ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্লাব রাজনীতির কুফল

প্রকাশিত: ২১:১৬, ১৪ জুন ২০২১

ক্লাব রাজনীতির কুফল

ক্লাব রাজনীতির কুফল এমন কদর্যভাবে ফলবে সেটি ছিল অপ্রত্যাশিত। সাকিব আল হাসান ঘরোয়া ক্রিকেট লীগের একটি দলের অধিনায়ক হলেও তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। তার একটা বিশেষ মর্যাদা আছে। সেটা তিনি রাখতে পারলেন না। আরেকটি অসুন্দর উদাহরণ স্থাপন করলেন। প্রথম পর্ব- স্টাম্পে লাথি, আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক। দ্বিতীয় পর্বে আবারও আম্পায়ারের উদ্দেশে কিছু বলার পর তিন স্টাম্পই তুলে আছাড় দিলেন। সবশেষে, প্রতিপক্ষ দলের দিকে তাকিয়ে অশালীন অঙ্গভঙ্গি! ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ টি- টোয়েন্টিতে শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ম্যাচে এমন অবিশ্বাস্য সব ঘটনার জন্ম দিয়েছেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক সাকিব। সাকিবের অপেশাদার আচরণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ বটে। তবে সত্যের অন্য পিঠে রয়েছে দেশের ক্রিকেটের দুর্নীতি, অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা। যা নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায় না। বিশ্লেষকদের মত হলো, আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তই সাকিবকে অনেকাংশে প্ররোচিত করেছে অভব্য আচরণ করতে। সাকিব আল হাসান- নামটার সঙ্গে যেমন জড়িয়ে আছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের হাজারো গৌরবগাঁথা, তেমনি এই নামটাই জন্ম দিয়েছে একের পর এক ন্যক্কারজনক ঘটনা। গ্যালারিতে দর্শক পেটানো থেকে শুরু করে, নানা সময়ে বিসিবির বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসেছেন এ ক্রিকেট প্রতিভা। শেষমেশ বাজিকরদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং তা নিয়ে কোন তথ্য না জানানোর অপরাধে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা তো বিশাল এক ধাক্কাই দিয়ে গেল বাংলাদেশ ক্রিকেটকে। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে আসার পর সবাই ভেবেছিল এবার হয়ত বদলে যাবেন সাকিব। মাঠে অন্তত মেজাজ হারাবেন না। দুর্ভাগ্য, তা হলো না। ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কোন যুক্তি দিয়েই সাকিবের ঘটনাকে সমর্থন করা যায় না। মাঠে সাকিবের আচরণ একেবারেই অশোভন ছিল। সাকিবের মতো একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে এমনটা গ্রহণযোগ্য নয়। তবে, অযথা তো আর মাঠের মধ্যে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেননি সাকিব। আম্পায়ারের বাজে সিদ্ধান্তই তাকে প্ররোচিত করেছে অনেকাংশে। ঘরোয়া ক্রিকেটের আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়েও প্রশ্ন অনেকদিনের। সে জায়গায় চিরকালই নীরব ক্রিকেট বোর্ড। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে যে মাঠে খেলোয়াড়দের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ নয়। এ সত্যটি অস্বীকার করে গেলে বড় ভুল হবে। বিসিবির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে বার বার। কিন্তু পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় না। একের পর এক বাজে আম্পায়ারিংয়ের ঘটনা এবং ভুক্তভোগী ক্লাবগুলোর লিখিত অভিযোগের পরও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আজ পর্যন্ত কোন আম্পায়ারের বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে বা কাউকে শাস্তি দিয়েছে বলে শোনা যায়নি। আমরা কলুষতামুক্ত ক্রীড়াঙ্গন চাই। এটি নিশ্চিত করতে পারে খেলোয়াড়, আম্পায়ার, ক্লাব পরিচালনা পর্ষদ এবং সংগঠক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দ সবাই মিলে।
×