স্টাফ রিপোর্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ প্রকল্পের মেয়াদ প্রায় শেষ। অথচ কাজ হয়নি কিছুই। ১ লাখ ৪৪ হাজার ২৩২টি জিও ব্যাগের মধ্যে ফেলা হয়েছে মাত্র ১৮ হাজার ব্যাগ। ১ লাখ ৯১ হাজার ১৮টি ব্লক ফেলার কথা থাকলেও একটি ব্লকও ফেলা হয়নি। প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি মাত্র ১৩ ভাগ। এরই মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ১৫ মাস পেরিয়ে গেছে। এমন চিত্র নবীনগর উপজেলার মেঘনা নদী তীর সংরক্ষণ এলাকা। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদারের গাফিলতিতে এমনটি হয়েছে। সে সঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে একটি গ্রাম। অন্যান্য গ্রামেও তীব্র হয়ে উঠেছে ভাঙ্গন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, নবীনগরের বড়িকান্দি ইউনিয়নের বড়িকান্দি, নূরজাহানপুর, সোনাবালুয়া, মুক্তারামপুর ও ধরাভাঙ্গা গ্রামে মেঘনার তীব্র ভাঙ্গনের মুখে। মেঘনার গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীর তীর ও বাড়ি ঘর। গত বছরের মার্চে ৭১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। বড়িকান্দি লঞ্চঘাট থেকে এমপি বাঁধ পর্যন্ত মোট ২৭শ’ মিটার ভাঙ্গনরোধ কাজের মধ্যে ৪৯ কোটি টাকায় ১৯শ’ মিটারের কাজ করার চুক্তি হয় যৌথভাবে তমা কনস্ট্রাকশন এবং এমএ জাহের নামের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। ৩টি প্যাকেজের এই কাজের মধ্যে প্রথম প্যাকেজে ৫৭ হাজার ৬৯২টি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ সম্পন্ন হলেও ৭৬ হাজার ৫শ’টি ব্লকের মধ্যে মাত্র ৬ হাজার ব্লক ফেলা হয়েছে। ২য় প্যাকেজে ধরা ৭২ হাজার ১১৬টি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ সম্পন্ন হলেও ৯৫ হাজার ৫০৯টি ব্লকের মধ্যে ফেলা হয়েছে ১২ হাজার ব্লক। আর তৃতীয় প্যাকেজে কোন কাজই হয়নি। এরই মধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে সোনাবালুয়া গ্রাম। ভাঙ্গন গ্রাস করছে এখন নূরজাহানপুর গ্রামকে। এ অবস্থায় উদ্বিগ্ন গ্রামবাসী সম্প্রতি ভাঙ্গন এলাকা নূরজাহানপুরে সভা করেছেন। সেখানে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে এলাকার নেতৃস্থানীয় সবাই। নূরজাহানের বাসিন্দারা জানান, ১৮ মাস পেরিয়েছে। কাজ আর হয়নি।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ এবাদুল করিম বুলবুল প্রকল্প বাস্তবায়নে ঠিকাদারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ার কথা জানিয়ে বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে কাজ না হওয়া খুবই হতাশাজনক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ করা অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার না হলে আমিও ফিল্ট হব। কোন অবস্থাতেই ঠিকাদারকে ছাড় দেয়া হবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস বলেন, প্রকল্পের কাজ ২০২১ এর জুনে শেষ করার কথা থাকলেও তার সময় বাড়িয়ে ২০২২-এর জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে কাজ কিছুদিন বন্ধ ছিল। সরকার নির্মাণকাজের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর আবার কাজ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ২টি প্যাকেজের জিও ব্যাগ ডাম্পিং কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়াও কাজের মান নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্স ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের নজরদারি রয়েছে। আশা করা হচ্ছে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: