কাজিরহাট ও আরিচা ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি, ভোগান্তি

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ১২ জুন ॥ কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে চলাচলকারী চারটি ফেরির মধ্যে তিনটিই বিকল হওয়ায় দুই ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় পাঁচ শতাধিক যানবাহনের লাইন পড়েছে। এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজট। কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহাবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এই নৌপথে চলাচলকারী চারটি ফেরির মধ্যে বেগম রোকেয়া ও বেগম সুফিয়া কামাল নামের দুটি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছিল। তবে শুক্রবার থেকে সুফিয়া কামাল ফেরিটিও বিকল হয়ে পড়ায় পারাপারের এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। কাজিরহাট ফেরিঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ফেরিতে উঠতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছেন চালকরা। যশোর থেকে মালবোঝাই ট্রাক নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে কাজিরহাট ফেরিঘাটে পৌঁছান ট্রাকচালক আসিফ হোসেন। শনিবার সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও ফেরিতে উঠতে পারেননি তিনি। ঘাটের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষুব্ধ এই চালক জানান, তিন ঘণ্টার রাস্তার জন্য এখন তাকে দুইদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অন্য ট্রাকচালক জহির হোসেন জানান, একদিন এক রাত অপেক্ষা করেও তিনি এখনও ফেরিতে ওঠার সিরিয়াল পাননি। ঘাটে যানবাহনের চাপ বাড়লেও ফেরির সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে উদ্যোগ না নেয়ায় ঘাট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জহির। ঘাট কর্তৃপক্ষের ভাষ্য- আরিচাঘাটে পন্টুনে ওঠার রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহনের গতি ধীর হয়ে পড়ায় সমস্যা আরও বেড়েছে। আর বিকল্প ফেরির বিষয়ে কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহাবুবুর রহমান বলেন, পাটুরিয়া ঘাট থেকে খান জাহান আলী নামের একটি ফেরি নিয়ে আসা হয়েছে। তবে দীর্ঘ যানজট নিরসনে সময় লাগবে। ২০০১ সালের ২২ ফেব্রæয়ারি যমুনা নদীতে নাব্য সঙ্কটের কারণে আরিচা থেকে পাটুরিয়ায় স্থানান্তর করা হয় ফেরিঘাট। এরপর থেকে দেশের অন্যতম নৌবন্দর আরিচায় ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। নৌপথটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাবনা, কুষ্টিয়া ও সিরাজগঞ্জের অধিকাংশ এলাকার মানুষ রাজধানী ঢাকায় যাতায়াতে ভোগান্তিতে পড়েন। অতিরিক্ত পথ ও ভাড়া দিয়ে তাদের যাতায়াত করতে হয়। এ ছাড়া পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও বঙ্গবন্ধু সেতুতে যাত্রী ও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়। এসব বিষয় বিবেচনা করে সম্প্রতি আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে আবার ফেরি সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ নেয় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।