ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চীনের সিনোফার্মের ৬ লাখ টিকা ঢাকায় পৌঁছেছে

প্রকাশিত: ২২:০৮, ১৪ জুন ২০২১

চীনের সিনোফার্মের ৬ লাখ টিকা ঢাকায় পৌঁছেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চীনের সিনোফার্মের দ্বিতীয় দফা উপহারের ছয় লাখ করোনা টিকা ঢাকায় এসে পৌঁছছে। রবিবার বিকেলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর দুটি সি-১৩০ পরিবহন বিমান রাজধানীর কুর্মিটোলার বঙ্গবন্ধু ঘাঁটিতে চীনের টিকা নিয়ে অবতরণ করে। একইসঙ্গে কোভ্যাক্সের কাছে দেশীয় আবহাওয়ায় উপযোগী টিকা চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। রবিবার দুপুরে দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। নাজমুল ইসলাম বলেন, দেশের ৮০ শতাংশ মানুষের টিকা নিশ্চিতে চীন, রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। এমনকি কোভ্যাক্সের মাধ্যমে যে টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে- তাদের আমরা বারবার জানিয়েছি বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং আমাদের ইপিআররে রাখা যাবে এমন টিকা যেন আমাদের দেয়া হয়। যেটি আমরা সহজেই মানুষের মধ্যে প্রয়োগ করতে পারি-দেশের জনগণকে দিতে পারি। নাজমুল ইসলাম বলেন, ফাইজার-বায়োএনটেকের যে ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা পেয়েছি তা এখনই প্রয়োগ শুরু করতে পারছি না। ডাইলুয়েন্ট নামের মিশ্রণ মেশাতে হবে। সেই মিশ্রণ গত সোমবার রাতে আসার কথা থাকলেও আসেনি। ডাইলুয়েন্ট মিশ্রণ ছাড়া ফাইজারের টিকা প্রয়োগ করা যায় না। এর জন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে। সেটি দেশে এলে ফাইজারের টিকা কত তারিখ থেকে দেয়া হবে তা জানানো হবে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার চরম সঙ্কটের মধ্যে বাংলাদেশকে ১০ লাখ ৮০০ ডোজ অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেবে ওয়াশিংটন। এই টিকা কবে দেশে আসছে জানতে চাইলে নাজমুল ইসলাম বলেন, এটা আলাপ-আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, টিকা পাওয়ার সুসংবাদ যে কোন সময় আমারা পেয়ে যাব। অক্সফোর্ডের টিকা বাংলাদেশে আরও অন্তত ১৪ লাখ লাগবে। কারণ, যাদের সিরামের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছিল টিকার অভাবে তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, চীনের সিনোফার্মের ৬ লাখ ডোজের দ্বিতীয় চালানটি রবিবার বিকেলে ঢাকায় এসে পৌঁছায়। এর আগে ৫ লাখ টিকা পৌঁছানোর পর ২৫ মে প্রথম মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিকাটি প্রয়োগ করা হয়েছে। পরবর্তীতে টিকাটির প্রয়োগ সাময়িক বিরতি রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র আরও বলেন, জানুয়ারি থেকে হিসাব করলে এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয়েছে। জুনে সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত শয্যা খালি থাকছে না। গত কিছু দিনে আমরা খেয়াল করেছি, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণের হার বেড়ে গেছে। সেই জেলাগুলোকে তিনটি ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ক্লাস্টারে রয়েছে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর। সেখানে শতকরা হিসেবে শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের বেশি। দ্বিতীয় ক্লাস্টারে আছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর ও নওগাঁ। তৃতীয় ক্লাস্টারে রয়েছে সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা ও চুয়াডাঙ্গা। এই জেলাগুলোতে হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রয়েছে, পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়েছে। আমরা অনুরোধ করব মৃদু উপসর্গ দেখা দিলেই যেন প্রত্যেকে হাসপাতালে যান। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৬২৪টি নমুনা পরীক্ষা বিপরীতে সংক্রমণের হার ১৪ শতাংশের বেশি ছিল। মৃত্যু হার এক দশমিক ৫৯ আছে। ৫ থেকে ১১ জুন সারাদেশে ২৬ হাজার ১৬৬টি পরীক্ষা করা হয়েছে যা আগের সাত দিনের তুলনায় ১০ হাজারের বেশি। আগের সপ্তাহের তুলনায় শনাক্ত হয়েছেন চার হাজার জনের বেশি। পূর্ববর্তী সপ্তাহের তুলনায় ২৬ জন বেশি মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রে একটু মনোযোগী হলে অনাকাক্সিক্ষত অনেক মৃত্যু আমরা প্রতিরোধ করতে পারি। এই সাত দিনে সংক্রমণের চিত্রে একটি স্থিতি অবস্থা দেখতে পাচ্ছি যা উর্ধমুখী। এটি কমার কোন লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না।
×