ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত

প্রকাশিত: ২০:৪২, ২০ জুন ২০২১

বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত

মুজিববর্ষে ভ‚‚মিহীন-গৃহহীন সব অসহায় মানুষকে নতুন ঘর উপহার দেয়ার যে প্রতিশ্রæতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন, তার আওতায় আরও সাড়ে ৫৩ হাজার পরিবার নতুন ঘর পেতে যাচ্ছেন। একসঙ্গে এত মানুষকে বিনামূল্যে জমি ও গৃহ প্রদানের ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম এবং মানবিক এ উদ্যোগ সারাবিশ্বের কাছে দারিদ্র্য বিমোচনে সক্ষমতা প্রমাণের একটি নজিরবিহীন ঘটনা। শুক্রবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন জনকণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছে, যা মঙ্গলাকাক্সক্ষী ব্যক্তিমাত্রের জন্যই পরম স্বস্তিকর এক সুসংবাদ। আমরা বর্তমান সরকারের সমধর্মী আরও মানবিক উদ্যোগের কথা স্মরণ করতে পারি। নদীভাঙ্গন, ঝড়-বাদল-জলোচ্ছ¡াস এ দেশের মানুষের জীবনের নিত্যসঙ্গী। প্রকৃতির খেয়াল ও বিরূপ আচরণের সঙ্গে নদীসংলগ্ন ও উপক‚লবাসীদের জীবন যেন ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। সহাবস্থান ও সংগ্রাম কাকে বলে সেটি বেশ ভালই জানে এসব লড়াকু পরিশ্রমী মানুষ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত কয়েক দশক ধরে দেশের মানুষ নতুন করে দুর্ভোগ ও বিপন্নতার শিকার হয়ে চলেছে। উন্নত দেশগুলোর অপরিণামদর্শী আচরণের জন্য প্রকৃতির যে চিরকালীন ক্ষতিসাধন হয়ে চলেছে, তার ভোগান্তির শিকার যে কয়টি দেশের মানুষ তার ভেতর বাংলাদেশ একেবারে শীর্ষে। বর্তমান জনকল্যাণকামী সরকারকে বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে মানুষ বাঁচাতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে। তারই একটি সা¤প্রতিক উদাহরণ জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ। বাংলার মানুষ হৃদয়ের গভীরে এই সত্যকে ধারণ করে আছে যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশের জন্য, জাতির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা পিতার কাছ থেকে সেই শিক্ষাটিই পেয়েছেন। তাই তাঁর সকল ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণ। যে কোন অবস্থা মোকাবেলা করা, প্রতিক‚ল অবস্থা মোকাবেলা করে চলা আর সৎপথে থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণ করাÑ এ আদর্শ তিনি পেয়েছেন জাতির পিতার কাছ থেকেই। তাঁরই আদর্শ শিরোধার্য করে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ব্রতটিই পালন করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, রাজধানীকেন্দ্রিক সীমিত আয়ের মানুষের দুঃখ-কষ্টের সীমা নেই। তাদের স্থায়ী কোন ঠিকানাও নেই। যারা সামান্য সচ্ছল তারা স্বল্প মূল্যের ভাড়া বাসায় থাকেন। যাদের ওই সামর্থ্যটুকুও নেই তারা রাজধানীর বিভিন্ন বস্তিতে বসবাস করছেন। আজ এখানে কাল ওখানে অনেকটা যাযাবরের মতোই যেন তাদের জীবনযাপন। অনেকের মনে হয়ত স্বপ্ন জাগে এক টুকরো জমি কিংবা একটা ছোট ফ্ল্যাট কেনার। স্বপ্ন আছে কিন্তু সাধ্য নেই। বাস্তবতা থেকে তাদের স্বপ্ন ধরাছোঁয়ার অনেক বাইরে। দুই কোটি জনসংখ্যার এই মহানগরীর প্রায় ৪০ লাখ লোক এই শ্রেণীভুক্ত। নদীভাঙ্গনসহ বিভিন্ন কারণে সর্বস্ব হারিয়ে প্রতিদিনই ঢাকামুখী হচ্ছে নিঃস্ব মানুষ। বাধ্য হয়েই ফুটপাথ আর ঝুপড়ি বস্তিতেই তাদের বসবাস করতে হয়। মাঝে মধ্যে উচ্ছেদ অভিযানে ভেঙ্গে দেয়া হয় তাদের সব। এমন পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের এসব মানুষের জন্য সরকার ২০ বছরের মধ্যে পরিশোধের সময় বেঁধে প্রতিদিন ২৭৫ টাকা কিস্তিতে বস্তির বাসিন্দাদের দৃই বেডরুমের এ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করে দিয়েছে। স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ৫০ হাজার এ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, সরকারের এ উদ্যোগ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত একটি দেশ। সেই স্বপ্ন পূরণে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। দেশের একটি মানুষও যেন গৃহহীন না থাকে, সেই সুন্দর সদিচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম যে ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে তা বলাই বাহুল্য।
×