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৮ শতাংশ। এ সময়ে মহানগরীর একজন এবং রূপসা ও দাকোপ উপজেলার একজন করে মোট ৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কুষ্টিয়ায় রেকর্ড আটজনের মৃত্যু ॥ করোনা আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়ায় রেকর্ড সাতজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত তাদের মৃত্যু হয়। করোনা আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়ায় একদিনে এটিই সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় মোট ৮ জন রোগীর মৃত্যু হলো। এদিকে করোনা রোগীদের সামাল দিতে জেনারেল হাসপাতালে অক্সিজেনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শনিবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাঃ তাপস কুমার সরকার জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত মোট সাতজন করোনা রোগী মারা যান। এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট আটজন রোগীর মৃত্যু হলো। তিনি জানান, কুষ্টিয়ায় প্রতিদিন করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ফলে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে শয্যা ও অক্সিজেন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে কোন বেড খালি নেই। ১০০ বেডের বিপরীতে ভর্তি আছে ১১৩ জন রোগী। গত ১৫ দিন ধরে রোগী শনাক্তের হার ও মৃত্যু উর্ধমুখী বলেও জানান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ায় নতুন করে আরও ১১২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে দেয়া তথ্যমতে, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে মোট ৩৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১১২টি নমুনা পজিটিভ হয়। পরীক্ষার বিপরীতে আক্রান্তের হার প্রায় ৩০ শতাংশ। নতুন শনাক্ত হওয়ার রোগীর মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৭৫ জন, কুমারখালী উপজেলায় ১৬ জন, মিরপুর উপজেলায় ৪ জন, দৌলতপুর উপজেলায় ৫ জন, খোকসা উপজেলায় ৪ জন ও ভেড়ামারা উপজেলায় ৮ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬ হাজার ১৭৫ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪ হাজার ৯৬৯ জন মানুষ। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন জন ১৪১ জন মানুষ। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১শ’ ৫৬ জন। এদের মধ্যে মারা যায় চার জন। নওগাঁয় নতুন শনাক্ত ৭৯ জন ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, নওগাঁয় শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭৯ ব্যক্তির শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। নওগাঁর সিভিল সার্জন ডাঃ এ বি এম আবু হানিফ জানিয়েছেন, এ সময় ২২৪ ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে ১৮৪ ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করে ৭১ ব্যক্তির শরীরে এবং নওগাঁ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে এন্টিজেন প্রক্রিয়ায় ৪০ ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করে ৮ ব্যক্তির শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তের হার ৩৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। নতুন শনাক্তদের মধ্যে নওগাঁ সদর উপজেলায় ২২ জন, রানীনগরে ৬ জন, আত্রাইয়ে ৫ জন, মহাদেবপুরে ৮ জন, মান্দায় ৫ জন, বদলগাছিতে ৩ জন, পতœীতলায় ১ জন, ধামইরহাটে ১ জন, নিয়ামতপুরে ১৬ জন, সাপাহারে ১১ জন এবং পোরশায় ১ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হলো ৩ হাজার ৩৩২ জন। এ সময় নতুন করে কেউ সুস্থ হননি। তবে এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা দুই হাজার ৩০৩ জন। এই ২৪ ঘণ্টায় জেলায় মোট কোয়ারেন্টাইনে নেয়া ব্যক্তির সংখ্যা ১৯ জন। এ সময় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬৪ জন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানিক ৫৮ জনসহ মোট কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ২ হাজার ৭০১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৪৬ জন জেলা সদরের হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং অন্যরা স্ব-স্ব বাড়িতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। বিগত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তবে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির সংখ্যা ৬০ জন। এদিকে নওগাঁ জেলায় জেলা প্রশাসন ঘোষিত স্থানীয়ভাবে তৃতীয় দফায় ৪র্থ দিনের মতো কঠোর বিধিনিষেধ চলমান রয়েছে। দিনাজপুরে ৩ জনের মৃত্যু ॥ দিনাজপুরে একদিনে আরও ৬৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এছাড়াও একই সময়ে দিনাজপুর সদরে করোনায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দিনাজপুর জেলায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১শ’ ৫০ জনের। বর্তমানে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯শ’ ৩৪ জন। একই সঙ্গে ২৪ ঘণ্টায় করোনা (কোভিড-১৯) আক্রান্ত ৩১ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে ৮শ’ ৯৮ জন এবং হাসপাতালে করোনার উপসর্গ জ¦র, কাশি নিয়ে ৬০ জনসহ ৯৬ জন ভর্তি আছেন। জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুছ কুদ্দুছ জানান, নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবের নমুনা পরীক্ষায় ১শ’ ৩৮টি রিপোর্টের মধ্যে ৬৫টি রিপোর্ট করোনা পজিটিভ এসেছে। একই সঙ্গে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন, চিরিরবন্দরের আনিসুর রহমান (৮৪), ফুলবাড়ীর এম এ হান্নান (৪৮) ও হাকিমপুর উপজেলার রোকেয়া বেগম (৫০) এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। উল্লেখ্য, শনিবার করোনা আক্রান্ত ৬৫ জনসহ দিনাজপুর জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৮শ’ ৭৬ জনে। এ পর্যন্ত জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১শ’৫০ জনের। সাতক্ষীরায় ৯ জনের মৃত্যু ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে একজন ও উপসর্গ নিয়ে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৭ জন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও ২৬৮ জন। এছাড়া ৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা শেষে ৫৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৬০ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অপরদিকে, জেলায় ৪৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী মেডিক্যাল কলেজ ও সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া ৮২১ জন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন বেসরকারী হাসপাতাল, নিজ নিজ বাড়ি ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে চিৎিসাধীন রয়েছেন। জামালপুরে মৃত্যু ৩, শনাক্ত ২৪ ॥ জামালপুর জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৮টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২৪ জন। একদিনে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে শতকরা ২৭ দশমিক ২৭ ভাগ। শনিবার একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যুসহ জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেলেন ৪২ জন। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে ৮৮টি নমুনা পরীক্ষায় ২৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এতে একদিনে সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ২৭ ভাগে। একদিনে নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে জামালপুর সদর হাসপাতালের একজন স্টাফ নার্স ও একজন ওয়ার্ডবয় এবং শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের দুজন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং একজনকে জামালপুর সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি ২২ জন নিজ নিজ বাসাবাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। সিভিল সার্জন ডাঃ প্রণয় কান্তি দাস জনকণ্ঠকে জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে শনিবার জামালপুর সদর হাসপাতালে দুজন এবং ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইদিন আগে জামালপুর শহরের কাচারিপাড়া এলাকার আয়কর আইনজীবী মোঃ আতাউর রহমান (৬৫) করোনা পজিটিভ হন। তিনি নিজ বাসায় আইসোলেশনে ছিলেন। শনিবার বেলা ১১টার দিকে তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হলে দুপুরে মারা যান তিনি। একই দিন জামালপুর শহরের পাথালিয়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মোঃ রকিবুল ইসলাম (৬০) করোনার উপসর্গ নিয়ে জামালপুর সদর হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে মৃত্যুর পর নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ আসে। একই দিন বিকেলে করোনা পজিটিভ হয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জামালপুর শহরের পাথালিয়া এলাকার পিডিবি কর্মচারী মোঃ বেলায়েত হোসেন (৫৬)। তিনি আরও জানান, শনিবার একদিনে তিনজনের মৃত্যুসহ জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেলেন ৪২ জন। এছাড়া জেলায় এ পর্যন্ত মোট ২৩ হাজার ৪৪৬টি নমুনা পরীক্ষায় মোট দুই হাজার ৪৮৯ জন করোনায় আক্রান্ত হন। তাদের মধ্যে দুই হাজার ২২৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
×