ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তামাকে কর বাড়িয়ে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যে ভর্তুকি দেওয়ার আহ্বান

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ৮ জুন ২০২১

তামাকে কর বাড়িয়ে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যে ভর্তুকি দেওয়ার আহ্বান

অনলাইন রিপোর্টার ॥ তামাকের মূল্য ও কর বাড়িয়ে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যে ভর্তুকি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তামাকবিরোধী ২৪টি সংগঠন। একইসঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং কর বৃদ্ধির প্রস্তাব সুপারিশকারী ১৫৪ জন জনপ্রতিনিধিকে অভিনন্দনও জানিয়েছে তারা। মঙ্গলবার (৮ জুন) অনলাইনে আয়োজিত ‘বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যে মূল্য ও কর প্রস্তাবের ওপর প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা এই আহ্বান জানায়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এস এম আবদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে সিগারেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে নিম্নস্তরের সিগারেট সেবন করে প্রায় ৭২ ভাগ মানুষ। নিম্ন ও মধ্যমস্তর মিলে ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৮৪ ভাগ। প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্ন ও মধ্যমস্তরের সিগারেটের দাম ও কর অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। অন্যদিকে উচ্চ এবং প্রিমিয়াম স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের দাম যথাক্রমে ৫ টাকা (৫.২ শতাংশ) এবং ৭ টাকা (৫.৫ শতাংশ) বৃদ্ধি এবং ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বহাল রাখা হয়েছে। এর ফলে শলাকাপ্রতি সিগারেটের দাম উচ্চ স্তরে মাত্র ৫০ পয়সা এবং প্রিমিয়াম স্তরে মাত্র ৭০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়েছে। এক বছরে মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় সকল তামাকজাত দ্রব্যের প্রকৃতমূল্য আগের বছরের তুলনায় কমে গেছে। এর ফলে বর্তমান ব্যবহারকারীরা তামাক ব্যবহারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেবে এবং কিশোর-তরুণরা তামাক ব্যবহার শুরু করতে উৎসাহিত হবে। অন্যান্য বক্তারা বলেন, সুনির্দিষ্ট করারোপ পদ্ধতির প্রবর্তন না করে করারোপে ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতি বহাল রাখায় সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাবে এবং ত্রুটিপূর্ণ করকাঠামোর কারণে এই দাম বৃদ্ধির একটা অংশ তামাক কোম্পানির পকেটে চলে যাবে। ফলে তারা প্রাণঘাতি পণ্য বিপণনে আরও উৎসাহিত হবে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অথচ সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করলে সরকার অতিরিক্ত ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব পেতো, যা করোনা মহামারি সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় ব্যবহার করা সম্ভব হতো। প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে একটি শক্তিশালী তামাক শুল্ক-নীতির নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও ওই নির্দেশনা বাস্তবায়নের কোনো প্রতিফলন নেই। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক ও বিশিষ্ট ক্যানসার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বিএনটিটিপির কনভেনর ড. রুমানা হক, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দীন আহমেদ, তামাকবিরোধী নারী জোটের সমন্বয়কারী ফরিদা আকতার, দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ঢাকা আহসানিয়া মিশনের হেলথ সেক্টরের ডিরেক্টর ইকবাল মাসুদ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নাজিম উদ্দিন আহমেদ এবং প্রজ্ঞার হেড অব প্রোগ্রাম হাসান শহরিয়ার প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন আয়োজনকারী ২৪টি সংগঠন হচ্ছে- এইড ফাউন্ডেশন, আর্ক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা), বিসিসিপি, বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি), অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো, ডেভলপমেন্ট অ্যাকটিভিটিজ অব সোসাইটি (ডাস), ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন ফর রুরাল পুওর, ঢাকা আহসানিয়া মিশন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, নাটাব, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, প্রজ্ঞা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, সুশাসনের জন্য প্রচারাভিজান (সুপ্র), তামাক বিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ), টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল, উন্নয়ন সমুন্নয়, ভয়েস, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট ও ইপসা।
×