ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

প্রকাশিত: ২১:২৫, ১২ জুন ২০২১

মাদারীপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ মাদারীপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৩ জন পুলিশ, এক সাংবাদিকসহ আহত হয় অন্তত ১৫ জন। এ সময় দুটি ব্যাংক, বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সদর উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে কয়েক‘শ যানবাহন আটকা পড়ে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের হস্তক্ষেপে আধা ঘন্টা পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক এমপি, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত মৌলভী আছমত আলী খান সম্পর্কে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল্লার কটুক্তিমূলক বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে মাদারীপুর ও রাজৈরে বেশ কিছুদিন ধরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন হয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল্লার পদত্যাগের দাবিতে শাজাহান খান এমপি গ্রুপের নেতা কর্মীরা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের কলাবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে মানবন্ধনের আয়োজন করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম ও মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল্লা গ্রুপের নেতা কর্মীরা একই স্থানে সভা ও মানববন্ধন করতে গেলে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে তিন পুলিশ ও এক সাংবাদিকসহ আহত হয় অন্তত ১৫ জন। এ সময় উত্তেজিত নেতাকর্মীরা কৃষি ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের ঘটকচর শাখার জানালার কাঁচ, বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ও দোকানপাচ ভাংচুর করে। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে পুলিশ। মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিক বলেন, ‘শেখ হাসিনার কারামুক্তি উপলক্ষ্যে কেন্দুয়া আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রাস্তার পাশে মানববন্ধন চলছিল। এসময় শাজাহান খানের সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রুবেল খান বলেন, ‘মরহুম আচমত আলী খান জেলার সকলের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সাবেক এমপি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। তাঁকে স্বাধীনতা পদক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। সেই পদক নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা কটূক্তি করে বক্তব্য দিয়েছেন। শাহাবুদ্দিন মোল্লা তার বক্তব্যের মাধ্যমে শুধু আছমত আলী খানকে নয়, বরং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন বিদ্ধ করেছেন। এখনও সময় আছে শাহাবুদ্দিন মোল্লা যদি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চায় তা হলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।’ মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. এহসানুল রহমান ভুইয়া জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে বাইরে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে তিন পুলিশও আহত হয়। বর্তমানে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
×