ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রুপিং বাদ দিয়ে আগে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ২৩:০৯, ১৩ জুন ২০২১

গ্রুপিং বাদ দিয়ে আগে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দলের নেতাকর্মীদের সরকার পতনের আন্দোলনের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আন্দোলনের আগে দ্রæত গ্রæপিং বাদ দিয়ে আগে নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে টঙ্গীতে সালাহ উদ্দিন সরকারের বাসভবন মিলনায়তনে গাজীপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির যৌথ আলোচনা সভায় ভার্চুয়াল বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। ফখরুল বলেন, সরকার পতনের আন্দোলন শুরুর আগেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তাছাড়া গণতান্ত্রিক আন্দোলন হবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন দিয়েই আমাদের শুরু করতে হবে গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলন। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আমরা যাতে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারি সেই লক্ষ্যে আমাদের অতি দ্রæত এগিয়ে যেতে হবে। দেশের বর্তমান অবস্থাকে সঙ্কটময় অভিহিত করে ফখরুল বলেন, এই অবস্থার পরিবর্তন আমাদেরই করতে হবে। অন্য কেউ এসে আমাদের করে দিয়ে যাবে না। দেশের জনগণের পক্ষ থেকে এ দায়িত্ব বিএনপিকে নিতে হবে। কারণ, বিএনপি হচ্ছে সেই দল যারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন জিয়াউর রহমান যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বিএনপির বর্তমান চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া যিনি গণতন্ত্রকে মুক্ত করার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে এখন রাজনৈতিক সঙ্কটসহ ক্রাইসিস চলছে। এ পরিস্থিতিতে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে, আমাদের শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হবে। আমি খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ কি করছে, করুক। জনগণের কাছে তাদের অন্যায় টিকে থাকতে পারবে না, জনগণের উত্তাল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তারা ভেসে যাবে। আর দেশে প্রতিষ্ঠা হবে জনগণের সরকার। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আবারও বলেন, আসুন অতিদ্রæত নিজেদের পুরোপুরি সংগঠিত করে ফেলি, নিজেদের ভুল বোঝাবুঝি, বিভেদগুলো দূর করি এবং একত্রিত হয়ে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণকে একত্রিত করে আমরা এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটি নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করি। গাজীপুরের বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আপনাদের অনেক বেশি সচেতন ও সোচ্চার হতে হবে। দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা জিয়াউর রহমানের দল করি, খালেদা জিয়ার দল করি। যখন সংগঠন নিজেরা তৈরি করতে যাই, তখন গ্রæপিং শুরু হয়। আমার লোক কে, আমার লোক কে- এটা খুঁজি। এটা খোঁজা যাবে না। আপনাকে জিয়াউর রহমানের লোক খুঁজতে হবে, খালেদা জিয়ার লোক খুঁজতে হবে। এটা যদি না করতে পারেন আমি নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি, আমাদের কোন ভবিষ্যত নেই। ভবিষ্যত থাকবে তখনই যখন আপনি সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে রাজপথে নামতে পারবেন, একসঙ্গে সোচ্চার হতে পারবেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হচ্ছে ন্যায় সঙ্গত। ভার্চুয়াল বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের দলের মধ্যে নেতার সংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি করতে পেরেছি, কর্মীর সংখ্যা সেই হারে বৃদ্ধি করতে পারিনি। সেজন্য আজকে সবাইকে কর্মীর ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। নেতা সামনে আছেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। আর বাকিরা আমরা কর্মী- এই কথা যদি ভাবতে পারি তাহলে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন, তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান বলেন, নব্বইয়ে যেমন বলেছিলাম, স্বৈরাচার এরশাদের পতন ছাড়া ঘরে ফিরব না, আজকেও বলতে চাই, যখন আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দ আন্দোলনের কর্মসূচী দেবেন সেদিন থেকে আবারও রাজপথে দাঁড়াব। যতক্ষণ সরকারের পতন না হবে, যতক্ষণ তত্ত¡াবধায়ক সরকার না দেবে ততক্ষণ রাজপথ থেকে আমরা সরে দাঁড়াব না। গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য ওমর ফারুক শাফিন, গাজীপুরের বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন সরকার, কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল, সোহরাব উদ্দিন, মজিবুর রহমান, হুমায়ুন কবির খান, মীর হালিমুজ্জামান ননি, খন্দকার আজিজুর রহমান পেয়ারা, হুমায়ুন কবীর মাস্টার, শওকত হোসেন সরকার, মাহবুব আলম শুক্কুর, ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ।
×