ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নবম ও দশম শ্রেণি সুধীর বরণ মাঝি

শারীরিক শিক্ষা স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা

প্রকাশিত: ২৩:৫০, ১৩ জুন ২০২১

শারীরিক শিক্ষা স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা

শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া শিক্ষক হাইমচর কলেজ, হাইমচর-চাঁদপুর। চতুর্থ অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ২। দুজনের কথোপকথনÑ- ফুলি-ফুল নিবেন আপা ফুল। মাত্র দশ টাকায় এক তোড়া ফুল। ভাত খাব আপা, নেন না। অন্তরা- এদিকে আয়। ফুল কিনে জিজ্ঞাসা করে স্কুলে যাস না কেন? তোর মা-বাবা নেই? ফুলি- খেতেই পারি না আবার স্কুল।অন্তরা- মিনা কার্টুনের ছবিটা দেখিয়ে বলে প্রাথমিকের লেখাপড়ার কোন খরচ নাই। স্কুলে দুপুরে সামান্য খাবারেরও ব্যবস্থা আছে। ক) মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার মৌলিক বিষয় কী? খ) ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বলতে কী বুঝায়? গ) ফুলির বিদ্যালয়ে না যাওয়ার কারণটি ব্যাখ্যা কর। ঘ) ক্ষুধার্ত শিশুদের স্কুলে ধরে রেখে ’সবার জন্য শিক্ষা কার্যক্রম’ সফল করা কী সম্ভব- ব্যাখ্যা কর। ক) উত্তর ঃ হাসি-খুশি ও প্রফুল্ল থাকা মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার মৌলিক বিষয়।এজন্য বিনোদনমূলক কাজকর্ম করা প্রয়োজন। খ) উত্তর ঃ ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি হচ্ছে ব্যক্তির সুস্থ- স্বাভাবিক জীবন-যাপনের জন্য স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নিয়ম কানুন। অর্থাৎ সুস্থভাবে জীবন যাপনের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যাস গড়ে তোলার ভিত্তি হচ্ছে স্বাস্থ্যনীতি। স্বাস্থ্যনীতির স্বাস্থ্যবিষয়ক নিয়মকানুন যা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি নামে পরিচিত। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত ও পারিপাশ্বিক পরিচ্ছন্নতা, প্রয়োজনীয় ও পরিমিত ব্যায়াম,বিশ্রাম ও ঘুম,প্রয়োজনীয় পরিমাণে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্যগ্রহণ ও নিয়মিত খেলাধুলা করা ইত্যাদি। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি পালনের মাধ্যমে সুস্থ শরীরে দীর্ঘ জীবন লাভ করা যায়। গ) উত্তর ঃ ফুলি একজন সুবিধা বঞ্চিত দরিদ্র পথশিশু। যারা শুধু দু’বেলা ভাত জোগার করতেই হিমসিম খায়। যাদের স্বপ্ন কোন রকম জীবন ধারণ করা । যারা রাষ্ট্রের সকলপ প্রকার প্রচলিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ফুলি তাদের একজন প্রতিনিধি। উদ্দীপকে ফুলিকে স্কুলে যাস না কেন জিজ্ঞাসা করলে ফুলি উত্তরে বলে খেতেই পারি না আবার স্কুল! ফুলি স্কুলে না যাওয়ার কারণ হলো ক্ষুধা এবং দারিদ্র। পেঠে ক্ষুধা থাকলে শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষের পড়ায় মন বসে না।তার সর্বোচ্চ চেষ্টা ক্ষুধা নিবারেণের ফলে সে আর স্কুলে যেতে পারেনা । পরিবারের অজ্ঞতা ও অবহেলাও ফুলির বিদ্যালয়ে না যাওয়ার আরেকটি কারণ। তার পরিবারও কখনো শিক্ষার আলো পায়নি এবং শিক্ষা গ্রহণের তাগিদ উপলদ্বি করতে পারেনি। তার পরিবার এবং ফুলি নিজেও জানে না প্রাথমিকের লেখাপড়ার কোন খরচ নাই। স্কুলে দুপুরে সামান্য খাবারেরও ব্যবস্থা আছে। তাই ফুলির পরিবার ফুলিকে স্কুলে না পাঠিয়ে রাস্তায় ফুল বিক্রি করতে পাঠায়। ঘ) উত্তর ঃ ক্ষুধার্ত শিশুদের স্কুলে ধরে রেখে ’সবার জন্য শিক্ষা কার্যক্রম’ সফল করা কী সম্ভব উদ্দীপকের আলোকে তা ব্যাখ্যা করা হলো। ক্ষুধার্ত শিশুদেরও স্কুলে ধরে রেখে ’সবার জন্য শিক্ষা কার্যক্রম’ সফল করা সম্ভব। যদি তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আমরা এই অধ্যায়ে দেখতে পাই পেঠে ক্ষুধা থাকলে শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষের পড়ায় মন বসেনা। সর্বজনীন সাক্ষরতা অর্জনের জন্য ১৯৯০সালে মার্চ মাসে থাইল্যান্ডের জমতিয়েন নামক স্থানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের এক আন্তর্জাতিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় সবার জন্য শিক্ষা নামে কর্মসূচি গৃহীত হয়। ক্ষুধার কারণে কর্মসূচির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বিদ্যালয়ে ৭থেকে ৮ ঘন্টা অবস্থান করে।বিদ্যালয়ে অবস্থানকালীন সময়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্ষুধার্ত থাকে। ক্ষুধার্ত শিশুদের স্কুলে ধরে রেখে ’সবার জন্য শিক্ষা কার্যক্রম’ সফল করার জন্য বিদ্যালয়ে মধ্যাহ্নকালীন টিফিন প্রোগামের আয়োজন করতে হবে। একটি প্রবাদ আছে পেটে দিলে পিঠে সয়। ক্ষুধার্ত শিশুদের স্কুলে ধরে রেখে ’সবার জন্য শিক্ষা কার্যক্রম’ সফল করার জন্য বিদ্যালয়ে দুপুরে খাবারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে স্কুলে অবস্থকালীন সময়ে অভুখক্ত না থাকে। স্কুলে মধ্যাহ্নকালীন টিফিন প্রোগ্রাম নিশ্চিত করতে পারলে অভিভাবকরা স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী হয়ে উঠবেন এবং শিশুরাও আনন্দ নিয়ে স্কুলে আসবে।
×