ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার নেতিবাচক প্রভাবে কমেছে উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না

প্রকাশিত: ২৩:০৯, ১৩ জুন ২০২১

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সরকারের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয়ের খাতে এবার বড় ধরনের ঘাটতি থাকছে। রাজস্ব কোষাগারে একক বৃহত্তম যোগানদাতা চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। অর্থবছর শেষ হতে আর মাত্র সতের দিন বাকি। করোনার প্রভাব অব্যাহত থাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রমের গতি শ্লথ। আর এ কারণে রাজস্ব আয়ের গতিতেও সৃষ্টি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। দীর্ঘ সময় জুড়ে করোনার নেতিবাচক প্রভাব ও অন্যান্য খাতে চ্যালেঞ্জ দিয়ে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কাজ করে যাচ্ছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। কিন্তু চলতি অর্থবছর শেষ হওয়ার অবশিষ্ট সময়ে প্রতীয়মান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রদত্ত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব একটি বিষয়। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বর্তমানে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে আছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। অর্থবছর শুরুর প্রথম চারমাসে ২৯ শতাংশ রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার ১০৫ কোটি টাকা। পক্ষান্তরে আয় হয়েছে ১৪ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর ঘাটতির পরিমাণ শনিবার পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে ঘাটতির পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি চলে যেতে পারে। সূত্র জানায়, প্রতিবছর এ হাউসটি রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে দেয়া হয়। কিন্তু করোনার কারণে উচ্চশুল্কের বিভিন্ন পণ্যের আমদানি একদিকে হ্রাস পেয়েছে, আর যেসব শুল্কের আমদানি বেড়েছে সেসব শুল্ক হার কম। সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাপী করোনার কারণে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। চলতি অর্থবছরে এ হাউসকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে প্রায় ৬৬ হাজার কোটি টাকা। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এমনিতেই চ্যালেঞ্জিং। তার ওপর ভর করেছে করোনার প্রভাব। অতীতে যেভাবে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানিতে রাজস্ব আয়ের খাত গতিশীল ছিল তা গত অর্থবছরের ন্যায় এবারও হ্রাস পেয়েছে। প্রসঙ্গত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে চারটি প্রতিষ্ঠান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ে বিশাল অঙ্কের রাজস্ব আদায় করে থাকে। এরমধ্যে কাস্টম হাউস, ভ্যাট কমিশনারেট, আয়কর বিভাগ এবং বন্ড কমিশনারেট অন্যতম। এর বাইরেও চট্টগ্রাম থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব জাতীয় কোষাগারে জমা হয়ে যায়। কিন্তু করোনার নেতিবাচক প্রভাব অব্যাহত থাকায় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে না। অর্থবছর শেষে মোটা অঙ্কের রাজস্ব আয় ঘাটতির মুখে পড়বে। এদিকে, নতুন অর্থবছরে বাজেট ঘোষণা হয়েছে। সে অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নতুন করে এর নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিটি উইংকে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট প্রদান করবে। যার মধ্যে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস অন্যতম। এ হাউসের সাপ্তাহিক গড় আয় বিবেচনা করে একনেকের বৈঠকে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা গৃহীত হয়ে থাকে বলে সূত্র জানায়। করোনা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে নতুন অর্থবছরের শুরু থেকে রাজস্ব আয় নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে থাকবে। এরপরও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় এনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্রিয় ভ‚মিকা পালনে সচেষ্ট থাকার সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে।
×