ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জটিল হয়ে উঠেছে ডাঃ সাবিরা হত্যাকাণ্ড

প্রকাশিত: ০০:১৬, ১৫ জুন ২০২১

জটিল হয়ে উঠেছে ডাঃ সাবিরা হত্যাকাণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর কলাবাগানে চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমান লিপি (৪৭) হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি জটিল হয়ে উঠেছে। ক্লুলেস এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট রহস্য উদঘাটনের জন্য মাঠে নেমেছে। এদিকে হত্যাকাণ্ডের ১২ দিন পরও পুলিশ খুনীকে শনাক্ত করতে পারেনি। ঘটনার পর থেকে সন্দেহভাজন, প্রত্যক্ষদর্শী, সহকর্মী ও অনেক স্বজনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন ক্লু পায়নি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের সবাইকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে এদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি রাখছেন বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান। আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা জানান, হত্যাকাণ্ডটি ক্লুলেস ও জটিল হলেও বলা যায়, ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে সাবিরাকে। খুনী ফ্ল্যাটের সব তথ্যই জানত। এমনকি তার কাছে ফ্ল্যাটের মূল দরজার নকল চাবিও ছিল। ফলে পালাতে সুবিধা হয় খুনীর। এক্ষেত্রে বাড়িটির দারোয়ানের ডিউটির অবহেলাকে দায়ী করছেন তারা। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ সূত্র জানায়, সাবিরার গলায় ও শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যা দেখে মনে হয়েছে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তবে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কি-না, সে বিষয়ে প্রাথমিকভাবে কিছু জানা যায়নি। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কিনা জানার জন্য ডিএনএ পরীক্ষার আলামত সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধারণা করছেন, পারিবারিক কোন কারণে স্বজনদের হাতে খুন হতে পারেন সাবিরা। এখনই সেটা নিশ্চিত করে বলতে চাইছেন না। সংশ্লিষ্টরা সূত্রগুলো জানায়, হত্যাকাণ্ডের ক্লু উদঘাটনে বাংলাদেশ পুলিশের সব ইউনিট একযোগে কাজ। কারন এটি একটি বিরল ঘটনা। থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই, ডিবি, সিআইডি ও র‌্যাব কাজ করছে হত্যাকাণ্ডটি তদন্তে। এখন ৩৬০ ডিগ্রী এ্যাঙ্গেলে তদন্ত চলছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, সাবিরার বাসায় পোড়া সিগারেটের দুটি অবশিষ্টাংশ পাওয়া গেছে। এটিকে গুরুত্বপূর্ণ আলামত হিসাবে দেখছেন তারা। সিগারেটের অবশিষ্টাংশ দুটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এদিকে বাদী অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৬ জুন দিনভর কানিজ সুবর্ণা, আরেক সাবলেট বাসিন্দা নুরজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, সাবিরার আত্মীয়-স্বজন যারা আছেন মোটামুটি সবাইকেই দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ডাঃ সাবিরার প্রথম স্বামীর আত্মীয় থেকে শুরু করে দ্বিতীয় স্বামী ও তার আত্মীয়দেরও জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হচ্ছে। এমনকি সন্দেহভাজন হিসেবে প্রথমে যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তাদের ফের ডাকা হচ্ছে। ডাঃ সাবিরা যে হাসপাতালে চাকরি করতেন সেই হাসপাতালের কয়েকজন সহকর্মীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যদিও সাবিরা কেন একা থাকতেন তার উত্তর এখনও পুলিশ পায়নি।
×