ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হল না খুলে ঢাবিতে পরীক্ষা

ঢাকায় অবস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তায় শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ২২:০৭, ৩ জুন ২০২১

ঢাকায় অবস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তায় শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ আবাসিক হল বন্ধ রেখে ১ জুলাই থেকে সশরীরে অনার্স ও মাস্টার্সের পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ঢাকায় এসে কোথায় থাকবেন এ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। শিক্ষার্থীরা খুব দ্রুত পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে থাকলেও হল না খোলার সিদ্ধান্তকে অমানবিক বলে উল্লেখ করেছেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সিদ্ধান্তকে আবারও বিবেচনায় নেয়া উচিত বলে মতামত দিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলো। আবাসিক হল বন্ধ রেখে ১ জুলাই থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা সশরীরে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হলে একই তারিখ থেকে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার কথাও বলা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, পরীক্ষাগুলো অনলাইনে নিতে পারলে সকল শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারবে কিনা এটি ভেবে দেখার বিষয়। কোন ধরনের আবাসনের নিশ্চয়তা না দিয়ে সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের স্বার্থের সাথে সাংঘর্ষিক। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে পরীক্ষার্থীদের হলে রেখে ধাপে ধাপে বিভিন্ন বর্ষ ও বিভাগের পরীক্ষা ভিন্ন সময়ে নেয়াটাই বাস্তবসম্মত। ‘হল-ক্যাম্পাস খুলে দাও’ আন্দোলনের সমন্বয়ক ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাবি শাখার সহসভাপতি আসিফ মাহমুদ এই সিদ্ধান্তকে অবিবেচনাপ্রসূত বলে উল্লেখ করেন। তিনি হল না খোলার সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থী মধ্যবিত্ত ও নি¤œমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা। করোনা মহামারীতে পরিবারগুলোর আর্থিক অবস্থা ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীই টিউশন করিয়ে নিজের ও পরিবারের ব্যয়ভার বহন করত। দীর্ঘ সময় টিউশন না থাকায় এই মুহূর্তে এডভান্সসহ মেসভাড়া দিয়ে আর্থিক, মানসিক চাপের মধ্যে থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ পীড়াদায়ক। আবাসিক হল খুলে ঘোষিত তারিখেই পরীক্ষা নিতে হবে। এদিকে পরীক্ষার্থীদের হলে তুলে পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছিল ঢাবি শিক্ষক সমিতি। গত রবিবার উপাচার্যের কাছে দেয়া এক স্মারকলিপি সমিতি নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামী ১৫ জুন থেকে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ অনুসরন করে সশরীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাসমূহ পর্যায়ক্রমে গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে। ঢাবি শিক্ষার্থী মাহমুদ শান বলেন, ঢাকার মতো শহরে আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নিলে গ্রাম থেকে এসে শিক্ষার্থীরা কোথায় থাকবে? মাসের মাঝখানে কে বাসা ভাড়া দেবে? বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সুবিধাভোগী বিরাট একটা অংশের শিক্ষার্থীর জন্য আবাসিক হল না খুলে কোনভাবেই পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না। সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাবি শাখার এক বিবৃতিতে বলা হয়, সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে প্রশাসন কিন্তু শিক্ষার্থীদের আবাসনের কোন ব্যবস্থার কথা বলেনি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, হল না খুলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে পরীক্ষা নেয়া একটি উদ্ভট সিদ্ধান্ত।
×