স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পুণ্যভ‚মি সিলেটের সন্তান তিনি। ২৯ আগস্ট, ২০১৮ নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফিফা প্রীতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তার অভিষেক। ১৯ জানুয়ারি, ২০২০ ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে শ্রীলঙ্কাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে জোড়া গোল করে গোলের খাতা খুলেছিলেন তিনি। এ পর্যন্ত ৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ঘরোয়া ক্লাব সাইফ স্পোর্টিংয়ের হয়ে ৩৩ ম্যাচে ৮ গোল এবং বসুন্ধরা কিংসের হয়ে ৩০ ম্যাচে ১২ গোল করা ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি এবং ৩১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। ত্বরিত গতিতে খেলা এবং দুর্দান্ত ড্রিবলিংয়ের কারণে সমর্থকদের কাছে ইতোধ্যেই জনপ্রিয়তা পাওয়া এই ফুটবলারের নাম মতিন মিয়া। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ঢাকার মাঠে ডিয়েগো ম্যারাডোনার মতো ড্রিবলিং করে গোল করে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন (লীগ ম্যাচে সাইফের হয়ে, বিপক্ষ মুক্তিযোদ্ধা) মতিন। অভাবের সংসারে অর্থের জোগান দিতে মতিন ঢুকেছিলেন রং মিস্ত্রির কাজে। তারপর হয়ে গেলেন ‘খেপ’ ফুটবলার। তারপর সুযোগ পেয়ে ঢাকায় চলে আসেন ক্লাব ফুটবলে। তারপর জাতীয় দলে। সেই মতিন এখন অবস্থান করছেন কাতারের দোহায়, জাতীয় ফুটবল দলের সঙ্গে, ফিফা বিশ্বকাপ ও এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই খেলতে। ই-গ্রæপে বাংলাদেশ গত ৯ দিনে দুটি ম্যাচ খেলেছে। ১-১ গোলে ড্র করেছে আফগানিস্তানের সঙ্গে। আর ০-২ গোলে হেরেছে ভারতের কাছে। বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ আগামী ১৫ জুন ওমানের বিপক্ষে। এই ম্যাচে ভাল কিছু করার পরিকল্পনা বাংলাদেশের। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। র্যাঙ্কিংয়ে দুই দলের তফাৎ অনেক। যেখানে ওমানের র্যাঙ্কিং ৮০, সেখানে বাংলাদেশের ১৮৪। তার মানে প্রতিপক্ষ ১০৪ ধাপ এগিয়ে। তাদের সঙ্গে লড়াইটা তাই একতরফাই হওয়ার কথা। তাছাড়া চোট ও কার্ড সমস্যার কারণে ইতোমধ্যেই দল থেকে ছিটকে গেছেন ৫ ফুটবলার। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় আছে দলের মাঝমাঠ। তারপরও প্রত্যাশা একটু ভাল খেলার।
ওমান কঠিন প্রতিপক্ষ হলেও তাদের বিপক্ষে ভাল কিছু উপহার দিতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে জাতীয় দল, এমনটাই জানালেন ফরোয়ার্ড মতিন মিয়া, ‘আজকে আমাদের বিশ্রাম ছিল। সবাই যে যার মতো বিশ্রাম নিয়েছি। জিম করেছি। গতকাল (শুক্রবার) আমরা খুব ভাল ট্রেনিং করেছি। বল পজিশন, সেটপিস এগুলো নিয়ে কোচ কাজ করেছেন। সবাই কঠোর পরিশ্রম করছি। ইনশাল্লাহ ১৫ তারিখে একটা ভাল ম্যাচ খেলব সবাই।’
মতিন আরও যোগ করেন, ‘আমরা শুক্রবারও তাদের (ওমানের) খেলা দেখেছি সবাই মিলে। কোচ আমাদের ম্যাচ নিয়ে অনেক কাজ দিয়েছেন। সবাই সেগুলো করছি, যাতে ওমানের বিপক্ষে ভাল ফুটবল উপহার দিতে পারি।’ প্রথম লেগে ওমানের বিপক্ষে এ্যাওয়ে ম্যাচে ৪-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি ঢাকার মাটিতে খেলার কথা থাকলেও কোভিড পরিস্থিতির কারণে এই ম্যাচসহ তিনটি হোম ম্যাচ কাতারে গিয়ে খেলতে হচ্ছে লাল-সবুজবাহিনীকে। তাই হোম ম্যাচ হলেও ঘরের মাঠের সুবিধা আদায় করতে পারছে না বাংলাদেশ দল। শনিবার কোন অনুশীলন করেনি জাতীয় দল। ফুটবলাররা জিম করেছেন ব্যক্তিগতভাবে। দলের ম্যানেজার ইকবাল হোসেন এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘কাতারে শনিবার বাংলাদেশ দলের কোন অনুশীলন ছিল না। ফুটবলারদের বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। তারা নিজেদের মতো করে জিমে অংশ নিয়েছে। দলের সব ফুটবলারই সুস্থ আছে। মাসুক মিয়া জনিকে আমরা রেখে দিয়েছি। যেহেতু আমাদের ফুটবলার সঙ্কট আছে, আমরা চেষ্টা করছি ওর রিকভারি করার জন্য। আগামীকাল (আজ) আমাদের আবার অনুশীলন আছে। সকালে জিম, বিকেলে হবে অনুশীলন।’
ইকবাল আরও জানান, হোটেলে থাকলেও খুব সাবধানে থাকছেন দলের ফুটবলাররা। নিয়মিতই কোভিড পরীক্ষা করানো হচ্ছে বাংলাদেশ দলের ফুটবলারদের, ‘কাতারে আসার পর এ পর্যন্ত চারবার আমরা কোভিড টেস্ট করিয়েছি। প্রত্যেকবারই রেজাল্ট নেগেটিভ এসেছে। আগামীতে হয়তো আরও এক’দুবার আমাদের কোভিড টেস্ট করাতে হবে।’
