ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মোহাম্মদ হোসাইন

স্বাধীনতার ৫০ বছর ও বাংলাদেশের বিদ্যুত

প্রকাশিত: ২২:৪৫, ১৯ জুন ২০২১

স্বাধীনতার ৫০ বছর ও বাংলাদেশের বিদ্যুত

এ কথা অনস্বীকার্য সভ্যতার উন্নয়নের প্রধান নিয়ামক বিদ্যুত। ১৯০১ সালের ৭ ডিসেম্বর তারিখে আহসান মঞ্জিলে জেনারেটরের সহায়তায় বিদ্যুত সরবরাহের মাধ্যমে এই অঞ্চলে বিদ্যুতের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৩০ সালে বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় প্রথম বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থা চালু হয় এবং পরবর্তীতে বাণিজ্যিকভাবে বিতরণ করার লক্ষ্যে ‘ধানমন্ডি পাওয়ার হাউস’ স্থাপন করা হয়। ভারত উপমহাদেশ স্বাধীনতাকালে, ১৯৪৭ এ এতদ্অঞ্চলে বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় বিদ্যুত উৎপাদন ও বিতরণের ব্যবস্থা চালু ছিল। তারপর ১৭টি প্রাদেশিক জেলার শুধু শহরাঞ্চলে সীমিত পরিসরে বিদ্যুত সরবরাহের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। অধিকাংশ জেলাগুলোতে শুধুমাত্র রাতের বেলায় সীমিত সময়ের জন্য বিদ্যুত সরবরাহ করা হতো। ঢাকায় ১৫০০ কিলোওয়াট ক্ষমতার দুটি জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুত সরবরাহ করা হতো। জাতির জনকের স্বপ্ন ও স্বাধীন বাংলাদেশের বিদ্যুত খাত ১৯৭৫ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ পানি ও বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড প্রকৌশলী সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিক-নির্দেশনামূলক ভাষণে বলেন, ‘বিদ্যুত ছাড়া কোন কাজ হয় না, কিন্তু দেশের জনসংখ্যা শতকরা ১৫ ভাগ লোক যে শহরের অধিবাসী সেখানে বিদ্যুত সরবরাহের অবস্থা থাকলেও শতকরা ৮৫ জনের বাসস্থান গ্রামে বিদ্যুত নাই। গ্রামে গ্রামে বিদ্যুত সরবরাহ করতে হবে। এর ফলে গ্রাম বাংলার সর্বক্ষেত্রে উন্নতি হবে। বন্যানিয়ন্ত্রণ ও গ্রামে গ্রামে বিদ্যুত চালু করতে পারলে কয়েক বছরের মধ্যে আর বিদেশ হতে খাদ্য আমদানি করতে হবে না’। বঙ্গবন্ধুর এই ভিশনারি চিন্তাচেতনার ফসল হিসেবে কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনেতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের অপরিসীম গুরুত্বের বিষয় বিবেচনা করে ১৯৭৭ সালের অক্টোবরে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) সৃষ্টি করা হয়। স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার ৫৯ (PO-59) এর মাধ্যমে ১৯৭২ সালের ৩১ মে ওয়াপদাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড গঠন করার মাধ্যমে বিদ্যুত খাতের এক নবদিগন্তের সূচনা করে। ফলে সমগ্র দেশে বিদ্যুত উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণের দায়িত্ব অর্পিত হয় বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের ওপর। ১৯৭২-৭৫ এই সময়ে আশুগঞ্জ, ঘোড়াশাল ও সিদ্ধিরগঞ্জ তিনটি পাওয়ার হাব প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্বাধীনতা উত্তরকালে ৭৫ পরবর্তীতে জাতির জনকের নির্মম হত্যাকা-ের পর স্বাধীনতাবিরোধী সরকার ক্ষমতায় থাকায় বিদ্যুত খাতের আশাব্যঞ্জক কোন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। সোনার বাংলা বিনির্মাণে দেশের সার্বিক অর্থনীতি তথা বিদ্যুত খাতের পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়ে। অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, সিস্টেম লস বাড়তে থাকে। বঙ্গবন্ধু থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করে সে সময়ে বিদ্যুত পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত নাজুক। ১৯৯৬ থেকে ২০০১, এই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে অনেক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়। এই সময়ে বিদ্যুত উৎপাদন ১,৬০০ থেকে ৪,৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে বিদ্যুত উৎপাদনে বেসরকারী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য ‘PRIVATE SECTOR POWER GENERATION POLICY OF BANGLADESH’ প্রণয়ন করেন। যার ফলে বর্তমানে বিদ্যুত উৎপাদনে বেসরকারী অংশগ্রহণ প্রায় ৫০ ভাগ। তাছাড়া বিদ্যুত খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। ২০০১-২০০৮ পর্যন্ত বিদ্যুতের অভাবে দেশের অর্থনীতি ছিল পর্যুদস্ত, শিল্প, বাণিজ্য ছিল স্থবির এবং জনজীবন ছিল বিপর্যস্ত। প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কবলে মানুষের জীবন ছিল অসহনীয়। অথচ শুধু ব্যবসায়িক ফায়দা লুটার জন্য মাইলের পর মাইল বিদ্যুতের খাম্বা আর তার লাগানো হয়েছিল। ২০০৯ সালে সারাবিশ্বে তখন ভয়াবহ মন্দা। এই ভয়াবহ অবস্থাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেই প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিলেন দিন বদলের সনদ ২০২১ ‘রূপকল্প’। তিনি বিদ্যুত খাতের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিলেন ২০২১ সালের মধ্যে সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছানো হবে। বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী জাতিকে দেয়া তাঁর প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। ২০২১-এর অনেক আগেই বিদ্যুত এখন প্রায় সবার ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। বিদ্যুতের অগ্রযাত্রার ফলে আমরা বিশ্বের অনেক দেশকেই পেছনে ফেলে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (MDG) অর্জন করে সারা বিশ্বের দৃষ্টি কেড়ে নিতে সক্ষম হয়েছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর দুই মেয়াদে দেশ পরিচালনার সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী, সাহসী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে এক দশকে বিদ্যুত খাতে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে, যা বিগত ১০০ বছরেও হয়নি। ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুত’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে সকলের জন্য নির্ভরযোগ্য বিদ্যুত সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট ও ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণকল্পে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যার সুফল আমরা ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছি। জানুয়ারি ২০০৯ হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত ১৯ হাজার ২১ মেগাওয়াট বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা ক্যাপটিভসহ ২৫,২২৭ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে এবং বিদ্যুতের সুবিধাভোগী জনসংখ্যা ৪৭ হতে ৯৯.৫ ভাগে উন্নীত হয়েছে। তা ছাড়া ১৩ হাজার ৬৫৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৩টি বিদ্যুতকেন্দ্র প্রকল্প নির্মাণাধীন, ৩ হাজার ১৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২২টি বিদ্যুত কেন্দ্রের চুক্তি স্বাক্ষর প্রক্রিয়াধীন (LOI এবং NOA প্রদান করা হয়েছে) যেগুলো খুব শীঘ্রই কার্যক্রম শুরু করবে। তাছাড়া ৬৩৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৬টি বিদ্যুত কেন্দ্রের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে আরও ১৫ হাজার ৩৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩২ বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। পুরাতন বিদ্যুতকেন্দ্রগুলো সংরক্ষণ ও মেরামতের মাধ্যমে অতিরিক্ত বিদ্যুত উৎপাদনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দেশে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও টেকসই জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার বিদ্যুত উৎপাদনের একক জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ক্রমান্বয়ে জ্বালানি বহুমুখীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রাকৃতিক গ্যাসের বিকল্প হিসেবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদনের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার নানাবিধ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এ লক্ষ্যে জমির প্রাপ্যতা, পরিবহন সুবিধা এবং লোড সেন্টার বিবেচনায় নিয়ে পায়রা, মহেশখালী ও মাতারবাড়ী এলাকাকে পাওয়ার হাব হিসাবে চিহ্নিত করে একাধিক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- রামপাল ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল প্রজেক্ট, মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল প্রজেক্ট এবং পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্প। গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র ছাড়াও রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের উদ্যোগে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট থার্মাল বিদ্যুত কেন্দ্রের বাণিজ্যিক উৎপাদন সফলভাবে শুরু হয়েছে। বিদ্যুত উৎপাদনের দীর্ঘমেয়াদী মহাপরিকল্পনার অংশ হিসাবে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা কার্যক্রমের আওতায় ২০৪১ সালের মধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ হতে প্রায় ৯০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে বিদ্যুত আমদানি ১,১৬০ মেগাওয়াট করা হচ্ছে । নেপাল হতে বিদ্যুত আমদানির লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর আওতায় দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে GMR এর নির্মিতব্য জল বিদ্যুতকেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ভুটান হতে বিদ্যুত আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশ, ভুটান এবং ভারতের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত পর্যায়ে স্বাক্ষরের অপেক্ষায় আছে। উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে শুধু বিদ্যুত আমদানি নয় বরং ঋতু বৈচিত্র্যকে কাজে লাগিয়ে উদ্বৃত্ত বিদ্যুত রফতানি নিয়ে কাজ করছে। বিদ্যুত উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যে সৌর বিদ্যুতভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদনের ওপর অধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে দালানের ছাদে সৌরবিদ্যুত উৎপাদন জনপ্রিয় করার জন্য ‘নেট মিটারিং গাইডলাইন’ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাদে সৌরবিদ্যুতের প্যানেল স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। বিগত একযুগে বিদ্যুত সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন নির্মাণের ক্ষেত্রে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করার ফলে বর্তমানে মোট সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ ১২ হাজার ৭৪৪ সার্কিট কিলোমিটার এবং বিতরণ লাইনের পরিমাণ ৬ লাখ ১২ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। বিদ্যুতের সামগ্রিক সিস্টেম লস ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ১৬.৮৫ শতাংশ হতে প্রায় ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১১.২৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে মোট সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ ২৮ হাজার সার্কিট কিলোমিটার এবং বিতরণ লাইনের পরিমাণ ৬ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরকার বিদ্যুত খাতে মানবসম্পদ উন্নয়নেও গুরুত্বারোপ করেছে। এ লক্ষ্যে Bangladesh Power Management Institute (BPMI) গঠন করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম শুরু করেছে। বিদ্যুত উৎপাদন ও সরবরাহে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে বাংলাদেশ এখন বিদ্যুতের মান ও সেবার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। অটোমেশন ও ডিজিটাল সেবা বৃদ্ধির মাধ্যমে মানসম্পন্ন বিদ্যুত ও গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। গ্রাহকের জন্য স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার, আন্ডার গ্রাউন্ড বিতরণ ব্যবস্থা সর্বোপরি স্মার্ট গ্রিড বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। বিদ্যুতায়নের ফলে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এ সাফল্যের পেছনে বিদ্যুত খাতের অবদান অনস্বীকার্য। অর্থনীতিতে ক্রমাগতভাবে উঁচু প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার পরেও মূল্যস্ফীতিকে রাখা হয়েছে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত। বিশ্বের অনেক দেশকেই পেছনে ফেলে আমরা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (MDG) অর্জন করে সারা বিশ্বের দৃষ্টি কেড়ে নিতে সক্ষম হয়েছি। এখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG) বাস্তবায়নে সক্ষমতা ও সফলতা প্রমাণ করার পালা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। রূপকল্প ২০২১-এর ধারাবাহিকতায় ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামী দিনের সুখী ও সমৃদ্ধ উন্নত আলোকিত বাংলাদেশ রূপান্তরের নিমিত্তে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। লেখক : প্রকৌশলী
×