ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নিবন্ধন ছাড়া ডে কেয়ার সেন্টার চালালে ২ বছর জেল, জরিমানা

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ১৭ জুন ২০২১

নিবন্ধন ছাড়া ডে কেয়ার সেন্টার চালালে ২ বছর জেল, জরিমানা

সংসদ রিপোর্টার ॥ নিবন্ধন ছাড়া শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র (ডে-কেয়ার সেন্টার) চালালে দুই বছরের জেল ও দশ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র বিল-২০২১’ সংসদে পাস হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র থেকে শিশু হারিয়ে গেলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদাণ্ডের পাশাপাশি পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান রয়েছে পাসকৃত বিলে। বুধবার স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের আগে বিলের ওপর দেয়া জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা। তাদের প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এরপর স্পীকার সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন। বিএনপির এমপি রুমিন ফারহানার একটি সংশোধনী প্রস্তাব সংসদ গ্রহণ করে। পাস হওয়া বিলের বিধান অনুযায়ী, যেসব শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র এখন পরিচালিত হচ্ছে, নতুন আইন পাস হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে তাদের নিবন্ধন নিতে হবে। তখন সব শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে আসবে। তবে সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান নিজ ব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত শ্রেণীর কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার পাশাপাশি আইনের অধীন নিবন্ধন সনদ নিয়ে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করতে পারবে। এই বিল আইনে পরিণত হওয়ার পর অনুমোদন ছাড়া কেউ শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করতে পারবে না। অনুমোদন ছাড়া এসব পরিচালনা করলে অপরাধ হবে। নিবন্ধন ছাড়া শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র চালালে দুই বছরের জেল ও দশ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র থেকে শিশু হারিয়ে গেলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। এছাড়া শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে সংক্রামক রোগের বিস্তার ঘটার তথ্য গোপন করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, শিশু বা ক্ষেত্রমতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর প্রয়োজনীয় সেবা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, বিনোদন, শিক্ষা ও শিশুর জন্য অনুক‚ল পরিবেশ এবং প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি তিন মাসে একবার করে শিশুদের অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে হবে। উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বোট ক্লাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবি বিএনপির ॥ এদিকে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই ও সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ‘ধর্ষণচেষ্টা, হত্যাচেষ্টা ও মারধরের’ ঘটনায় ঢাকা বোট ক্লাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেন। তিনি বলেন, দুদিন আগে একটা ঘটনা ঘটল। বোট ক্লাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, নারীদের কর্মসংস্থান বেড়েছে, কিন্তু কাজের যাওয়ার পথ কতটা নিরাপদ? পথে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকে কঠোর বার্তা দিতে হবে। বলা হচ্ছে নারীদের ক্লাবে যাওয়া খারাপ। পুরুষদের খারাপ না? নারীরা মদ্য পান করলে খারাপ বলা হচ্ছে। পুরুষ করলে খারাপ না? দুটিই হারাম। কলেজছাত্র মুনিয়ার মৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুনিয়া ব্যাভিচারের শিকার হলো। কারা করল? প্রধানমন্ত্রী কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? সমাজের ওপর তলার লোকজনের সঙ্গে জড়িত। তাদের কঠোরভাবে আইনের আওতায় আনতে হবে। জবাবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের আমলে সারাদেশে নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতনের কথা দেশের জনগণ ভুলে যায়নি। নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে ফাহিমা, মহিমাসহ শত শত শিশু, কিশোরী, নারীকে গণধর্ষণ করেছে ছাত্রদল-শিবিরের ক্যাডাররা। এমনকি মায়ের কোলে থাকা শিশুও বাঁচতে পারেনি। ওই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে থাকা আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছিলেন, ‘আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে’। সেই বিএনপির মুখে এসব কথা মানায় না। বর্তমান সরকার যে কোন নারীর ওপর নির্যাতন কঠোরহস্তে দমন করছে।
×