ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় ফতোয়া দিয়ে বেত্রাঘাত ॥ মেয়ের আত্মহত্যার বিচার দাবি

প্রকাশিত: ২৩:০২, ১৩ জুন ২০২১

সাতক্ষীরায় ফতোয়া দিয়ে বেত্রাঘাত ॥ মেয়ের আত্মহত্যার বিচার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ সাতক্ষীরায় ফতোয়া দিয়ে ৫১ বার বেত্রাঘাতের পর লজ্জা ও অপমানে আত্মহত্যা করেছে রোকেয়া খাতুন। মেয়ের আত্মহত্যায় বাধ্য করা ফতোয়াবাজ ও বেত্রাঘাতের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করে শনিবার বিকেলে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অসহায় মেয়ের পিতা মফিজুল ইসলাম। মফিজুল ইসলামের বাড়ি সদর উপজেলার বৈকারি ইউনিয়নের মৃগিডাঙ্গা গ্রামে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মফিজুল ইসলাম জানান, প্রায় ৮ বছর আগে তার মেয়ে রোকেয়া খাতুনের সঙ্গে মৃগিডাঙ্গা গ্রামের আবু জাফরের ছেলে সাদ্দাম হোসেনের বিয়ে হয়। তাদের সামিয়া (৬) নামের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। স¤প্রতি সাদ্দামের ভগ্নিপতি কাথন্ডা গ্রামের শহীদুল বিশ্বাসের ছেলে ই¯্রাফিলের কুনজর পড়ে রোকেয়ার ওপর। একপর্যায়ে গত ৬ জুন তার মেয়ে রোকেয়া নিখোঁজ হয়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জানতে পারে ইস্রাফিল তার ভগ্নিপতি এরশাদের সহযোগিতায় তার মেয়েকে ফাঁদে ফেলে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে গেছে। এর পর ৯ জুন মৃগিডাঙ্গা গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে এরশাদ আলী তার মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসে। এ সময় মেয়ের স্বামী সাদ্দাম এবং শ^শুর আবু জাফর পুনরায় রোকেয়াকে গ্রহণ করে শান্তিতে সংসার করার জন্য রাজি হলেও বাদসাধে এলাকার সাইফুল ইসলাম, এরশাদ ও শহীদুল ইসলাম। তারা ফরমান জারি করে ফতোয়া দেয় মেয়েকে তওবা পড়া ও ৫১ বার বেত্রাঘাত দিয়ে পবিত্র করে ঘরে তুলতে হবে। তা না হলে মেয়েকে এলাকাছাড়া করার ঘোষণা দিয়ে জামাতা ও মেয়ের শ^শুরকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদর্শন করে। একপর্যায়ে ১০ জুন রাতে এরশাদ আলী তার মেয়েকে ৫১টি বেত্রাঘাত করে এবং মাওলানা আবুল খায়ের তাকে তওবা পড়ান। সংবাদ সম্মেলনে মফিজুল ইসলাম জানান, বেত্রাঘাতের পর ক্ষোভে অপমানে ১১ জুন সকালে নিজঘরের আঁড়ার সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে তার মেয়ে রোকেয়া আত্মহত্যা করে। তার অভিযোগ, ফতোয়াবাজরা তার মেয়ে রোকেয়াকে আত্মহত্যায় বাধ্য করেছে। তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলের বিচার দাবি করে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
×