ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ মৌসুমী ফলে বাজার সয়লাব

পেঁয়াজের কমলেও বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি দাম

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ১১ জুন ২০২১

পেঁয়াজের কমলেও বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পেঁয়াজের কমলেও বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও মাছের দাম। গত সপ্তাহখানেক ধরে সব ধরনের মাছ বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে রূপালী ইলিশ। গরিবের পুষ্টির প্রধান উপাদান ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়ে চলছে। তবে দাম কমেছে মশুর ডাল, আলু ও আটার। গত সপ্তাহ চালের দাম বাড়লেও চলতি সপ্তায় স্থিতিশীল রয়েছে। কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। মৌসুমে ফল বিশেষ করে আম, জাম, কাঁঁঠাল, লিচু ও তালের শাসে সয়লাব হয়ে গেছে ফলের বাজার। ভোক্তারা কিছুটা কমদামে মৌসুমী ফল কিনতে পারছেন। তবে দেশী জাতের এসব ফলমূলের দাম আরও কম হওয়া উচিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, কাপ্তান বাজার, গোড়ান বাজার, মুগদা বড় বাজার, মালিবাগ রেলগেট বাজার এবং খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। কিছুটা স্বল্প মূল্যের আসায় সরকারী বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবির ট্রাকের সামনে ভিড় করছে সাধারণ মানুষ। নিত্যপণ্যের বাজারে দাম কমে প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ ৪৫-৫৫ এবং আমদানিকৃত ভারতীয়টি ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। যা গত সপ্তায় ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সারাদেশে। ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হওয়ার কারণে দাম কমছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে ৫ টাকা দাম বেড়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়। প্রতিহালী ফার্মের লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৪-৩৬ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগেও ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম কমে প্রতিকেজি মশুর ডাল চিকনটি ৯০-১১০ এবং বড় দানার মশুর ডাল ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া প্রতিকেজি আলু ১৮-২৫ এবং আটা ৩২-৩৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। সব ধরনের চালে আগের বেড়ে যাওয়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজাওে প্রতিকেজি স্বর্ণা ও চায়না ইরি খ্যাত মোটা চাল ৪৫-৪৮, চাল সরু নাজিরশাইল ও মিনিকেট ৫৮-৬৫ এবং মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চাল ৫০-৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া ভোজ্যতেল সয়াবিন প্রতিলিটার ১২৩-১৩০, সয়াবিন তেল বোতল পাঁচ লিটার ৬৬০-৭২০ এবং পামওয়েল প্রতিলিটার ১১২-১১৬ এবং পামওয়েল সুপার ১১৪-১১৮ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। নিত্যপণ্যের বাজারে বর্তমান সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। ভাতে-বাঙালির পাতে মাছ না হলে যেনো চলেই না! সেই মাছের দাম এখন সবচেয়ে বেশি। সাগর ও নদীতে ইলিশের আকাল থাকায় নাগালের বাইরে স্বাদের প্রিয় এই মাছটি। এককেজি ওজনের একটি ইলিশ কিনতে ভোক্তাকে গুণতে হচ্ছে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা। তবে জাটকা সাইজের ইলিশ এর অর্থেক দামে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। ইলিশের পাশাপাশি দেশী চিংড়ি, মলা, ঢেলা এবং রুই, কাতলা ও মৃগেলের মতো মাছের দামও বেশি। প্রতিকেজি চিংড়ি আকারভেদে ৮০০-১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি পুঁটি মাছ। খিলগাঁও রেলগেট সংলগ্ন মাছের বাজার থেকে দেশী মাছ কিনছিলেন শাজাহানপুরের বাসিন্দা জাকির হোসেন। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, দাম এত বেশি যে কোন মাছ কেনা যাচ্ছে না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আর কয়েকদিন পর বর্ষাকাল শুরু হচ্ছে, অথচ বাজারে ইলিশ মাছ দেখা যাচ্ছে না। দু চারটি যা আসছে তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এছাড়া অন্যান্য মাছের দামও বেশি। তিনি বলেন, দ্রুত বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়িয়ে দাম কমানোর একটি উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। অন্যথায় মাছ পাবে না সাধারণ মানুষ। মুগদা বড় বাজারের মুরগি বিক্রেতা জানান, রোজার ঈদের পরে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও এখন আবার বেড়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানী খ্যাত লাল জাতের মুরগির এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশী জাতের মুরগির সরবরাহ কম। ফলে চড়া মুরগির বাজার। তবে গরু ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। মৌসুমী ফলে ভরপুর বাজার ॥ আম, জাম কাঁঠাল, লিচু এবং তালের শাসের মতো মৌসুমী ফলে ভরপুর বাজার। ঢাকার বাজার সয়লাব হয়ে গেছে এসব ফলমূলে। তবে সেই তুলনায় দাম তেমন কমেনি। ফলের দাম আরও কম হওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। রাজশাহীর হিমসাগর, গোপালভোগ ও ল্যাংড়া আমে ভরপুর বাজার। এর সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে লিচু কাঁঠাল, জাম ও তালের শাস। প্রতিকেজি হিমসাগর আম জাত ও মানভেদে ৮০-১০০, লিচু শ’ ৩০০-৭০০, কাঁঠাল প্রতিপিছ ২০০-৩০০, জাম প্রতিকেজি ৮০-১২০ এবং তালের শাস প্রতিপিছ ২৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। দাম যাই হোক, মৌসুমী ফল কিনতে ভোক্তারা ভিড় করছেন ফলের দোকানগুলোতে।
×