ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১৬৩ ইউপির ভোট স্থগিত

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ১১ জুন ২০২১

১৬৩ ইউপির ভোট স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনার সংক্রমণ বিবেচনায় নিয়ে খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের তিনটি করে জেলার ১৬৩ ইউনিয়ন পরিষদের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া আপাতত ভোট হবে না ৯ পৌরসভাতেও। একই সঙ্গে পেছানো হয়েছে জাতীয় সংসদের ৩টি আসনের উপনির্বাচন। ২ জুন এসব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। তবে আগের তফসিল অনুযায়ী বাকি ২০৪ ইউপি এবং সংসদের ল²ীপুর-২ আসনের উপনির্বাচন ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে কমিশনের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এ তথ্য জানান। ইসি সচিব জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে আইইডিসিআর-এর সুপারিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ভোট স্থগিত করা হলেও এসব নির্বাচন কবে নাগাদ হতে পারে সে বিষয়ে কোন তথ্য দেননি ইসি সচিব। করোনা মহামারীতে এ নিয়ে দুই দফা ভোট পেছানো হলো। বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২১ জুন খুলনা বিভাগের খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও নোয়াখালী জেলার ১৬৩ ইউপিসহ ৩৭১টি, ১১ পৌরসভা ও ল²ীপুর-২ আসনের উপনির্বাচনের কথা ছিল। এর মধ্যে প্রার্থী মারা যাওয়ায় চার ইউপির ভোটের তারিখ আগেই পরিবর্তন করা হয়। আর বৃহস্পতিবার ১৬৩ ইউপির পাশাপাশি ৯ পৌরসভার ভোট স্থগিত করা হয়। এছাড়া ঢাকা-১৪, কুমিল্লা-৫ ও সিলেট-৩ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন ১৩ দিন পিছিয়ে ২৮ জুলাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই তিন উপনির্বাচন ১৪ জুলাই হওয়ার কথা ছিল। ওইদিন জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী থাকায় এই দিনের নির্বাচন না করতে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দাবি ছিল। যে ১৬৩ ইউডপির নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে এর মধ্যে রয়েছে বাগেরহাটে জেলার ৬৮টি, খুলনার ৩৪টি, সাতক্ষীরার ২১টি, নোয়াখালীর ১৩টি, চট্টগ্রামের ১২টি ও কক্সবাজার জেলার ১৫টি ইউপি। ১১টি পৌরসভার মধ্যে দিনাজপুর জেলার সেতাবগঞ্জ ও ঝালকাঠির সদর পৌরসভার নির্বাচন যথাসময়ে ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবে। আর স্থগিত করা হয়েছে বাকি ৯ পৌরসভার নির্বাচন। এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এসব নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। অন্যান্য বিভাগের তুলনায় বরিশাল বিভাগে করোনা সংক্রমণ সহনীয় পর্যায়ে থাকায় ভোট নির্ধারিত সময়ে হবে। বৈঠকে দ্বিতীয় ধাপের ইউপি ভোট নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, এখনও অনেক সময় রয়েছে। অনেক এলাকায় ঝুঁকিও রয়েছে। তাই দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। যেসব স্থানীয় সরকারের ভোট আটকে আছে, সেখানে বর্তমান চেয়ারম্যানসহ অন্য জনপ্রতিনিধিরা বহাল থাকবেন কিনা জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, এটা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিষয়। স্থানীয় সরকার ইউপি আইন অনুযায়ী ৯০ দিন দায়িত্ব দেয়ার বিধান রয়েছে। বিষয়টি মন্ত্রণালয় দেখবে কাকে দায়িত্ব দেবেন। উল্লেখ্য, প্রথমে এ বছর ১১ এপ্রিল ভোট হওয়ার কথা ছিল এসব ইউপি ও পৌরসভায়। করোনা মহামারীতে সংক্রমণ বাড়ার মধ্যে দুই দফা ভোট পেছানো হলো। তবে ২১ জুন ২০৪ ইউপি, দুই পৌরসভা ও একটি সংসদীয় আসনের ভোট রেখে অন্যগুলো স্থগিত করা হয়। ২ জুন নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, করোনা মহামারীর কারণে আটকে থাকা সারাদেশের ৩৭১ ইউনিয়ন ও ১১ পৌরসভা নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে ২১ জুন। একই দিনে লক্ষীপুর-২ আসনের ভোটও অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া জাতীয় সংসদের শূন্য ৩টি আসনে উপনির্বাচন ১৪ জুলাই হবে জানিয়ে তফসিল ঘোষলা করা হয় ২ জুন। সিলেট-৩ আসনের সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী করোনাক্রান্ত হয়ে ১১ মার্চ রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান। তার মৃত্যুতে জাতীয় সংসদের এ আসনটি শূন্য হয়। এ ছাড়া ৪ এপ্রিল ঢাকা-১৪ আসনের আসলামুল হক ৪ এপ্রিল রাজধানীর একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। তার মৃত্যুতে এ আসনটি শূন্য হয়। ১৪ এপ্রিল কুমিল্লা-৫ আসনের সাংসদ আবদুল মতিন খসরু ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুতে তাদের আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এর আগে কুয়েতের আদালতে দÐিত হওয়ায় সংসদ সদস্য কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুলের ল²ীপুর-২ আসনটি ২৮ জানুয়ারি শূন্য ঘোষণা করা হয়।
×